দক্ষিণাঞ্চল থেকে ঢাকাগামী লঞ্চ বন্ধে সমস্যায় যাত্রীরা,নৌযান শ্রমিকরা দুশ্চিন্তায়

রাজধানী ঢাকাকে সুরক্ষিত করতে ঢাকার সাথে সারা দেশের লঞ্চ চলাচল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে সরকার। এ কারনে বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন স্থান থেকে ঢাকাগামী লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। লঞ্চ বন্ধ থাকায় আয়-রোজগার নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন নৌযান শ্রমিক এবং নৌযানের উপর নির্ভর অন্যান্য শ্রমিকদের। এদিকে লঞ্চ বন্ধ থাকায় বেকাদায় পড়েছেন নৌ পথে ঢাকাগামী যাত্রীরা। বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত রাজধানীর সঙ্গে যাত্রীবাহি নৌযান চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে বরিশালের স্থানীয় এবং অভ্যন্তরীণ রুটের লঞ্চ চলাচল অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে তারা।
ঢাকাবাসীকে করোনা সংক্রামণের হাত থেকে রক্ষায় সরকার গত মঙ্গলবার রাতে এক প্রজ্ঞাপনে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের যাত্রীবাহি নৌযান চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেয়। এর আগেই গত সোমবার রাতে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন স্থান থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় অর্ধ শতাধিক যাত্রীবাহি লঞ্চ। ঢাকা থেকেও গতকাল ভোরে বরিশাল নদী বন্দরসহ দক্ষিণের বিভিন্ন স্থানে এসেছে অর্ধ শতাধিক লঞ্চ। দক্ষিণের বিভিন্ন স্থান থেকে সাধারণত লঞ্চগুলো ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় বিকেল থেকে রাত ৯টার মধ্যে। কিন্তু সরকারের নতুন নির্দেশনার ফলে মঙ্গলবার (গতকাল, ২২ জুন) থেকে দক্ষিণের কোন স্থান থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবেনা যাত্রীবাহি লঞ্চ। টিকেট বিক্রি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আগাম টিকেটের টাকাও ফেরত দেয়া হচ্ছে। হঠাৎ লঞ্চ চলাচল বন্ধ হওয়ায় বেকায়দায় পড়েছেন নি¤œ আয়ের নৌ শ্রমিক এবং নৌযান নির্ভর শ্রমিকরা। করোনাকালে লঞ্চ বন্ধ থাকলে নৌযান শ্রমিক ও নৌ নির্ভর শ্রমিকদের সহায়তা দেয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন তারা।
বরিশাল-ঢাকা রুটের একটি লঞ্চের সুপারভাইজার নজরুল ইসলাম খান জানান, মাত্র ২৬ দিন আগে ৪৮ দিন লঞ্চ চলাচল বন্ধ ছিলো। তখন বেশিরভাগ শ্রমিক সরকারের সহায়তা পায়নি। আয় বন্ধ থাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করে শ্রমিকরা। এবার লঞ্চ বন্ধ থাকলে প্রকৃত শ্রমিকদের সহায়তা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন প্রথম শ্রেণির নৌযান মাস্টার শামীম আহমেদ।
এদিকে কোন পূর্ব ঘোষণা ছাড়া আকস্মিক যাত্রীবাহি লঞ্চ চলাচল বন্ধের ঘোষণায় বিপাকে পড়েছেন নৌপথে ঢাকাগামী যাত্রীরা। অনেকে টিকেট নিতে গিয়ে লঞ্চ বন্ধের খবরে হতাশা প্রকাশ করেছেন। কেউ কেউ বিকল্প ব্যবস্থায় ঢাকা যাওয়ার কথা বললেও বেশীরভাগ যাত্রী পড়েছেন বেকায়দায়।
বরিশাল বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক (বন্দর ও পরিবহন) মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত জনস্বার্থে রাজধানীর সঙ্গে সারা দেশের যাত্রীবাহি নৌযান চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে বরিশালের স্থানীয় এবং অভ্যন্তরীণ রুটের লঞ্চ চলাচল অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
এদিকে গতকাল সকাল থেকে বরিশাল নগরীর দুটি বাস টার্মিনাল এবং দক্ষিণের বিভিন্ন স্থান থেকে ঢাকাগামী বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে স্থানীয় বিভিন্ন রুটের বাস চলাচল করছে বলে জানিয়েছেন বরিশাল নগরীর নথুল্রাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের দূরপাল্লার একটি পরিবহনের কাউন্টার ইনচার্জ মো. ইমাম হোসেন।