বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে বরিশালের বিদায়

আগ্রাসী, সঙ্গে ক্ল্যাসি। আফিফ হোসেন ধ্রুবর ব্যাটিং নিয়ে সংক্ষেপে বলতে হলে এই দুটি শব্দ তো আসবেই। বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের এলিমিনেটর ম্যাচে সেই আফিফের দেখা মিলল আরেকবার। কিন্তু রান তাড়ায় ঝোড়ো ফিফটি পেলেও বেক্সিমকো ঢাকার বিপক্ষে ফিনিশার হতে পারলেন না। আফিফের ব্যাটিং ছাপিয়ে তাই শফিকুল ইসলাম, আল-আমিনদের বোলিংই ম্যাচ শেষে জলজলে। সুবাদে শেষ হাসি ঢাকার মুখে।
সোমবার বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের এলিমিনেটর ম্যাচে বরিশালকে ৯ রানে হারিয়েছে ঢাকা। ফলে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার খেলার যোগ্যতা অর্জন করল দলটি। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ হয়ে আসবে গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম ও জেমকন খুলনার মধ্যে প্রথম কোয়ালিফায়ারে হেরে যাওয়া দলটি।
‘ডু অর ডাই’ ম্যাচে টস হেরে আগে ব্যাট করে ৮ উইকেটে ১৫০ রান তুলেছিল ঢাকা। জবাবে টপ অর্ডার হতাশ করলেও আফিফের নান্দনিক ব্যাটিংয়ে জয়ের স্বপ্ন বুনছিল বরিশাল দর্শকেরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা পূরণ হয়নি।
আফিফ ৩৫ বলে ৫৫ রান করে বিদায় নেন। ৩ চার ও ৪ ছক্কায় সাজান নিজের ইনিংস।
শুরুতে হতাশ করেছেন ওপেনার সাইফ হাসান (৯ বলে ১২) ও তিনে নামা পারভেজ হোসেন ইমন (১১ বলে ২)। তামিমের ২৮ বলে ২২ রানের ইনিংসটাই ছিল একেবারে বেমানান।
এক আফিফের ওপরই তাই সব ভার এসে পড়ল যেন। শেষ ৫ ওভারে ৫৮ রান প্রয়োজন ছিল বরিশালের। ১৬তম ওভারে আল-আমিন ৩ রান খরচায় নিলেন দুই উইকেট। বিপদজনক তৌহিদ হৃদয়কে (১৬ বলে ১২) ফেরান বোল্ড করে। পরের বলে সোহরাওয়ার্দী শুভকে (০) করেন এলবিডব্লিউ। ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট বলা যায় ওই ওভারকে।
তবে ওই ওভারের প্রথম বলেই আফিফ হোসেনকে রান আউট করার সুযোগ হারান আল-আমিন। শেষ পর্যন্ত সেটি পুষিয়ে দেন জোড়া উইকেট শিকারে।
শফিকুলের ১৭তম ওভারটা দারুণ এক ছক্কায় শুরু করেন আফিফ। তবে শেষ বলে ফিফটি পূরণ করা এই ব্যাটারকে শিকার বানান ঢাকার তরুণ বোলার। উইকেটের পেছনে হাওয়ায় ভাসা ক্যাচটা দৌড়ে অনেকটা প্রথম স্লিপে গিয়ে গ্লাভস বন্দি করেন মুশফিক।
তবে আরেকটু হলে হাত ছাড়াও হয়ে যেত পারত ক্যাচটা। মুশফিক যখন বলের লাইনে, তখন নাসুম আহমেদও ক্যাচটা লুফে নিতে দৌড়ে আসেন। মুশফিক ক্যাচটা নিয়েই উদযাপন নয়, নাসুমকে কড়াভাবে শাসান মাঠেই।
আফিফের ওই উইকেটটাই আসলে ঢাকার ওপর থেকে চাপের বোঝা সরিয়ে দেয়। যেটা গিয়ে পড়ে বরিশালের ওপর। ৩ ওভারে ৪৫, ২ ওভারে ৩৫ বা ১ ওভারে ২০ রানের সমীকরণ আর মেলানো হয়নি বরিশালের।
ঢাকার পক্ষে শফিকুল ও মুক্তার আলি নিয়েছেন সর্বাধিক ৩টি করে উইকেট। ২ উইকেট নেন আল-আমিন।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে ঢাকার শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান মোহাম্মদ নাঈম শেখ (৫) ব্যর্থ। আল-আমিন (০), সাব্বির রহমানও (৮) একই পথের পথিক। দলীয় ২২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ঢাকা যেন খাদের কিনারায় চলে যায়। সেখান থেকে অধিনায়ক মুশফিক ও ইয়াসির আলী রাব্বির ব্যাটে লড়াই করার মতো পুঁজি গড়ে ঢাকা।
মুশফিক ৩০ বলে ৪৩ রান করেন ৪ চার ও ১ ছক্কায়। ইয়াসির ৪৩ বলে ৫৪ রানের ইনিংস খেলেন ৩ চার ও ২ ছক্কায়। এ ছাড়া আকবর আলী শেষ দিকে ৯ বলে ২১ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন। বরিশালের পক্ষে ২টি করে উইকেট নেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও কামরুল ইসলাম রাব্বি। ম্যাচসেরা হয়েছেন ইয়াসির আলী রাব্বী।