বরিশালে পুলিশের বিরুদ্ধে সংস্কৃতি কর্মীদের মানববন্ধন
বরিশালে জেলা পুলিশের বিরুদ্ধে ৩৭টি সংগঠনের জোট বরিশাল সাংস্কৃতিক সংগঠন সমন্বয় পরিষদের সদস্য সংগঠন পঞ্চসিঁড়ি গ্রুপ থিয়েটারের কার্যালয় ভাঙার অভিযোগ উঠেছে। গণপূর্ত বিভাগের জায়গা জোর করে দখল নেওয়া এবং সাংস্কৃতিক সংগঠনের কার্যালয় ভেঙে ফেলার প্রতিবাদে পুলিশের বিরুদ্ধে মানবন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে সংস্কৃতিকর্মীরা।
শবিার বেলা ১১টায় নগরীর অশি^নী কুমার হল চত্ত্বরে ফেডারেশনধর্মী ৭টি সাংস্কৃতিক ও নাট্য সংগঠন ওই মানববন্ধন এবং বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে।
মানববন্ধন থেকে জেলা পুলিশের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের অসৌজন্যমূলক আচরণের তীব্র নিন্দা জানানো হয়। একই সঙ্গে কর্মসূচি থেকে দ্রুত পঞ্চসিঁড়ির কার্যালয়ের ব্যাপারে জেলা পুলিশ ইতিবাচক পদক্ষেপ না নিলে সারা দেশের সাংস্কৃতিক সংগঠন একযোগে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। মানববন্ধন শেষে সংস্কৃতি কর্মীরা দাবি আদায়ে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে।
মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজক সংগঠন হচ্ছে, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশান, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, বাংলদেশ আবৃত্তি সংগঠন সমন্বয় পরিষদ, বাংলাদেশ সঙ্গীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদ, বরিশাল দক্ষিণাঞ্চল যাত্রা শিল্পী পরিষদ ও নজরুল সাংস্কৃতিক জোট।
বরিশাল সাংস্কৃতিক সংগঠন সমন্বয় পরিষদের সভাপতি নজমুল হোসেন আকাশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও বরিশাল নাটকের সভাপতি কাজল ঘোষ, খেয়ালী গ্রুপ থিয়েটারের সভাপতি অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম চুননু, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সভাপতিম-ীর সদস্য আজমল হোসেন লাবু, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের সভাপতিম-লীর সদস্য শুভংকর চক্রবর্তী, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী বরিশাল জেলার সভাপতি সাইফুর রহমান মিরণ, বরিশাল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি স্বপন খন্দকার, শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসেন, রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি সুশান্ত ঘোষ, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন বরিশালের সভাপতি অধ্যাপক টুনু রাণী কর্মকার, সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ চক্রবর্তী, পঞ্চসিঁড়ি গ্রুপ থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমানসহ অন্যরা।
বক্তারা বলেন, নগরীর বিউটি রোডে গণপূর্ত বিভাগের অনুমোদিত জায়গায় পঞ্চসিড়ি গ্রুপ থিয়েটার ৪০ বছর সাংস্কৃতিক ও নাট্য চর্চ করে আসছে। সেই কার্যালয় জেলা পুলিশ কোন অনুমতি ছাড়া ভেঙ্গে দিয়ে তারা দখল করেছে। গণপূর্ত বিভাগ জানিয়েছে তারা পঞ্চসিঁড়ি গ্রুপ থিয়েটারকে উচ্ছেদ করেনি কিংবা তোদের কোন নোটিশ ও দেয়নি। একই সঙ্গে তারা আরও জানিয়েছেন, তাদের জায়গা জেলা পুলিশের কাছে হস্তান্তরও করা হয়নি। এমনকি জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ওই সসম্পত্তিতে নতুন কোন স্থাপনা নির্মাণ করার অনুমতিও চাওয়া হয়নি।
বক্তরা অভিযোগ করেন, গণপূর্ত বিভাগের জায়গা থেকে জেলা পুলিশ পঞ্চসিঁড়িকে উচ্ছেদ করে মালামাল নষ্ট করেছে তা সরকারি একটি সংস্থার দখলদারিত্ব ছাড়া আর কিছু নয়। বিষয়টি নিয়ে জেলা পুলিশের কর্তাদের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করা হলেও তারা নানানভাবে টালবাহানা করেছে। উল্টো সমন্বয় পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং পঞ্চসিঁড়ির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমানের সঙ্গে পুলিশ অসৌজ্যমূলক আচরণ করেছে। যা কোনভাবেই কাম্য নয়। জেলা প্রলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নিজেকে সংস্কৃতিবান দাবি করলেও তিনিই মূলত অবৈধ এই কাজের সঙ্গে যুক্ত। অবিলম্বে পঞ্চসিড়ি গ্রুপ থিয়েটার কার্যালয় পূননির্মাণ করার দাবি জানান বক্তারা। একই সঙ্গে যতোদিন এই নির্মাণ কাজ না হয় ততোদিন আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারী দেন বক্তারা।