ঢাবি ছাত্রলীগের হল সম্মেলন অনুষ্ঠীত

ঢাবি ছাত্রলীগের হল সম্মেলন অনুষ্ঠীত

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, দশ বছর আগে যারা বিদেশে গিয়েছিলো, তারা দেশে এসে বলে, ‘কোথায় আসলাম, সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক, নাকি দুবাই আসলাম?’। যারা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করে এই দেশকে ধ্বংসের পথে নিয়ে গিয়েছিলো, এ পরিস্থিতি তাদের ভালো লাগে না। 

রবিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি’র সবুজ লনে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সমন্বিত হল সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। এসময় বিএনপি-জামায়াতের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ওদের একটা রোগে পেয়েছে, ‘ভালো লাগে না রোগে’। এ রোগের ওষুধ আমাদের কাছে নাই, জনগণের কাছে আছে। সামনে আবারও ভোট আসছে। জনগণ ভালো না লাগার ওষুধ ব্যবহার করে যেমন তাদের প্রত্যাখান করেছিলো, আবার ওষুধ ব্যবহার করে তাদের বঙ্গোপসাগরে ছুঁড়ে ফেলে দেবে।

এর আগে, বেলা ১২টার দিকে জাতীয় সংগীত ও দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় ১৮টি হল শাখার সমন্বিত সম্মেলন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক শামসুন্নাহার খান চাঁপা, কার্যকরী সদস্য এডভোকেট সানজিদা খানম, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য প্রমুখ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও অসুস্থতার কারণে তিনি আসতে পারেননি। 

সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক বরিকুল ইসলাম বাঁধনের সভাপতিত্বে এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব রওনক জাহান রাইনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির সদস্যবৃন্দ, হল শাখাগুলোর সাবেক নেতৃবৃন্দ, পদ প্রত্যাশীরা উপস্থিত ছিলেন। সকাল ১১টা থেকে সম্মেলন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা দুপুর ১২টার দিকে থেকে শুরু হয়। এর আগেই আমন্ত্রিত অতিথি ও ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হন। 
সম্মেলনে পদপ্রত্যাশীদের উদ্দেশ্যে নানক বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সকল আন্দোলনের সুতিকাগার। এর সম্মেলনের মধ্য দিয়ে আপনারা একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় পার করছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটি গঠনের মাধ্যমে সব হলের শিক্ষার্থীদের সাথে আপনার আত্মিক মেলবন্ধন তৈরি হবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা। আপনার হলে যে ছাত্রটি থাকে, তার সুখ-দুঃখের সাথী হতে হবে। এটাই তো ছাত্রলীগ। এসময় নির্বাচন কমিশন আইন প্রণয়ন করায় শেখ হাসিনা ও জাতীয় সংসদকে ধন্যবাদ দেন তিনি। 

আব্দুর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা নয়। এই মন্ত্রকে ধারণ করেই ছাত্রলীগ এগিয়ে যাচ্ছে। বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, যে কোনো মূল্যে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে, যারা লবিস্ট নিয়োগ করে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে, তাদের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ প্রস্তুত থাকতে হবে। 

সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস। তিনি বলেন, হল সম্মেলন আয়োজনের জন্য শুরু থেকেই আমাদের আন্তরিকতা ও সদিচ্ছা থাকার পরও বৈশ্বিক মহামারির প্রেক্ষিতে উদ্ভূত নানাবিধ বাস্তবতায় সম্মেলন আয়োজনে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। যারা দীর্ঘদিন পরিশ্রম করেছেন আপনাদের মূল্যায়ন করবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। যারা সাধারণ সম্পাদক হতে পারবেন না, তাদেরও মন খারাপ করার কারণ নেই। আপনাদের কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ এবং ঢাবি ছাত্রলীগে পদায়ন করা হবে।

উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের হল শাখাগুলোর সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল ২০১৬ সালে। এরপর পাঁচ বছরে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় নেতৃত্ব পরিবর্তিত হলেও হল কমিটিগুলো দিতে পারেননি তারা। এ মাসের মাঝামাঝি ৩০ জানুয়ারিকে সম্মেলনের তারিখ হিসেবে ঘোষণা করেন ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতারা। এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে নতুন নেতৃত্ব পেতে যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো। ইতোমধ্যে মোট ৩৬টি সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পদ বিপরীতে ৩২৫জন প্রার্থী ছাত্রলীগের দপ্তর সেলে নিজেদের জীবন বৃন্তান্ত জমা দিয়েছেন।