প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশঃ ধানকাটা শ্রমিকদের যাতায়াত ও খাদ্যপন্য

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশঃ ধানকাটা শ্রমিকদের যাতায়াত ও খাদ্যপন্য

বর্তমানে ধান কাটা মৌসুম শুরু হওয়ায় ধানকাটা শ্রমিকদের আসা-যাওয়া ও খাদ্যপন্য পরিবহণ এবং যারা হাত পাততে পারেন না সেইসব নি¤œ-মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারে প্রয়োজন হলে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে দুর্যোগের এই সময়ে যারা ত্রাণ চুরি কিংবা আত্মসাতের সঙ্গে জড়িত থাকবেন তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণসহ অন্যান্য আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।

রোববার সকাল সোয়া ১০টা থেকে দুপুর পর্যন্ত গণভবন থেকে বরিশাল ও খুলনা বিভাগের ১৬ জেলায় ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের এই নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী।

ভিডিও কনফারেন্সে আক্রান্ত এলাকাগুলোতে যথাযথ চিকিৎসা সেবা প্রদান ছাড়াও করোনা সংক্রমণ এড়াতে অন্যান্য জেলা থেকে বরিশালে প্রবেশের সকল সড়ক ও নৌপথে কঠোর নজরদারীর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ভিডিও কনফারেন্সে বরিশালের জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান জেলার সার্বিক চিত্র প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন। তিনি জানান, বরিশাল বিভাগের ঝালকাঠীতে ৩জন ও বরগুনায় ২জন করোনা আক্রান্ত রোগীর অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। করোনা আক্রান্ত হয়ে পটুয়াখালীর দুমকী ১জন ও বরগুনার আমতলীতে ১জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে বিভাগীয় সদর বরিশাল এখন পর্যন্ত করোনা মুক্ত।  পরে প্রধানমন্ত্রী বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান এবং বিভাগীয় কমিশনার মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরীর সঙ্গে কথা বলেন।

এ সময় ধানকাটা শ্রমিকদের আসা-যাওয়া কিংবা পৌঁছে দেয়া, খাদ্যপন্যবাহী যান চলাচলের ব্যবস্থা করা, করোনা সংক্রমণ এড়াতে অন্যান্য জেলার সঙ্গে সড়ক ও নৌপথে সকল জেলার যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে যারা সামাজিকতার কারণে হাত পাততে পারেন না সেই সব মানুষের তালিকা তৈরি করে নিরবে তাদের বাসায় সরকারি খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেয়ার নির্দেশ দেন। সব শেষ নিজেকে এবং অপরকে সুস্থ্য রাখতে সরকারের স্বাস্থ্য বিধি মেনে সবাইকে নিজ নিজ ঘরে থাকার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের সময় বরিশাল জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের হলরুমে সদর আসনের এমপি পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীম, সিটি মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ, পংকজ নাথ এমপি ও মো. শাহে আলম এমপি, বিভাগীয় কমিশনার মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী, ডিআইজি মো. শফিকুল ইসলাম, পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান, পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম, বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস, বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের পরিচালক ডা. মো. বাকির হোসেন, মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. অসীত ভূষণ দাস, সেনা বাহিনীর লে. কর্নেল ফয়সালসহ বিভিন্ন দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বিভাগীয় কমিশনার জানান, গতকাল পর্যন্ত বিভাগে ১৬৯২ জন হোমকোয়ারেন্টাইনে রয়েছে। তারা প্রবাস থেকে আগত। এ ছাড়া ঢাকা, নারায়নগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জ থেকে আগত ২৬৭ জনকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। বরিশাল বিভাগে এ পর্যন্ত ৫৫৭জন সন্দেহভাজন রোগীর নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এদের মধ্যে ২১১ জনের রিপোর্ট এসেছে। যাদের মধ্যে ৭জনের দেহে করোনার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। এই ৭জনের মধ্যে বরগুনার আমতলীতে একজন এবং পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলার একজন মারা গেছেন। বাকী থাকা ঝালকাঠীর ৩জন এবং বরগুনার ২জন সরকারি তত্ত্ববাধানে চিকিৎসাধীন।

বিভাগীয় কমিশনার আরও জানান, এ পর্যন্ত বিভাগের ৬ জেলায় ২ লাখ ১৯ হাজার ৫৩২ পরিবারের মাঝে ২ হাজার ৬৩৬ মেট্রিকটন চাল এবং নগদ ১ কোটি ৫০ লাখ ৪৮ হাজার ৩৭৫ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। মজুদ রয়েছে ৭০০ পিপিই। এখনও বিভাগীয় প্রশাসনের হাতে ২ হাজার ৩৯২ মেট্রিটক টন চাল ও ৯১ লাখ ৪০ হাজার ৫০০ টাকা মজুদ রয়েছে।