দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে ডিসি-এসপিদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা

দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে ডিসি-এসপিদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা

সাংবিধানিকভাবে নির্বাচন কমিশন (ইসি) যা বলবে সরকার তা মানতে বাধ্য বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর।

তিনি বলেন, আচরণবিধি মানতে বাধ্য করতে ক্ষমতাসীন দলকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কমিশন আচরণবিধি লঙ্ঘন মেনে নিতে রাজি নয়।

বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ইসি আলমগীর।

এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কমিশন আচরণবিধি লঙ্ঘন মেনে নিতে রাজি নয়। প্রশাসন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। তারা যদি তা নিতে ব্যর্থ হয়, তবে আমরা নির্বাচন কর্মকর্তা আইন প্রয়োগে পিছপা হব না।

তিনি আরও বলেন, জেলা পরিষদ ও গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে সংসদ সদস্যসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের আচরণবিধি মানতে বাধ্য করতে ক্ষমতাসীন দলকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গাইবান্ধা জেলা পরিষদ নির্বাচনে যে অনিয়ম হয়েছে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশন বেগম রাশেদা সুলতানা জেলা প্রশাসককে নির্দেশনা দিয়েছেন।

আইন প্রণেতারাই তো আচরবিধি ভঙ্গ করছেন, তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেবেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই বললাম আমরা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারদের বলছি সে যেই হোক না কেন অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হোক আর ভোটারই হোক, প্রার্থী হোক বা যেই হোক না কেন, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে তারা ব্যবস্থা নেবেন। কোনোক্রমেই যেন আর আচরণবিধির লঙ্ঘন না ঘটে। আর দুই নম্বর হলো আমরা যেটা বলেছি, নির্বাচন কর্মকর্তাদের জন্যও কিন্তু আইন রয়েছে। যারা এই দায়িত্ব পালন করবেন যদি দেখা যায় যে কোনো এলাকার কোনো কর্মকর্তা তার নির্বাচনি আচরণবিধি প্রতিপালন করার ক্ষেত্রে অবহেলা করছে আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।

জাতীয় পার্টির অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা ইতোমধ্যে ডিসি-এসপিদের নির্দেশ দিয়েছি তদন্ত রিপোর্ট দেওয়ার জন্য। রিপোর্ট পাওয়ার পর আমরা পরবর্তী ব্যবস্থা নেবো। আমরা কড়া নির্দেশ দিয়েছি মাননীয় সংসদ সদস্যরা যদি নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন করেন তাদের বলতে হবে, আপনি নির্বাচনি এলাকায় থাকতে পারবেন না। কেন না, সংসদ সদস্যরা তো জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটারও নন। অতত্রব, ভোটার হিসেবে থাকারও কোনও সুযোগ নাই।

মো. আলমগীর বলেন, আমরা যেটা বলবো সাংবিধানিকভাবে সেটা মানা সরকারের দায়িত্ব। এছাড়া সরকারি দল হিসেবে মানতে বাধ্য। সংসদ সদস্যসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বার্তা দিয়েছি। আমরা আশাকরি যে আপনার দলীয় নেতাকর্মীদের যেন আচরণ বিধি লঙ্ঘণ না করে সে বার্তা দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের পাঠিয়েছি।

জেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে আচরণবিধি লঙ্ঘন হলে কঠোর হবে কমিশন

১৭ অক্টোবর দেশের ৬১ জেলা পরিষদের ভোট হবে। নির্বাচনকে ঘিরে আচরণবিধির লঙ্ঘন হলে কঠোর হবে কমিশন।কমিশনের জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক আসাদুজ্জামান আরজু সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়েছে।

ইসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জেলা পরিষদ নির্বাচনে কোথাও কোথাও নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন হচ্ছে এবং এ সংক্রান্ত খবর বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে মর্মে নির্বাচন কমিশনের নজরে এসেছে। আচরণবিধি লঙ্ঘন করে সরকারি সুবিধাভোগী অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ কোথাও কোথাও নির্বাচনি প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন, রঙিন পোস্টার মুদ্রণ করে প্রচার করছে এবং পোস্টারে নেতা-নেত্রীর ছবিও ছাপানো হচ্ছে। এছাড়াও রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে বিভিন্ন জনসভায় নির্বাচনি প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়, নির্বাচন কমিশন এসব আচরণ বিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে তদন্তপূর্বক কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারদের আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।