ঢাকাগামী লঞ্চে টাকায় মেলে তোশক

ঢাকাগামী লঞ্চে টাকায় মেলে তোশক

বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের ঘরমুখো মানুষ ঈদের দীর্ঘ ছুটি কাটিয়ে নিজ নিজ কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার উদ্দেশ্যে ছুটছে। ফলে বাঁধভাঙা যাত্রীঢল নেমেছে বরিশাল নৌবন্দরে। এদিকে লঞ্চের ডেক ও খালি স্থানে স্টাফরা তোশক বিছিয়ে ৫০০ টাকা করে বিক্রি করছে বলে অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা। নিরূপায় হয়ে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েই তাদের ছুটতে হচ্ছে গন্ত্যবে।

রবিবার (৭ মে) বিকাল ৫টার দিকে বরিশাল নৌ বন্দরে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। এসময় বরিশাল নৌবন্দরে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায় মোট ১৫টি লঞ্চ। তার মধ্যে সুন্দরবন- ১০ ও ১১, সুরভী- ৭ ও ৮, কুয়াকাটা- ২, পারাবাত- ৯, ১০ ও ১২, মানামী-২, প্রিন্স আওলাদ-১০সহ বাকি ৫টি ভায়া।

বরিশাল নৌ বন্দরে সরেজমিনে দেখা যায়, লঞ্চের দোতলায় কেবিনের পাশে, মধ্যে সব জায়গায় তোশক বিছানো। লঞ্চের ছাদ থেকে শুরু করে কোনো স্থান ফাঁকা নেই। তবুও লঞ্চ বোঝাই করে অতিরিক্ত যাত্রী তোলার চিত্র লক্ষ্য করা যায়। তবে লঞ্চ ঘাটে যাত্রীদের মধ্য অধিকাংশ যাত্রীই ছিলো ডেকের।

বরিশাল নৌবন্দর সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার (৫ মে) যাত্রীচাপ কিছুটা কম হলেও শুক্রবার, শনিবার এবং রবিবার দুপুরের পর থেকে যাত্রীদের নৌবন্দরে যাত্রীদের লক্ষ্যণীয় ভিড় চোখে পড়ে। বহু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান শনিবার ও রবিবার সরকারি অফিস খোলার কারণে নৌবন্দরে যাত্রীদের ব্যাপক ভিড় লক্ষ্য করা যায়।

পারবত- ৯ লঞ্চের যাত্রী মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘ঈদের ছুটি শেষে রবিবার অফিস খোলা তাই যে ভাবেই হোক ঢাকায় পৌঁছতে হবে। কিন্তু লঞ্চে কেবিন না পাওয়ায় ডেকে বসে যেতে হবে। ডেকে কোনো খালি স্থান নেই। সব স্থানে লঞ্চ স্টাফরা তোশক বিছিয়ে রাখছে তাই ৫০০ টাকা করে তোশক কিনে তার উপর বসে যেতে হবে। আমরা যাত্রীরা নিরূপায়। আমাদের উপর জুলুম করা হচ্ছে।’

সুরভী-৭ লঞ্চের অন্য যাত্রী মো. ফিরোজ জানান, লঞ্চের ছাদসহ কোনো স্থান ফাঁকা নেই। অতিরিক্ত যাত্রীতে লঞ্চ ভরে গেছে তবুও যাত্রী উঠছে। যাত্রীরা বিপদ মুখে রয়েছে। আবহাওয়া কিছু দিন ধরে খুব খারাপ। এ সময় অতিরিক্ত যাত্রী লঞ্চে তোলা ঝুঁকিপূর্ণ। লঞ্চ কৃর্তপক্ষ এবং আমাদের সকলে সচেতন হতে হবে।

এ বিষয়ে নৌ-পুলিশের বরিশাল নৌবন্দর থানার পরিদর্শক মো. হাসানাত জামান বলেন, লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রীবহন না করা এবং যাত্রীদের নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিতকরণে কাজ করছে নৌ-পুলিশ।

বরিশাল নদীবন্দর কর্মকর্তা ও বিআইডব্লিউটিএ’র যুগ্ম-পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ঈদের আগে ও পরের ১০ দিন ঢাকা-বরিশাল নৌপথে বাল্কহেড চলাচল না করার নির্দেশনা দেওয়া আছে। যাত্রীপূর্ণ হওয়া মাত্রই তাৎক্ষণিক ঘাট ত্যাগ করতে বাধ্য করা হচ্ছে। সর্বাত্মক যাত্রীসুবিধা নিশ্চিত করতে কাজ করছে নৌবন্দর সমম্বয় কমিটির সদস্যরা।

এদিকে অতিরিক্ত যাত্রীবহন করার জন্য ৪ টি লঞ্চকে মোট ১ লক্ষ ২৬  হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। তবে জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই, ভাড়াসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মোবাইল কোর্ট পরিচালনা অব্যহত থাকবে বলে জানান তারা।