ছুটির দিনে ইন্টার্ণ চিকিৎসকরাই ভরসা

ছুটির দিনে ইন্টার্ণ চিকিৎসকরাই ভরসা

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটির দিনে জ্যেষ্ঠ্য চিকিৎসকদের দেখা মেলে না। রোগীদের প্রয়োজনের সময় চিকিৎসক না পাওয়ায় অভিযোগ নিত্য দিনের।  শিক্ষানবীশ চিকিৎসকদের (ইন্টার্ণ) ওপর নির্ভর করে চলে চিকিৎসা সেবা।

১ হাজার শয্যার বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গড়ে রোগী ভর্তি থাকে দেড় হাজার। তাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে চিকিৎসক রয়েছেন মাত্র ৮৯ জন। এ কারণে রোগীদের প্রয়োজনের সময় চিকিৎসকদের পাওয়া যায় না। বিশেষ করে শুক্রবারসহ সরকারি ছুটির দিনে অধ্যাপক, রেজিস্ট্রারসহ সিনিয়র চিকিৎসকদের দেখা মেলে না হাসপাতালে। সরকারি ছুটির দিনে ইন্টার্ন চিকিৎসকরাই ভরসা রোগীদের।
২০১০ সালে ৫০০ শয্যার বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ১ হাজার শয্যায় উন্নীত করা হলেও জনবল কাঠামো উন্নীত হয়নি। ৫০০ শয্যা হাসপাতালের জনবল দিয়ে চলছে ১০০০ শয্যার হাসপাতাল। ১০০০ শয্যার হাসপতালের জন্য চিকিৎসক থাকার কথা ৪৪৮ জন। কিন্তু আছে পুরানো জনবল অনুযায়ী ২২৪টি পদ। এর মধ্যে কর্মরত আছেন মাত্র ৯৪ জন। পরিচালকসহ ৫ জন প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেন। দীর্ঘদিনেরও জনবল কাঠামো অনুমোদন হয়নি। ৩ শিফটে দেড় হাজার রোগীদের চিকিৎসা দেন মাত্র ৮৯ জন চিকিৎসক। এর বাইরে মেডিকেল কলেজের বিভিন্ন বিভাগের প্রধানসহ অন্তত ৩০ জন অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক ও সহকারী অধ্যাপক শিক্ষানবীশ (ইন্টার্ণ) চিকিৎসক নিয়ে রাউন্ড দেন হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে।

প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক না থাকায় রোগীরা জরুরী মুহূর্তে চিকিৎসকদের পান না। বিশেষ করে শুক্রবারসহ সরকারি ছুটির দিনে এই হাসপাতালে পা পড়ে না মেডিকেল কলেজের বিভিন্ন বিভাগীয় প্রধান, অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক ও সহকারী অধ্যাপকদের। হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডের রেজিস্ট্রাররাও সরকারি ছুটির দিনে হাসপাতালে যান না। সিনিয়র চিকিৎসকদের অনুপস্থিতিতে চিকিৎসা দেন শিক্ষানবিস (ইন্টার্ণ) চিকিৎসকরা।

রোগীর স্বজন আসাদুল শরীফের প্রশ্ন যারা নিজেরাই (ইন্টার্ন) এখনও শিখছেন তারা রোগীর চিকিৎসা দেবেন কিভাবে?
ভুক্তভোগী চিকিৎসাধীন রোগীর স্বজন মো. আল আমিন হোসেন রনি বলেন, সরকারি বন্ধের দিনে সিনিয়র চিকিৎসকরা হাসপাতালে না এলেও ব্যক্তিগত চেম্বারে তাদের পাওয়া যায়। আগে শুনতান রাতে একবার সিনিয়র ডাক্তাররা রাউ-ে আসেন। কিন্ত এখন আর সেটা দেখা যায় না। তিনি প্রশ্ন করেন, শুক্রবার কি রোগীর রোগ ভালো হয় যায়, যার জন্য সিনিয়র চিকিৎসকরা হাসপাতালে আসবেন না।

এক রোগীর স্বজন শহিদুল ইসলাম বলেন, ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী পাওয়ার নেশায় সিনিয়র চিকিৎসকরা হাসপাতালে ঠিকমতো রোগী দেখেন না। হাসপাতালের কয়েকটি ওয়ার্ড ঘুরেও দেখা মেলেনি কোনো বিভাগীয় প্রধান বা অধ্যাপকদের। তাদের কক্ষগুলো তালাবদ্ধ পাওয়া গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দায়িত্বরত শিক্ষানবীশ (ইন্টার্ণ) চিকিৎসকরা বলছেন, সরকারি বন্ধের দিনে সাধারণত অধ্যাপকসহ সিনিয়র চিকিৎসকরা হাসপাতালে আসেন না। জরুরি প্রয়োজন হলে কল দিয়ে তাদের আনতে হয়। জরুরী বিভাগের এক ব্রাদার (নার্স) বলেন, সরকারি ছুটির দিনে হাসপাতালের অন্যান্য কর্মচারীরা কাজ করতে পারলে সিনিয়র চিকিৎসকরা কেন আসবেন না। এর একটা বিহীত হওয়া উচিত।