বরিশালে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় বেড়ী বাঁধের বাইরের মানুষদের আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়া শুরু

বরিশালসহ উপকূলীয় এলাকায় সুপার সাইক্লোন ‘আম্পান’ এর প্রভার শুরুর আগেই নিচু এলাকা, চরাঞ্চল এবং বেড়ী বাঁধের বাইরে অবস্থানকারী মানুষদে আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গত সোমবার থেকে এসব এলাকার মানুষদের আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার কাজ শুরু করেছে প্রশাসন।
বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী জানান, বরিশাল বিভাগের নি¤œাঞ্চল বিশেষ করে ঢালচর এবং মনপুরার ঝূঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষদের গত সোমবার থেকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়া শুরু হয়েছে। কোন মানুষকে নিচু এলাকা, চরাঞ্চল ও বেড়ী বাঁধের বাইরে থাকতে দেওয়া হবে না। ঝড়ের আগেই মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে নেয়ার কথা জচানিয়েছেন তিনি।
ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় প্রস্তুতির বিষয়ে গতকাল মঙ্গলবার বিভাগীয় কমিশনার বলেন, প্রত্যন্ত এলাকার মানুষকে সতর্ক-সচেতন করার জন্য বিভাগীয় পর্যায়ে থেকে জেলা, উপজেলা এবং ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা হয়েছে। সভা থেকে নিজ নিজ এলাকার মানুষকে ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কে সচেতন করতে মাইকিং করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবারের মধ্যে নিচু এলাকা ও চরাঞ্চলের মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বিভাগীয় প্রশাসন জানিয়েছে, বিভাগে ২ হাজার ৪০০ বিশেষায়িতসহ প্রায় ৬ হাজার আশ্রয় কেন্দ্রে ১১ লাখের বেশি মানুষকে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে রমজানের পবিত্রতার কথা বিবেচনা করে পর্যাপ্ত খাবার ও শিশু খাদ্য, প্রচুর ত্রাণের ববস্থা রাখা হয়েছে। সাইক্লোন শেল্টারগুলোতে সুপেয় পানি, টয়লেট-বাথরুম, ব্যক্তিগত সুরক্ষা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃক্ষকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এর আগে বিভাগীয় সভা থেকে উপকূলীয় এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ সংস্কারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ অঞ্চলের মানুষকে ঘূর্ণঝড় এবং জলোচ্ছাস থেকে রক্ষার জন্য নানামুখি পদক্ষেপ গ্রহণ করার কথা বলেন বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তা ইয়ামিন চৌধুরী।
ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কেন্দ্র (সিপিপি) বরিশালের উপ-পরিচালক আব্দুর রশিদ জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঘড় আম্পান ভোররাত থেকে সন্ধ্যার মধ্যে উপকূলী এলাকা অতিক্রম করতে পারে। ঘুর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৯০ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ২২৫ কিলোমিটার, যা দমকা ও ঝড়ো হাওয়া আকারে ২৪৫ কিলোমিটারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের পূর্ব প্রস্ততির অংশ হিসেবে সিপিপি’র স্বেচ্ছাসেবকরা প্রতিটি গ্রামে দুটি করে সাংকেতিক পতাকা উত্তোলন করেছেন। এছাড়া মেগাফোন ও মাইকের মাধ্যমে প্রচার করছেন। জনগণ যেন মাস্ক পরিহিত অবস্থায় আশ্রয় কেন্দ্রে যায় এবং আশ্রয় কেন্দ্রে গিয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখে সে বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।