বরিশালে ইউএনওর বাসভবনে রণক্ষেত্র ,বিসিসি মেয়রকে লক্ষ্য করে গুলির অভিযোগ

বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মুনিবুর রহমানের সরকারি বাসভবনে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বুধবার (১৮ আগস্ট) রাতে দুই দফায় জেলা ছাত্রলীগের কয়েকশ নেতাকর্মী তার বাসভবনে হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুনিবুর রহমান। হামলায় ইউএনওর বাসভবনে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কয়েকজন আনসার সদস্য আহত হয়েছেন। আর ছাত্রলীগ বলছে, তাদের অন্তত অর্ধ শতাধিক নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। অপর দিকে ঘটনাস্থানে বিসিসি মেয়র গেলে তাকে তাক গুলি ছোড়ার অভিযোগ করে গনমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
হামলার পর মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান বাবুকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ঘটনার পর ইউএনও’র নিরাপত্তায় গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যসহ অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ইউএনও মুনিবুর রহমান জানান, উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণের ভেতরে বিভিন্ন স্থানে শোক দিবস উপলক্ষে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুকের ব্যানার-পোস্টার লাগানো ছিল। রাতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এসব ছিঁড়তে আসে। রাতে লোকজন ঘুমাচ্ছে জানিয়ে তিনি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বৃহস্পতিবার সকালে এগুলো ছিঁড়তে বলেন। এরপর তারা তাকে গালিগালাজ করতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা ইউএনওর বাসায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে।
রাত সাড়ে ১০টা এবং ১১টায় দুই দফায় তারা হামলা চালায় বলে জানান ইউএনও মুনিবুর রহমান।
প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বুধবার রাত সাড়ে ১০টায় বরিশাল সিটি করপোরেশনের ২০ থেকে ২৫ জন কর্মচারী নগরের সিঅ্যান্ডবি রোডে উপজেলা পরিষদ এলাকায় গিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতার শুভেচ্ছা ব্যানার অপসারণের কাজ শুরু করে। এসময় ইউএনওর কার্যালয় ও সরকারি বাসভবনের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আনসার সদস্যরা তাঁদের পরিচয় জানতে চান। এর পর তাঁরা সকালে এসে কাজ করার জন্য বলেন। এসময় সিটি করপোরেশনের কর্মচারীদের সঙ্গে দায়িত্বরত আনসার সদস্যদের বাকবিত-া হয়।
পরে খবর পেয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক হাসান আহেমদ ওরফে বাবুর নেতৃত্বে ছাত্রলীগের জেলা কমিটির সহসভাপতি আতিকুল্লাহ খান মুনিম, সাংগঠনিক সম্পাদক রাজিব খান, সাজ্জাদ সেরনিয়াবাতসহ শতাধিক নেতাকর্মী সেখানে যান। পরে সেখানে আনসার সদস্যদের সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি হয়। তখন নেতাকর্মীরা ইউএনওর বাসায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।
হামলা ও সংঘর্ষের পর ঢাকা–বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা সাজ্জাদ সেরনিয়াবাত অভিযোগ করে বলেন, ইউএনওর নির্দেশে আনসার সদস্যরা আমাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়েছে। এতে অন্তত ৩০ জন নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছে।