জনপ্রিয় তানজিন তিশার শুটিংয়ে হামলা

দেশের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী তানজিন তিশার শুটিং ইউনিটে স্থানীয় বখাটেদের মাধ্যমে হামলার ঘটনা ঘটেছে। ১৩ জুন বিকালে টাঙ্গাইলের সন্তোষে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নাম ঠিক না হওয়া নাটকটির শিল্প নির্দেশক নাজিরী সাগর। তিনি জানান, হামলার ঘটনায় নাটকটির এক্সিকিউটিভ প্রডিউসার সৌরভ, সহকারী পরিচালক সবুজ ইমতিয়াজ, অভিনেতা কুন্তল বিশ্বাস ও অঙ্কন আহত হন।
হামলার সময় ইউনিটে তানজিন তিশা ও মুশফিক ফারহান থাকলেও তারা অল্পের জন্য রক্ষা পান বলেও জানান নাটকটির নির্মাতা মাহমুদ মাহিন।
হামলার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত রনি শহরের দিঘুলিয়া এলাকার বাসিন্দা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আসন্ন ঈদ উপলক্ষে মাহমুদ মাহিনের পরিচালনায় টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (মাভাবিপ্রবি) চারদিনব্যাপী এই নাটকের শুটিং শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে সেখানকার বিভিন্ন হল, একাডেমিক ভবন, ক্যাফেটেরিয়া, মুক্তমঞ্চসহ বিভিন্ন পয়েন্টে শুটিং চলছিলো। সেই ইউনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক সংগঠন ধ্রুবতারার এক ঝাঁক নতুন মুখও ছিলো।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানে, সোমবার (১৩ জুন) বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েরা নাটকের একটি দৃশ্য শুটিংয়ের জন্য অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সঙ্গে গ্রিনরুমে অবস্থান করছিলেন। সেখানে স্থানীয় রনির নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জনের একটি দল গ্রিনরুমে প্রবেশ করে। এসময় শুটিংয়ে বাধাগ্রস্ত হওয়ায় তাদের সেখান থেকে বের হয়ে যেতে বলা হয়। এতে রনি ও তার দল ক্ষিপ্ত হয়ে শুটিং টিমের ওপর চড়াও হয়। চালায় হামলা।
নাটকটির শিল্প নির্দেশক নাজিরী সাগর বলেন, ‘শুটিং চলাকালে স্থানীয় যুবক রনির নেতৃত্বে ১০-১৫ জনের একটি দল হামলা চালায়। এসময় বেল্ট দিয়ে ইউনিটের চারজনকে পেটানো হয়। এরমধ্যে দুজন বেশি আহত হন। পরে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে আমরা সেখানে শুটিংয়ে গিয়েছিলাম। হামলার বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। হামলার পরও আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান করার কারণে আইনি পদক্ষেপ নিতে পারিনি। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমরা আজ (১৫ জুন) ভোরে ঢাকায় ফিরেছি। তবে হামলাকারী রনিসহ জড়িতদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’
এদিকে অভিযুক্ত রনি প্রসঙ্গে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নিবির পাল বলেন, ‘বহিরাগতরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এ ঘটনায় অবশ্যই ক্যাম্পাসের সম্মান ক্ষুণ্ণ হয়েছে। ঘটনার আগেই রনি সেখান থেকে চলে গিয়েছিল। ওই দিনই বিষয়টি সমাধান হয়েছে।’
অভিযোগ রয়েছে হামলার সময় নিবির পাল নিজেও উপস্থিত ছিলেন রনির পাশে!
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মীর মোজাম্মেল হক বলেন, ‘তারা অনুমতি নিয়ে শুটিংয়ে এসেছিলেন। হামলার ঘটনায় তারা আমাদের কাছে আইনি সহায়তা চায়নি। চাইলে হয় তো একটা ব্যবস্থা করা হতো।’
এদিকে অভিযুক্ত রনির সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোশারফ হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল ঘটনাস্থলে। তবে এ ঘটনায় কেউ অফিশিয়ালি অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সূত্র : বাংলাট্রিবিউন