প্রথম ধাপে বরিশালে আট লাখ ৬৬ হাজার ৯৯৪ টিকা দেয়া হবে

প্রথম ধাপে বরিশালে আট লাখ ৬৬ হাজার ৯৯৪ টিকা দেয়া হবে

করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে আগামী ২১ থেকে ২৫ জানুয়ারির মধ্যেই দেশে আসছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন। এখন চলছে ভ্যাকসিন প্রয়োগে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। এরই মধ্যে সংক্রমণের হার ও জনসংখ্যার ঘনত্ব বিবেচনায় সারাদেশের কোন কোন জেলায় কত সংখ্যক ভ্যাকসিন যাবে তাও নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, দেশের ৬৪ জেলাতেই প্রথম ধাপে পর্যায়ক্রমে টিকা দেয়া হবে। তবে ঢাকা জেলার জন্য রাখা হয়েছে সবচেয়ে বেশি। এ জেলায় বরাদ্দ রয়েছে ১২ লাখ ৫৪ হাজার ২০০ ডোজ। সবচেয়ে কম বরাদ্দ বান্দরবান জেলায়। জেলাটিতে ৪০ হাজার ৪৩৯ ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া হবে।

পর্যায়ক্রমে ভোলায় টিকা পাবেন এক লাখ ৮৫ হাজার ২৭ জন, ঝালকাঠিতে ৭১ হাজার ৯০ জন, পটুয়াখালীতে এক লাখ ৫৯ হাজার জন, পিরোজপুরে এক লাখ ১৫ হাজার ৯২৯ জন, বরগুনায় ৯২ হাজার ৯৭০ জন, বরিশালে দুই লাখ ৪২ হাজার ৪২ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ডিস্ট্রিবিউশন প্ল্যানে দেখা গেছে, ঢাকা বিভাগে টিকা দেয়া হবে ৪৯ লাখ ৩৮ হাজার ৫৪৫ জনকে। চট্টগ্রাম বিভাগে দেয়া হবে ২৯ লাখ ৫৯ হাজার ৮৩৩ জনকে, রাজশাহী বিভাগে ১৯ লাখ ২৪ হাজার ৯২২ জনকে, রংপুর বিভাগে ১৬ লাখ ৪৪ হাজার ৫৯ জনকে, খুলনা বিভাগে দেয়া হবে ১৬ লাখ ৩৩ হাজার ৬৪৬ জনকে, সিলেট বিভাগে দেয়া হবে ১০ লাখ ৩২ হাজার জনকে এবং বরিশাল বিভাগে আট লাখ ৬৬ হাজার ৯৯৪ জনকে টিকা দেয়া হবে। তিন রাউন্ডে এ জনগোষ্ঠী টিকা পাবেন।

যেসব জায়গায় টিকা দেয়া হবে: উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ইউনিয়ন পরিষদ, জেলা/সদর হাসপাতাল, সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল, পুলিশ-বিজিবি হাসপাতাল ও সিএমএইচ, বক্ষব্যাধি হাসপাতাল। এসব জায়গায় প্রথম ধাপের ৫০ লাখ ভ্যাকসিন দিতে সাত হাজার ৩৪৪টি দল গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি দলে দুজন সরাসরি ভ্যাকসিন দেবেন এবং বাকি চারজন স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে অন্যান্য কাজ করবেন।

এরই মধ্যে প্রশিক্ষণ সহায়িকার চূড়ান্ত খসড়া করা হয়েছে। পাশাপাশি অনলাইন প্রশিক্ষণ, মাঠপর্যায়ের প্রশিক্ষণ ও বাজেট চূড়ান্ত, নির্দেশিকা তৈরি শেষ হয়েছে। আগামী ১৮ জানুয়ারির মধ্যে এগুলো সব জেলাপর্যায়ে পৌঁছে যাবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

আগামী ১৮ ও ১৯ জানুয়ারি দুদিন ভ্যাকসিন দেয়ার বিষয়ে জেলাপর্যায়ের কর্মকর্তাদের (ডেপুটি সিভিল সার্জন, ইউএইচএফপিও) প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হবে। সিটি করপোরেশন, জেলা ও উপজেলাপর্যায়ের প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ হবে ২০-২৪ জানুয়ারি এবং টিকাদান কর্মীদের প্রশিক্ষণ চলবে ২৩-২৬ জানুয়ারি। বিভিন্ন পর্যায়ের স্বেচ্ছাসেবকদের ওরিয়েনটেশন হবে ২৬ ও ২৭ জানুয়ারি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, টিকার জন্য নিবন্ধন শুরু হবে ২৬ জানুয়ারি। টিকা আসার পর দুদিন তা বেক্সিমকোর ওয়্যারহাউজে থাকবে। টঙ্গিতে বেক্সিমকোর দুটি ওয়্যারহাউজ রয়েছে। সেখান থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তালিকা অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন জেলায় টিকা পাঠিয়ে দেয়া হবে বলে।

প্রথমে যে ৫০ লাখ টিকা আসবে তার পুরোটাই দিয়ে দেয়া হবে। আট সপ্তাহ পর দ্বিতীয় চালান আসলে সেই ৫০ লাখ ডোজও পুরো দিয়ে দেয়া হবে।

প্রসঙ্গত, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত এবং ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনের তিন কোটি ডোজ পাওয়ার জন্য গত ৫ নভেম্বর সেরাম ইনস্টিটিউট ও বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের সঙ্গে চুক্তি করে বাংলাদেশ। চুক্তি অনুসারে প্রথম ধাপে প্রত্যেক মাসে ৫০ লাখ ডোজ টিকা পাওয়ার কথা। এ মাসেই যার প্রথম চালান আসছে।