ধন্যবাদ মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, নাগরিকদের আশ্বস্ত করতে হবে

ধন্যবাদ মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার। হঠাৎ ধন্যবাদ কেন? এমন প্রশ্ন অনেকের মনেই জাগতে পারে। যে কোন ভালো উদ্যোগের প্রশংসা করা দরকার। ভালো কাজের স্বীকৃতি পেলে নতুন কাজের উদ্দম বাড়ে। তাই বরিশাল মহানগরের বাসিন্দাদের তথ্য নিবন্ধনের ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগের জন্য মেট্রোপলিন পুলিশ কমিশনারকে ধন্যবাদ জানাতেই হয়। গতকাল ব্যাপক জানান দিয়ে নাগরিক তথ্য সংগ্রহ অভিযানে নামে পুলিশ। সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ নির্মূলে এই অভিযান যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে এমন প্রত্যাশা তাদের। পুলিশের পক্ষ থেকে নাগরিকদের তথ্য দিয়ে সহযোগিতার আহ্বান জানানোও হয়েছে।
বরিশালের নাগরিকরা পুলিশের এই উদ্যোগের সঙ্গে থাকতে চায়। প্রশাসনের নজরদারীর কারণে বরিশালে জঙ্গীবাদ মাথাচারা দিয়ে উঠতে পারেনি। অনেক বড় নগরের তুলনায় সন্ত্রাসী কর্মকা-ও নিয়ন্ত্রণে আছে। তবে মাদকের ছোবলে তরুন ও যুব সমাজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। সেখানে প্রভাব মুক্ত হয়ে কাজ করার সুযোগ আছে। নাগরিকরা চায় সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ এবং মাদক মুক্ত একটি নগরী গড়ে উঠুক। নাগরিক তথ্য সংগ্রহ নিসন্দেহে এই কাজে সহযোগী হবে। বরিশালের বাসিন্দারা পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করতে আগ্রহী। কারো ইচ্ছা অনিচ্ছার বিষয় নয়, পুলিশের পক্ষ থেকে যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তাতে সবাইকেই তথ্য দিতে হবে।
এতো ভালো উদ্যোগের পরও নগরবাসীর মেন শঙ্কাও দেখা দিচ্ছে। কেউ কেউ পুলিশের কাছে সমস্ত তথ্য দিতে ভয় পাচ্ছেন। তবে সেটা তেমন জোড়ালো নয়। নাগরিকদের শঙ্কা পুলিশের কাছে তথ্য দিয়ে অহেতুক হয়রানীর শিকার হতে না হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে হয়তো বলা হবে, ‘ভয় পাবে সন্ত্রাসী এবং নেতিবাচক কাজের সঙ্গে যুক্তরা। সাধারণ নাগরিকদের শঙ্কার কোন কারণ নেই।’ এটা হয়তো অনেকাংশে সঠিক। আমরা জানি পুলিশ তথ্য নিয়ে নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে চায়। তারপরও নগরবাসীর মনে যে শঙ্কা উঁকি দিচ্ছে সেই শঙ্কা দূর করতে পুলিশ প্রশাসনকেই ভূমিকা নিতে হবে। আশ^স্ত করতে হাবে নাগরিকদের। কোনভাবে যেন এই তথ্য নিয়ে পুলিশের কোন সদস্য নাগরিকদের হয়রানী করার চেষ্টা না করে।
যদিও পুশি কমিশনার বলেছেন, ‘আমরা এখন আর ব্রিটিশ ও পাকিস্তান ভাব ধারার পুলিশ নই। ব্রিটিশ আইনের কারণে সে সময় আমরা অনেক কাজ করতে সক্ষম হয়নি। এখন পুলিশ জনবান্ধব হয়ে কাজ করছে। সাধারণ নাগরিকদের সমন্বয়ে পুলিশ কাজ করছে। অপরাধ ও জঙ্গিবাদ নির্মূলে তথ্য সংগ্রহের লক্ষে তথ্য বহুল মেট্রোপলিটন পুলিশ প্রশাসন গড়ার কাজ শুরু করা হয়েছে। নাগরিক সেবা নিশ্চিত এবং অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে এই উদোগ।’ আমরা জানি পুলিশ কমিশনারের এই উদ্যোগ মহৎ। কিন্তু অনেক সময় মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সদস্যরা নগর পুলিশ প্রধানের চাওয়ার বাইরে গিয়ে কিছু কাজ করেন। যা আমাদের মনে ভয় ও শঙ্কা জাগায়। সেই শঙ্কা যেন কোনভাবেই আমাদের মনে স্থায়ী না হয়। সেই উদ্যোগও নিতে হবে।
আমরা নগর পুলিশের কর্তা ব্যক্তির এই আশ^াসে আস্থা রাখতে চাই। নগরবাসী জনবান্ধব পুলিশ দেখতে চায়। পুলিশ জনবান্ধব হলে আগামীতে এই নগরী মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী, জঙ্গীবাদ, ইভটিজিং মুক্ত হবে এটা আমরা বিশ^াস করি। শান্তির মহানগর প্রতিষ্ঠায় উদাহরণ সৃষ্টি হবে পুলিশ কমিশনারের নেওয়া উদ্যোগ ‘নাগরিক তথ্য সংগ্রহ অভিযান’। সেই উদাহরণ সৃষ্টি করার উদ্যোক্তা পুলিশ কমিশনারকে আবারো ধন্যবাদ।