গুজব ও উস্কানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে

গুজব ও উস্কানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে
উন্নয়ন ঠেকাতে নতুন ষড়যন্ত্র গুজব এবং উস্কানি। পদ্মাসেতুর মতো গর্বের ও অহংকারের অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শেষের দিকে। আধুনিক বিজ্ঞানের ফসল আমাদের পদ্মাসেতু। সেই সেতুতে মানুষের কল্লা প্রয়োজন এটা নিছক গুজব ছাড়া আর কিছুই না। একই গুজবে নতুনভাবে যোগ হয়েছে ছেলেধরা আতংক। এলাকায় এলাকায় এই গুজবের জের ধরে বাড়ছে হামলা ও আক্রমণের ঘটনা। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার নতুন কৌশল হচ্ছে এই গুজব। যারা এই গুজব ছড়াচ্ছে এবং উস্কানি দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। ছেলে ধরা কিংবা কল্লাকাটা এগুলো স্রেফ গুজব। আর এই গুজবে কান দিয়ে গণপিটুনী দেওয়া ফৌজদারী অপরাধ। আইন কারো হাতে তুলে নেওয়া যাবে না। সন্দেহজনক কিছু দেখলে তাৎক্ষনিক পুলিশকে অবহিত করুন। যারা ছেলেধরা, কল্লাকাটা এসব গুজব ছড়াবে অথবা যারা উস্কানি দেবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মহানগর এবং জেলা পুলিশ নাগরিক সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে কাজ শুরু করেছে। এই উদ্যোগের সঙ্গে আমাদের অংশিজন হতে হবে। গুজব এবং উস্কানি দাতাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে হবে। বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে।বিশ্ব আজ বাংলাদেশকে চেনে নানা কারণে। যেমন চেনে মুক্তিযুদ্ধের কারণে তেমনি চেনে ক্রিকেট খেলার মাধ্যমে। আরো অনেক বিষয় আছে যা বাংলাদেশকে বিশ্বে মর্যাদার আসন দিয়েছে। সবচেয়ে বড় অর্জন নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণের দৃঢ়তা দেখানো। পদ্মা সেতুর মতো বৃহৎ প্রকল্প নিতে যে দেশ পিছু হটে না, সেই দেশ কোন গুজবে কান দেবে সেটা মানতে কষ্ট হয়। বাঙালি গুজবে বিশ্বাস করতে পারে না। বাঙালি বাস্তবতায় বিশ্বাস করে। যার প্রমাণ এখন পদ্মসেতু দৃশ্যমান। বাংলাদেশ যুক্তির পথে মুক্তির সংগ্রামে অবিচল। দৃশ্যমান পদ্মা সেতু নিয়ে অনেক বিতর্ক সৃষ্টি করেছিল বিশ্ব ব্যাংক এবং বাংলাদেশ বিরোধী চক্র। সেই বিতর্কের দাঁতভাঙা জবাব দিয়ে যখন পদ্মা সেতু সমাপ্তির পথে তখন নতুন জুজু সৃষ্টি হয়েছে। পদ্মা সেতুতে মানুষের মাথা (কল্লা) প্রয়োাজন। এটাও একটা নতুন চক্রান্ত বলেই আামাদের মনে হচ্ছে। একটি চক্র আমাদের পদ্মা সেতু থেকে দূরে সরিয়ে নিতে চায়। তারাই নতুন ভয় দেখানো শুরু করেছে। পদ্মা সেতু রক্ত চায় কিংবা মানুষের মাথা চায় এটা কোনভাবেই বিশ্বাসযোগ্য নয়। আমরা এই গুজবে কান দেবো না। কেউ এই গুজবে বিশ্বাস করতে পারে না। যারা এই গুজবের নামে ছেলেধরা বলে মানুষ হত্যা করছে তাদের বিরুদ্ধেও সতর্ক থাকতে হবে। বাংলাদেশ এখন যে কোন দেশের সঙ্গে বিজ্ঞান, শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি এবং খেলাধূলায় চ্যালেঞ্জ দেওয়ার যোগ্যতা রাখে। সেই বাংলাদেশের নাগরিক আমরা। আমরা জাতিসংঘে আমাদের মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখতে সক্ষম হয়েছি। জাতির পিতা প্রথম জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দিয়ে আমাদের মর্যাদা অক্ষুন্ন রেখেছেন। জাতিসংঘ আমাদের মাতৃভাষাকে স্বীকৃতি দিয়েছে। বিশ্বের দেশে দেশে আজ মাতৃভাষা দিবস পালন হয় স্বগৌরবে। যাঁর কৃতিত্ব কেবল বাঙালি হিসেবে আমাদের। আমরাই বলতে পারি মাতৃভাষার হয়েছে জয়, একুশ সারা বিশ^ময়। সেই বাঙালিকে জুজুর ভয় দেখিয়ে দূরে সরানো যাবে না। পদ্মা সেতুতে মানুষের রক্ত এবং মাথা প্রয়োজন এই গুজব ছড়িয়ে মানুষের মনে ভীতি সঞ্চার করা হচ্ছে। আর এই সুযোগে এক শ্রেণির মানুষ প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে এই অস্ত্র ব্যবহারে নেমেছে। এখান থেকে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। একই সঙ্গে আমাদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকেও সতর্ক থাকতে হবে। যারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই গুজব ছড়ানোর কাজ করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। যারা এই গুজবের নামে ছেলেধরা বলে মানুষ হত্যা করছে এবং উস্কানি দিচ্ছে তারা আমাদের অর্জনকে ম্লান করতে চায়। তাই তাদের বিরুদ্ধেও সতর্ক থাকতে হবে। গুজব ও উস্কানির বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে পেছনে নেওয়া যাবে না। আমরা সামনেই যাবো। আমাদের অগ্রযাত্রা কোন জুজু ও উস্কানি থামাতে পারবে না।