বরিশালে নিষেধাজ্ঞা শেষে ইলিশের আমদানী বাড়ছে

মা ইলিশ শিকারে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে ইলিশে সয়লাব বরিশালের মোকাম। প্রাণ ফিরে এসেছে বরিশাল ইলিশ মোকামে। তবে দাম খুচরা ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। আড়তদাররা বলছেন, এবার নিষেধাজ্ঞা সফল হওয়ায় প্রত্যাশা অনুযায়ী ইলিশ আসেনি। তবে দাম আগের চেয়ে কিছুটা কমেছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে সমুদ্রের ইলিশ এলে দাম আরও কমবে আশা মৎস্য আড়তদার নেতাদের। মৎস্য বিভাগ বলছে, ডিম ছাড়ার পর ইলিশ নদী ছেড়ে সমুদ্রে চলে যায়। এ কারণে নদীতে ইলিশ কম পাওয়া যাচ্ছে।
ইলিশ গভীর সমুদ্রের মাছ। ডিম ছাড়ার জন্য ইলিশ নদীতে আসে। ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশের প্রজনন নিরাপদ করতে সরকার অভ্যন্তরীণ নদ-নদীতে গত ১৪ অক্টোবর থেকে ২২ দিনের জন্য সব ধরণের মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা জারী করে। গত বুধবার রাত ১২টায় শেষ হয় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা। এরপর থেকে অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন নদী থেকে শিকার করা শত শত মন ইলিশ আসছে বরিশাল মোকামে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার মন ইলিশ এসেছে বরিশাল মোকামে। দির্ঘ ২২ দিন পর প্রাণ ফিরে আসে বরিশালের মোকামে।
প্রচুর পরিমান ইলিশের আমদানী হলেও খুচরা পর্যায়ে দাম কমেনি বলে অভিযোগ করেছেন ক্রেতারা। আড়তদাররা সিন্ডিকেট করে চড়া দামে ইলিশ বিক্রি করছে অভিযোগ তাদের।
নগরীর পোর্ট রোড মোকামের আড়তদাররা জহির সিকদার বলেন, প্রতি বছর এই দিনে বরিশাল মোকামে অন্তত ৫ হাজার মন ইলিশ আসে। আজ (গতকাল) মোকামে এসেছে সর্বসাকুল্যে প্রায় ১ হাজার মন। নিষেধাজ্ঞা সফল হওয়ায় ২২ দিন পর মোকামে ইলিশ এসেছে চাহিদার তুলনায় কম। এ কারণে ইলিশের দাম কিছুটা চড়া।
আড়তদার নাসির উদ্দিন জানান, গতকাল মোকামে রপ্তানীযোগ্য এলসি সাইজ (৬০০ থেকে ৯০০ গ্রাম) প্রতি কেজি ইলিশ ৬০০ থেকে ৬২৫ টাকা, কেজি সাইজ প্রতি কেজি ৭০০ টাকা এবং ১ কেজি ২০০ গ্রাম সাইজের প্রতি ইলিশ পাইকরী বিক্রি হয়েছে ৭৫০ টাকা দরে।
জেলা মৎস্য আড়তদার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নিরব হোসেন টুটুল বলেন, নিষেধাজ্ঞার আগের চেয়ে বরিশাল মোকামে প্রতি মন ইলিশে ২ হাজার টাকা করে দাম কমেছে। আগামী কয়েক দিনে সমুদ্রের ট্রলারগুলো ফিরে আসলে ইলিশের সরবরাহ বাড়বে, তখন দামও কিছুটা কমবে আশা করছেন তারা। সরকারের নিষেধাজ্ঞার কারণে বাংলাদেশে ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকার সারা বিশে^ ইলিশ রপ্তানী উন্মুক্ত করে দিলে জেলে ও ব্যবসায়ীরা ইলিশের ন্যায্য মূল্য পাবে এবং সরকারও প্রচুর রাজস্ব আদায় করতে পারবে।
বরিশাল মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তা (ইলিশ) ড. বিমল চন্দ্র দাস বলেন, এবার সকলের সহযোগিতায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা সফল হয়েছে। এ কারণে মা ইলিশ প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ডিম অবমুক্ত করতে পেরেছে অভ্যন্তরীণ নদ-নদীতে। তিনি বলেন, ইলিশ ডিম ছাড়ার পর সমুদ্রে চলে যায়। এ কারণে নদ-নদীতে ইলিশ কম। আর নদীতে যে ইলিশ পাওয়া যায় সেগুলোর পেটেও ডিম নেই। নিষেধাজ্ঞা শেষে সমুদ্রে মাছ শিকারে যাওয়া ট্রলারগুলো ফিরে আসলে মোকামে ইলিশ সরবরাহ বাড়বে বলে আশা করেন মৎস্য কর্মকর্তা ড. বিম চন্দ্র দাস।