মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের প্রধান উৎসব ঈদুল ফিতর। কিন্তু উৎসব জুড়ে মিলনমেলায় যুক্ত ছিলেন সব ধর্মের মানুষ। ঈদের ময়দানেও এমন নজির ছিল। এই উৎসব প্রমাণ করেছে ধর্ম যার যার উৎসব সবার। সেই ধারণা নিয়ে শেষ হয়েছে ঈদ উৎসব। ঈদের আনন্দ উপভোগ করার জন্য কর্মস্থল থেকে যারা বাড়িতে এসেছিলেন তারা কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছেন। যেভাবে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ঈদ উদযাপিত হয়েছে, সেভাবে ঝক্কি ছাড়া শান্তিতে কর্মস্থলে ফিরুক সবাই সেটাই প্রত্যাশা। পথে পথে হয়রানী এবং কোন ঝক্কি পোহাতে না হয় সেই কামনাও করিছ।
এবছর ঈদের আগে সারা দেশের সড়ক ব্যবস্থা যে কোন সময়ের চেয়ে ভালো ছিল। সরকারি বেসরকারি পর্যায়ে তদারকী থাকায় সড়কে তেমন বিশৃঙ্খলা ছিল না। একই সঙ্গে নৌপথে যাত্রী পরিবহনে নতুন নতুন নৌযানসহ ব্যাপক প্রস্তুতি ছিল বেসরকারি লঞ্চ মালিকদের। সঙ্গে ছিল সরকারি জাহাজও। সবমিলে ঈদে ঘরমুখে যাত্রীরা বাড়িতে ঈদ করতে সক্ষম হয়েছে।
তবে ঈদের আগে যাত্রাপথে নানা অভিযোগের কথাও বলেছেন ঘরফেরা মানুষরা। ট্রেনে সিডিউল বিপর্যয়। ঘন্টার পর ঘন্টা ট্রেনের জন্য অপেক্ষা। পর্যাপ্ত বাস না থাকায় টিকেট কেটেও অনেককে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে। ফেরিঘাটে দীর্ঘ যানযট, ফেরি কম থাকার অভিযোগ ছিল। এ ছাড়া দক্ষিণাঞ্চলের ঘরমুখো মানুষদের ভরসা লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বহন, গভীর রাতে ঘাটে যাত্রী নামিয়ে দিয়ে লঞ্চ ঢাকায় চলে যাওয়াসহ নানা ঝক্কির কথা বলেছেন যাত্রীরা। এতকিছুর পরও তারা যে বাড়ি ফিরে ঈদ করতে পরেছেন সেজন্য স্বস্তিও ছিল তাদের চোখে মুখে।
এবছর ঈদ উপলক্ষে দীর্ঘ ছুটি পেয়েছেন চাকুরেজীবীরা। তারপরও ঈদের পরদিন থেকে শুরু হয়েছে কর্মস্থলে ফেরা মানুষের যুদ্ধ। এই যুদ্ধ ৭ জুন শুক্র ও ৮ জুন শনিবার ছিল চোখে পড়ার মতে। যা আগামী ১৪ জুন পর্যন্ত থাকবে এমন আভাস দিয়েছেন লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। বাসস্ট্যা- এবং বরিশাল নদী বন্দর এলাকায় মানুষের ঢল নেমেছে। সবারই লক্ষ ছিল বাস কিংবা লঞ্চে একটু জায়গা পাওয়া। লঞ্চ ঘাটে ১০টির বেশি লঞ্চ থাকার পরও সকাল থেকে যাত্রীদের চাদর বিছিয়ে জায়গা পেতে ব্যস্ত দেখা গেছে। অনেকে কেবিনের ফাঁকা জায়গা অর্থের বিনিময় নিয়ে বসে পড়েছেন। এতো ঝক্কির পরও তাদের আশা শান্তিতে কর্মস্থলে ফেরা।
যাত্রীদের নির্বিঘœ ও যাত্রাপথ সুন্দর করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী, লঞ্চ মাীলক সমিতি, বিআইডব্লিউটিএ, বাস মালিক সমিতির চেষ্টা প্রশংসার দাবি রাখে। সবার একটাই কামনা সুন্দর ঈদ উৎসব পালন শেষে কর্মস্থলে ফিরতে গিয়ে যেন যাত্রীরা কোন হয়রানীর শিকার না হন। নিরাপদে কর্মস্থলে পৌঁছাক প্রতিটি যাত্রী সেই কামনা সবার সঙ্গে আমাদেরও।