বরিশাল সিটি করপোরেশনের উন্নয়নে জাইকার বড় প্রকল্পের হাতছানি

বরিশাল সিটি করপোরেশনের অবকাঠামো নির্মাণ, সড়ক ও নগর সৌন্দর্য উন্নয়নে জাপান সরকারের (জাইকা) বড় প্রকল্প আসবে। এমন আশার কথা শুনিয়েছেন বাংলাদেশ-জাপান ফ্রেন্ডশীপ অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম খান বুলবুল। তিনি এব্যাপারে ঢাকায় জাপান দূতাবাসের কান্ট্রি ডিরেক্টরের সঙ্গে আলোচনা করে ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়ারও আশ^াস দিয়েছেন।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর সঙ্গে বাংলাদেশ-জাপান ফ্রেন্ডশীপ অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম খান বুলবুলের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সৌজন্য সাক্ষাতের সময় সিটির উন্নয়ন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার প্রেক্ষিতে এমন আশ^াসের কথা শোনান বুলবুল।
সোমবার বিকেলে বরিশাল বিমান বন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত সৌজন্য স্বাক্ষাতের সময় বাংলাদেশ-জাপান ফ্রেন্ডশীপ অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম খান বুলবুল মেয়র সাদিক আবদুল্লাহকে নগর উন্নয়নে বড় প্রকল্প নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।
সৌজন্য স্বাক্ষাতের সময় সিটি মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমরাই গড়বো আগামীর বরিশাল’ এই শ্লোগান নিয়ে আমি কাজ শুরু করেছি। এটা কেবল একটি শ্লোগানের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। কাজের মাধ্যমেই আমি সেই প্রমাণ রেখে যেতে চাই। বরিশাল সিটি করপোরেশনকে একটি আধুনিক এবং সুন্দর নগরে পরিণত করার স্বপ্ন রয়েছে। ইতিমধ্যে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজও শুরু হয়েছে। পাঁচ বছরের গ্যারান্টি দিয়ে নগরের সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা এবং পয়নিষ্কাষণ নিয়েও কাজ শুরু করেছি। নগর উন্নয়নে জাপান সরকার পাশে থাকলে আগামীতে বরিশাল একটি উন্নত নগরের রূপ নেবে। আমরা জাপান সরকারের সঙ্গে এব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনার জন্য বাংলাদেশ-জাপান ফ্রেন্ডশীপ অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম খান বুলবুলকে অনুরোধ করেছি। তিনি জাপান দূতাবাসের কান্ট্রি ডিরেক্টরের সঙ্গে আলোচনা করে আমার এই স্বপ্ন পূরণে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ^াস দিয়েছেন। আমি বিশ^াস করি বরিশাল সিটি করপোরেশনের নাগরিকরা একটি নান্দনিক নগর পাবে। বাংলাদেশ-জাপান ফ্রেন্ডশীপ অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে জাপান সরকারের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করে পরিকল্পনা ঠিক করবো।
বাংলাদেশ-জাপান ফ্রেন্ডশীপ অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম খান বুলবুল ভোরের আলোকে বলেন, আমি বরিশালের বাসিন্দা। আমার শহর বরিশাল। সেই বরিশালের উন্নয়নে যদি আমি ভূমিকা রাখতে পারি সেটা আমার জন্যও গর্বের বিষয় হবে। ইতিপূর্বে বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র শওকত হোসেন হিরণকে নগর উন্নয়নে জাপান সরকারের সহযোগিতা এনে দিয়েছিলাম। এরপর আর কোন মেয়র আমার সঙ্গে ওই যোগাযোগ রাখেনি। বর্তমান তারুন্যদীপ্ত মেয়র সেরনিয়াবত সাদিক আবদুল্লাহ বরিশালের জন্য জাপানের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেছেন। এর আগে সাদিককে সহযোগিতার জন্য তাঁর বাবা দক্ষিণাঞ্চলের বর্ষিয়ান রাজনীতিক আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ একাধিকবার বলেছেন। কিন্তু মেয়রের সঙ্গে এব্যাপারে আলোচনার সুযোগ ঘটেনি। গতকাল বিমান বন্দরে অনুষ্ঠিত সৌজন্য স্বাক্ষাতের সময় তিনি তাঁর পাশে থাকার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। আমি আমার সাধ্য অনুযায়ী মেয়র সাদিক এবং বরিশালের মানুষের পাশে থাকবো। খুব শিঘ্র জাপান দূতাবাস এবং কান্ট্রি ডিরেক্টরের সঙ্গে আলোচনা করে বরিশাল সিটি করপোরেশনের মধ্যে দ্বি-পাক্ষিক একটি বৈঠক অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নেবো। আমি মেয়রকে বলেছি বড় প্রকল্প দিতে। যার মাধ্যমে বরিশালসহ আশপাশের এলাকাও যেন উন্নয়ন করা সম্ভব হয়।
তিনি আরো বলেন, বরিশাল অঞ্চলের অন্যতম বর্ষিয়ান নেতা আমির হোসেন আমু ঝালকাঠির উন্নয়নের জন্য জাপান সরকারের সহযোগিতা নিয়েছেন। পিরোজপুর জেলার জন্যও অনেক উন্নয়ন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও জাপান সরকারের অর্থায়নে দক্ষিণাঞ্চলে বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। জাপান সরকার আমাদের উন্নয়নের সহযোগী। আমি বিশ^াস করি সাবেক মেয়র হিরণের চেয়েও বড় প্রকল্প নিয়ে বরিশাল সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ উন্নয়ন কর্মকা- পরিচালনা করতে পারবেন।
এর আগে গত ২৩ জানুয়ারি ঢাকা বিমান বন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবত সাদিক আবদুল্লাহার সঙ্গে জাইকার উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে ভোরের আলোর উপদেষ্টা সম্পাদক অধ্যাপক মো. জহিরুল ইসলাম এবং সম্পাদকের সঙ্গেও আলোচনা হয়। তখন ভোরের আলোর পক্ষ থেকেও জাইকার সহযোগিতা নিয়ে সিটির উন্নয়নে কাজ করার অনুরোধ জানানো হয়। এসময় মেয়রকে বাংলাদেশ-জাপান ফ্রেন্ডশীপ অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম খান বুলবুলের সঙ্গে বৈঠক করারও অনুরোধ জানানো হয়। সিটি মেয়র বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নেন।
এর প্রেক্ষিতে সোমবার বরিশাল বিমান বন্দরের ভিাইপি লাউঞ্জে মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ বাংলাদেশ-জাপান ফ্রেন্ডশীপ অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম খান বুলবুলের সঙ্গে সৌজন্য স্বাক্ষাতে মিলিত হন।