গানটায় তাদের কপিরাইট দাবি করা ঠিক হয়নি: শাওন

গানটায় তাদের কপিরাইট দাবি করা ঠিক হয়নি: শাওন

‘সর্বতো মঙ্গল রাধে’ গানের কপিরাইট দাবি করা ঠিক হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন মেহের আফরোজ শাওন। সোমবার দেশ রূপান্তরের সঙ্গে আলাপে তিনি এ মন্তব্য করেন। 

শাওন বলেন, ‘প্রথম প্রথম বিব্রত হয়েছিলাম। আমরা যখন প্রথম গানটা করি তখন এটার কপিরাইট আছে বলে জানতাম না। গানটা করার আগে এই গানটা ইউটিউবে প্রায় ২৫টা ৩০টা লিংক পেয়েছি। যেখানে কারওই নাম ছিল না। এমনকী সরলপুর ব্যান্ডের গানটি যেখানে পাবলিশড হয়েছে সেখানেও তাদের নাম ছিল না বা তাদের কপিরাইট রেস্ট্রিক্টেড সেটা লেখা ছিল না। ফলে বোঝার কোনো উপায় ছিল না যে গানটা কপিরাইট করা।’

অভিযোগ নিয়ে শাওন বলেন, ‘আমরা গানটা গাওয়ার পর যখন কপিরাইট অভিযোগ উঠল, তখন নতুন করে আমরা পার্থ বড়ুয়া, চঞ্চল চৌধুরী মিলে যখন আবার গানটা নিয়ে রিসার্চ করলাম, তখন বিষয়টা হয়ে গেল বিস্ময়কর। আমার মনে হয়, এ গানটায় তাদের কপিরাইট দাবি করা ঠিক হয়নি। কারণ এই গানটা ময়মনসিংহ গীতিকার মহুয়া পালার। দ্বিজ কানাইয়ের গানটা এদিক-ওদিক করে তৈরি করা। কিছুটা আশুতোষ ভট্টাচার্যের সংগৃহীত গান থেকে কালেক্ট করা। বিভিন্ন জায়গা থেকে দুই লাইন, দুই লাইন করে জুড়ে দিয়ে তারা কিছু শব্দ এদিক-ওদিক করেছে, যেটাকে আসলে মৌলিক গান বলা যায় না। এখন আমি যদি রবীন্দ্রনাথ থেকে দুই লাইন নিই, নজরুল থেকে দুই লাইন, লালন থেকে দুই লাইন নিই, হাসন রাজা থেকে দুই লাইন নিয়ে আমি ৫ লাইন যোগ করি তাহলে তো আর মৌলিক গান হলো না।’

বিতর্কের ঘটনায় শাওন বিব্রত নন, বিস্মিত জানিয়ে বলেন, ‘‘শুরুতে আমি বিষয়টা নিয়ে বিব্রত ছিলাম, কিন্তু এখন আমি বিব্রত নই, বরং বিস্মিত। এই ব্যাপারটা খুবই লজ্জাজনক। শিল্প এমন জিনিস যেখানে ভুল বোঝাবুঝি হতে পারে কিন্তু সেটার সমাধান হয় সুন্দর। এখন বিষয়টা ভুল বোঝাবুঝির পর্যায়ে নেই, এটা হয়ে গেছে বাজে ব্যাপার। উনারা হুট করে ফেসবুকে অভিযোগ করেছেন এবং একটা আপত্তিজনক শব্দ জুড়ে দিয়েছেন যে ‘আমাদের গান চুরি করা হয়েছে’’।

‘দেখেন এত দিন ধরে শিল্পচর্চা করছি। আমাকে বলেন, পার্থ বড়ুয়া বা চঞ্চল চৌধুরী বলেন আমাদের কারওরই গান চুরি করে গাওয়ার ইচ্ছে নেই। ব্যাপারটা কেমন যেন বাজে পর্যায়ে চলে গেছে। আশা করছি এটার একটা সুন্দর সুরাহা হবে। আর এই গানটির কোনো কপিরাইট হয় বলে আমার মনে হয় না। আমাদের ঐতিহ্যবাহী যে গানগুলো রয়েছে বা পালা রয়েছে সেগুলোর কোনো ব্যক্তিগত মালিকানা হয় না বলেই জানি। এটার একটা সুন্দর সুরাহা হবে বলেই আশা করছি।’

ওই গানের শুটিংয়ে শাওন নীল রঙের একটি জামদানি শাড়ি পরেছিলেন শাওন। গানটি ভাইরাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শাওনের পরিহিত শাড়িটিও ভাইরাল হয়ে পড়ে। শাড়িটি ভাইরাল হতেই এর প্রস্তুতকারকদের কাছে শাড়িটির অর্ডার বাড়তে থাকে।

নিজের পরিহিত শাড়ি ভাইরাল হওয়া প্রসঙ্গে মেহের আফরোজ শাওন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘এটা খুবই আশ্চর্যের ব্যাপার। ‘সর্বতো মঙ্গল রাধে’ গানটা পারফর্ম করার পর বাসায় ফিরে ছবিটা তুলি। একদম স্বাভাবিক ব্যাপার। বান্ধবী আবিদা শাড়িটা উপহার দিয়েছিল তার ছোট ভাইয়ের গায়ে হলুদে পরার জন্য। মূলত গানটা মানুষ খুব পছন্দ করেছে। গানের এক্সপ্রেশন সবাই পছন্দ করেছে। তো কোনো কিছু যখন জনপ্রিয় হয় তখন সেই গানের পোশাক বা কস্টিউমগুলোও জনপ্রিয় হয়ে উঠে, এটাও সেরকমই একটা ব্যাপার।’

সংগৃহীত -দেশ রূপান্তর