ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ নিয়ে হাসি মুখে ঘাটে জেলেরা

লম্ব সময় পর ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ নিয়ে হাসি মুখে গভীর সমুদ্র থেকে ঘাটে ফিরছেন জেলেরা। মৎস শিকারের ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে সমুদ্রে যাওয়ার পর পরই বৈরী আবহাওয়ার প্রভাবে সমুদ্র উত্তাল হওয়াতে খালি তীরে ফিরে আসতে হয়েছে।
শুক্রবার (১৮ আগস্ট) পটুয়াখালীর বড় দুটি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র আলীপুর ও মহিপুরে দেখা যায়, বিভিন্ন আড়তে স্থানীয় ছাড়া ও চট্টগ্রাম, ভোলা, চাঁদপুর, বাঁশখালী, পাথরঘাটা, কক্সবাজার থেকে অনেক ট্রলার ইলিশ বিক্রি করতে এসেছে। কাংঙ্খিত ইলিশ পাওয়ায় সকাল থেকেই ব্যাস্ত পুরো মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র। বিভিন্ন সাইজের ইলিশের ক্রয়-বিক্রয় এবং হাঁকডাকে ব্যস্ত মৎস্য ব্যবসায়ীরা।
চট্টগ্রাম থেকে আলীপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে মাছ বিক্রি করতে আসা এম.বি ফারিয়া ট্রলারের মাঝি বলেন, আটদিন আগে সাগরে মাছ ধরতে গেছিলাম মোটামুটি ভালো মাছ পেয়েছি যা গত এক বছরেও পাইনি। আলিপুর মৎস্য বন্দরে বিক্রি করতে এসেছি। দাম প্রায় ২০ লাখ টাকার ওপরে হবে। গত ২ মাসে ৩ বার সাগরে গিয়ে ১০ লাখ টাকা লোকসানে পড়েছি। এরমধ্যে আবহাওয়া খারাপ থাকায় কয়েকবার তীরে ফিরতে হয়েছে। ঋণ আছে তাও পরিশোধ করতে পারছিনা।
তিনি আরও বলেন, সরকার অবরোধ দেয় আমরা অনেক খেয়ে না খেয়ে দিন গুনতে থাকি। কিন্তু ভারতের জেলেরা আমাদে সীমানায় এসে ঠিকই মাছ শিকার করছে। সরকারের কাছে অনুরোধ যাতে অবরোধের সময় ভারতীয় জেলেরা বাংলাদেশে ডুকে মাছ শিকার করতে না পারে।
মেসার্স পাথরঘাটা ফিস এর পরিচালক মোঃ রাসেল বলেন, এই বছর অবরোধের পর এই প্রথম ইলিশের ভালো সারা মিলছে এবং দামও ভালো যাচ্ছে। আজ জাটকার মণ ২২ হাজার টাকা, ৮০০-৯০০ গ্রামের ইলিশ ৪৮ হাজার এবং ১ কেজির উপরের ইলিশ ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে। তবে এই দামে জেলেরা খুশি থাকলেও পাইকারি ক্রেতারা প্রায়ই লোকসান গুনছেন।
কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা সাংবাদিকদের বলেন, গত কয়েকদিন যাবত গভীর সমুদ্রে মাছ শিকারকারী ট্রলারগুলো ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ নিয়ে ফিরছে। তবে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে উপকূলবর্তী জেলেরা। এর প্রধান কারণ হলো আন্ধারমানিক ও রামনাবাদ চ্যানেল সংলগ্ন বেশ কয়েটি ডুবোচর সৃষ্টি হয়েছে, যে কারণে ইলিশ তার গতিপথ পরিবর্তন করেছে। ৬৫ দিনের অবরোধের সুফল পাচ্ছেন জেলেরা। তাই উপকূলের জেলেদের জন্য পরামর্শ থাকবে তারা যেন গভীর সমুদ্রে মাছ শিকারের সরঞ্জামাদি তৈরি করেন।