বরিশালে যথাযোগ্য মর্যদায় শহীদ দিবস পালিত

বরিশালে যথাযোগ্য মর্যদায় পালিত হচ্ছে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। রাত ১২ একমিনিটের সময় বরিশাল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে শুরু হয় ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন। যা অব্যাহতভাবে গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টা পর্যন্ত চলে। বরিশালের সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সামাজিক সাংস্কৃতিক রাজনৈতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ওই শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। প্রায় চার শতাধিক প্রতিষ্ঠান ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
গতকাল শুক্রবার ভোর থেকে নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে প্রভাত ফেরী করে নগরীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে জড়ো হতে থাকেন সর্বস্থরের মানুষ। শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান তারা। ভাষা শহীদদের শুভেচ্ছা জানানো ফুলে ফুলে ছেয়ে যায় শহীদবেদী। একুশের অনুষ্ঠানমালা নির্বিঘœ এবং শান্তিপূর্ণকরতে শহীদ মিনার এলাকায় কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।
২০ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টা এক মিনিটে প্রথম শ্রদ্ধনিবেদন করেন পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন ও পরীবিক্ষণ কমিটির আহ্বাক (মন্ত্রী) আলহাজ¦ আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ, এরপরে পর্যায়ক্রমে বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ, বরিশাল বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী, বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজর পক্ষে অতিরিক্ত ডিআইজি মো. এহসান উল্লাহ, বরিশাল মেট্রোলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান, জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান। এরপর বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
বরিশাল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুলের শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসা শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক সহ অন্যান্যরা বলেন, ভাষা আন্দোলনের ৬৮বছর পরও রয়ে গেছে অনেক অপূর্ণতা। সর্বস্তরে এখনো পুরোপুরি মাতৃভাষার প্রচলন হয়নি । নতুন প্রজন্মের মাঝে মাতৃভাষার চেতনা ছড়িয়ে দেয়ার তাগিদ দেন তারা। একুশের চেতনা ধারণ করে অন্যায় মেনে না নেওয়ার প্রত্যয়ও ব্যক্ত করেন তারা।
এদিকে একুশের চেতনা বাস্তবায়নে দেশ থেকে বৈষম্য দূরীকরণ এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন বিরোধী রাজনীতিক বাসদ বরিশাল জেলার সদস্য সচিব ডা. মনিষা চক্রবর্তী এবং মহানগর বিএনপির সভাপতি সাবেক মেয়র অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ার।
অন্যদিকে গতকাল সকালে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন বরিশাল কেন্দ্রীয় শহীদ বেদীতে উঠে ভাষা শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনায় দোয়া-মোনাজাত করেছেন।
অন্যদিকে বিগত বছরের মতো এবারও একুশের এই দিনে নগরীর রসুলপুর চরের শিশুদের অংশগ্রহনে শহীদ মিনার নির্মান প্রতিযোগীতার আয়োজন করে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট। দিবসটি উপলক্ষ্যে সার্কিট হাউজ চত্ত্বরে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচীর আয়োজন করে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়।