ঘুমন্ত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, দোষীদের শাস্তি হতে হবে

ঘুমন্ত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, দোষীদের শাস্তি হতে হবে

বরিশাল বিশ্বিবদ্যালয়ের ঘুমন্ত শিক্ষার্থীদের ওপর মাঝরাতে বর্বরোচিত হামলার ঘটনা জঘন্যতম দৃষ্টান্ত হলো। নীরিহ শিক্ষার্থীদের ওপর নির্বিচারে হামলা করে মারধর করার ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়েছে বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের অভিভাবকসহ গোটা দেশ। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে অসভ্য পশুবৃত্তির উদাহরণ সৃষ্টি করা হয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে যুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। তা না হলে শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে পড়বে। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে শিক্ষার্থীদের আশ^স্ত করতে হবে। শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন বাধামুক্ত করতে তাদের পাশে সহযোগী হতেই হবে। একই সঙ্গে কোন ঠুনকো কারণে যেন শিক্ষার্থীরা লাঞ্ছিত না হয় সেদিকেও নজর দিতে হবে।

আমরা লক্ষ্য করছি, সারা দেশে গণপরিবহনে শিক্ষার্থী লাঞ্ছিতের ঘটনা বাড়ছে। অতিরিক্ত ভাড়া আদায় কিংবা ভাড়া বেশি নেওয়ার প্রতিবাদ করলেই পরিবহন শ্রমিকরা শিক্ষার্থীদের ওপর চরাও হয়। যা কোনভাবেই কাম্য নয়। সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য অর্ধেক ভাড়া নেওয়ার বিধানটি কঠোরভাবে পালনের নির্দেশনা থাকা জরুরী। কিছু কিছু গণপরিবহনে শিক্ষর্থীদের সুবিধা থাকলেও বেশিরভাগ গণপরিবহনে এই সুযোগ নেই। এসব নিয়েই প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শ্রমিকদের বাকবিতল্ডা এবং হামলার ঘটনা ঘটছে।

সবশেষ গত মঙ্গলবার বরিশাল বিশ^বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীর সঙ্গে বরিশালের রূপাতলী এলাকায় ভাড়া নিয়ে বাকবিত-া হয়। এর এক পর্যায়ে পরিবহণ শ্রমিক ছুরিকাঘাত করে আহত করে এক শিক্ষার্থীকে। এই সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে বিশ^বিদ্যালয়ের সাধারণ ছাত্ররা সড়ক অবরোধ করে। পরবর্তীতে প্রশাসন হামলাকারী ওই শ্রমিককে গ্রেপ্তার করায় অবরোধ তুলে নেয় শিক্ষার্থীরা।

পরিবহন শ্রমিক গ্রেপ্তার হওয়ার জের ধরে গভীর রাতে রূপাতলী হাউসিং এলাকায় মেসে থাকা শিক্ষার্থীদের ওপর বেপরোয়াভাবে হামলা চালায় শ্রমিকরা। বিভিন্ন বাড়ি থেকে ছাত্রদের বের করে এনে তাদের এলোপাতাপি পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। অভিযোগ উঠেছে রাজনৈতিক প্রশ্রয়ে শ্রমিকরা ছাত্রদের ওপর ওই হামলা চালিয়েছে। হামলায় গুরুতর আহত অনেক শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কার ইন্ধোনে শ্রমিকরা রাতে আবাসিক বাড়িতে হামলা চালানোর দু:সাহস দেখাচ্ছে। রাজনৈতিক প্রভাব ছাড়া শ্রমিকরা এমন বর্বরোচিত হামলার সাহস পাবার কথা নয়। নীরিহ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়ে যে বর্বরতা দেখিয়েছে তা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তা না হলে এই শ্রমিকরা বেপরোভাবে সাধারণ মানুষের ওপরও চরাও হবে। এখনই এই অশুভ চক্রকে থামিয়ে দিতে হবে।

কার ইন্ধোনে শ্রমিকরা শিক্ষার্থীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে সেটাও অনুসন্ধান করতে হব। যারা এই নারকীয় হামলা করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। একই সঙ্গে যারা শ্রমিকদের উসকে দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধেও আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করে শিক্ষার্থীদের মনে স্বস্তি ফিরিয়ে দিতে হবে। তা না হলে অনাকাঙ্খিত ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতেই থাকবে। যার দায় কোনভাবেই প্রশাসন এড়াতে পারবে না।