জরুরী অবস্থা জারি করছে ইউক্রেন

ইউক্রেনের সরকার দেশজুড়ে জরুরী অবস্থা জারির প্রস্তুতি নিচ্ছে। দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা এবং প্রতিরক্ষা কাউন্সিল তিরিশ দিনের জন্য জরুরী অবস্থা জারির যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা এখন পার্লামেন্টে অনুমোদন করতে হবে।
জরুরী অবস্থা জারি হলে সরকার এখন ইউক্রেনের প্রতিরক্ষায় কিছু ব্যবস্থা নিতে পারবে। এটি ঠিক সামরিক আইন জারির মতো ব্যাপার নয়। তবে দরকার হলে সামরিক আইনও জারি করা হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে।
ইউক্রেনের সরকার একই সঙ্গে তাদের সব নাগরিককে রাশিয়া ত্যাগ করতে বলেছে। প্রায় তিরিশ লাখ ইউক্রেনিয়ান রাশিয়ায় থাকে বলে ধারণা করা হয়। ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাশিয়ায় অবস্থানরত ইউক্রেনিয়ানদের এই বলে সতর্ক করে দিয়েছেন যে, তাদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করা বেশ কঠিন হয়ে পড়তে পারে। এর আগে মঙ্গলবার ইউক্রেন তাদের রিজার্ভ সেনাদের তলব করেছে।
পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত দুটি অঞ্চলকে প্রেসিডেন্ট পুতিন স্বাধীন বলে স্বীকৃতি দেয়ার পর ইউক্রেন এটিকে ‘আগ্রাসন’ বলে বর্ণনা করেছিল। ইউক্রেনের সরকার এখন পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি শুরু করেছে।
ইউক্রেনের রিজার্ভ বাহিনীর সদস্য সংখ্যা প্রায় নয় লাখ বলে ধারণা করা হয়। ১৮ হতে ৬০ বছর বয়সীদের এখন তলব করা হচ্ছে রিজার্ভ বাহিনীতে যোগ দিতে।
পুতিনের হুঁশিয়ারি
এদিকে প্রেসিডেন্ট পুতিন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে রাশিয়া এবং এর নাগরিকদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে কোন ‘দরকষাকষির’ সুযোগ নেই। রাশিয়ায় 'পিতৃভূমি রক্ষা দিবস' পালন উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট পুতিন এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, এখনো তিনি কূটনীতির মাধ্যমে সংকট সমাধানের দরোজা খোলা রেখেছেন। তবে বিবিসির মস্কো সংবাদদাতা বলেছেন, প্রেসিডেন্ট পুতিনের সাম্প্রতিক কাজ-কর্মে মনে হচ্ছে এই সংকট আসলে আরও গভীর হবে।
বাইডেন-পুতিন শীর্ষ বৈঠক বাতিল
এদিকে হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট বাইডেন এবং ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে সম্ভাব্য শীর্ষ বৈঠকের পরিকল্পনা বাদ দেয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনও তার সঙ্গে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের বৈঠক বাতিল করেছেন।
বাইডেন প্রশাসন বলছে, ইউক্রেন সংকটকে ঘিরে উত্তেজনা না কমা পর্যন্ত এরকম বৈঠক হতে পারে না।
এদিকে জাপান এবং অস্ট্রেলিয়াসহ আরও দেশ রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেছেন, রুশরা ‘গুন্ডার মতো আচরণ করছে’।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস বলেছেন, ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফুটবলের ফাইন্যাল ম্যাচ এখন আর রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গ শহরে হতে পারবে না।
দোনেৎস্ক এবং লুহানস্ক অঞ্চলকে রাশিয়া স্বাধীন বলে স্বীকৃতি দেয়ার পর বিভিন্ন দেশ রাশিয়ার বিরুদ্ধে যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, তাকে স্বাগত জানিয়েছেন ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা। তবে তিনি আরও কড়া নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
একটি মার্কিন টেলিভিশন নেটওয়ার্ককে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, তার বিশ্বাস, প্রেসিডেন্ট পুতিন আসলে একটি স্বতন্ত্র ইউক্রেন রাষ্ট্রের ধারণাটাই ধ্বংস করে দিতে চান।
পিআর/ডিআর