ধসে পড়লো দুর্গাসাগর দীঘির নির্মাণাধীন গেট

বরিশালের বাবুগঞ্জের মাধবপাশার ঐতিহ্যবাহী দুর্গাসাগর দীঘিতে প্রবেশের নির্মাণাধীন গেটের উপরের (ছাদ) অংশ ধসে পড়েছে।
ওই সময় ছাদ ঢালাইয়ের কাজে নিয়োজিত থাকা শ্রমিকদের মধ্যে দু’জন আহত হয়েছেন।
এদের মধ্যে আনিছুর রহমান নামে একজনকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। অপরজনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পাশাপাশি এই ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন।
শ্রমিকরা জানায়, বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে দুর্গাসাগর দীঘির পশ্চিম প্রান্তে নির্মাণাধীন প্রবেশ গেটের উপরের (ছাদ) অংশে ঢালাইয়ের কাজ চলছিল। বেলা ১১টার আকস্মিক গেটের একাংশের ছাদ ধসে পড়ে। এতে দু’জন শ্রমিক আহত হন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা আসে এবং আহত দুই শ্রমিককে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
তবে এ ঘটনার পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ঝালকাঠির মেসার্স খান বিল্ডার্সের কোনো কর্মকর্তাকেই ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়নি। এমনকি উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে আসেননি।
শ্রমিকরা জানিয়েছেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা ঢালাই কাজ চলাকালে এখানে ছিল কিন্তু ছাদ ধসের পর তাদের আর পাওয়া যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ঘটনার পর গণপূর্ত বিভাগের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে আসলেও তারা অল্প সময়ের মধ্যে ওই স্থান ত্যাগ করে।
স্থানীয় বাসিন্দা মাসুম বলেন, দায়সারাভাবে কাজ করায় এমন ঘটনা ঘটেছে। অল্পের জন্য বড় ধরনের হতাহতর হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে শ্রমিকরা। তার মতে নির্মাণকাজে ত্রুটি ছিল বলেই এমন ঘটনা ঘটেছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে বাবুগঞ্জ উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা সুব্রত বিশ্বাস দাস বলেন, খবর পেয়ে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে আসেন। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান খান বিল্ডার্সের কাউকে না পাওয়া গেলেও কি কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে তা খতিয়ে দেখা হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে অতিরিক্ত (রাজস্ব) গৌতম বাড়ৈ জানান, এই ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শাহ মো. রফিকুল ইসলাম প্রধান করে বাবুগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুব্রত বিশ্বাস দাস ও গণপূর্ত প্রকৌশ অধিদপ্তরের এসডিকে সদস্য করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হচ্ছে। এ ধরনের ঘটনায় কারো গাফিলতি থাকলে নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অপরদিকে গণপূর্ত প্রকৌশল অধিদপ্তর বরিশালের নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুল হাসান বলেন, গেটটা অনেক উঁচুতে। উল্টা পাল্টা ঢালাই দেওয়ার কারণে এই ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। আপাতত কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। ২২ ফুট উঁচু গেটটি নির্মাণে ত্রুটি রয়েছে কিনা সেটি আমরা দেখছি।
এছাড়া বরিশাল এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমলেশ চন্দ্র হালদার বলেন, আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা নিয়েছেন। তারা থানায় অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।