বরিশালে শিশু শিক্ষার্থীকে স্কেল দিয়ে পিটিয়ে দাঁত ফেলে দেওয়ার অভিযোগ শিক্ষকের বিরুদ্ধে

বরিশালে শিশু শিক্ষার্থীকে স্কেল দিয়ে পিটিয়ে দাঁত ফেলে দেওয়ার অভিযোগ শিক্ষকের বিরুদ্ধে

 


বরিশালে এক শিশু শিক্ষার্থীকে স্কেল দিয়ে পিটিয়ে দাঁত ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ওই শিক্ষক প্রায়ই শিক্ষার্থীদের শারীরিক নির্যাতন করে বলে অভিযোগ রয়েছে। নির্যাতনের ভয়ে অনেক শিক্ষার্থী স্কুলে যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন অভিভাবকরা। ওই শিক্ষককে সংযত হওয়ার আহবান জানিয়েছেন তারা। একই সাথে তারা বিচার দাবি করেন। অভিযুক্ত শিক্ষক নির্যাতনের কথা স্বীকার করলেও দেখিয়েছেন নানা যুক্তি। অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। 

বরিশাল রবিবার ২৭ নভেম্বর নগরীর পুরাতন কয়লা ঘাট এলাকার বানী মন্দির সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। 

ওই স্কুলের ২য় শ্রেণীর শিক্ষার্থী মঈনউদ্দিকে তুচ্ছ অজুহাতে স্কেল দিয়ে পিটিয়ে আহত করে সহকারী শিক্ষক তুহিন কনা। 

মঈনউদ্দিন জানায়, স্কুলে সহপাঠীদের সাথে দুস্টুমি করছিলেন তিনি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষক তুহিন কনা স্কেল দিয়ে তার মুখ মন্ডলে আঘাত করে। এতে তার ঠোট ফেঁটে যায়। পড়ে যায় উপরের পাটির একটি দাত। ওই স্কুলের অন্যান্য শিক্ষার্থীরা জানান, প্রায়ই নানা অজুহাতে তাদের শারীরিক নির্যাতন করেন শিক্ষক তুহিন কনা। 

পিটিয়ে এক শিশু শিক্ষার্থীর দাঁত ফেলে দেয়ার ঘটনায় স্কুলে গিয়ে প্রতিবাদ জানান অভিভাবকরা। শিশুদের উপর শারীরিক নির্যাতনের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকশ করেন তারা। 

আহত শিক্ষার্থীর বাবা আলাউদ্দিন জানান, গত কয়েকদিন ধরে ওই শিক্ষক তার ছেলেকে নানা অজুহাতে নির্যাতন করে। সব শেষ গতকাল পিটিয়ে দাত ভেঙ্গে ফেলেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচার দাবি করেন তিনি।

পিকু মন্ডল নামে এক অভিভাবক জানান, নির্যাতনের ভয়ে তার ছেলে স্কুলে যেতে চায় না। অনেকদিন ধরে সে স্কুলে যাওয়া বন্ধ রয়েছে তার ছেলের।

ছালমা আক্তার নামে আরেক অভিভাবক জানান, সম্প্রতি আরেক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হাত ফুলিয়ে দিয়েছে  অভিযুক্ত শিক্ষক। এলাকাবাসীর প্রতিবাদের মুখে ওই যাত্রায় ক্ষমা চেয়ে পার পায় সে। এর কয়েকদিনের মধ্যে আবারও শিক্ষার্থী নির্যাতন করে সে। অভিভাবকরা ওই শিক্ষককে সংযত আচরণ করার আহবান জানিয়েছেন। একই সাথে  শিক্ষার্থী নির্যাতরে ঘটনায় বিচার দাবি করেন তারা।

শিক্ষার্থী নির্যাতনের অভিযোগ স্বীকার করলেও নানা অযুহাত দেখিয়েছেন অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক তুহিন কনা। 

এদিকে এ ঘটনার পর আত্মগোপন করেন ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক। এ কারনে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

বরিশাল সদর উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা নাসিমা বেগম এর কাছে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি শুনেছেন বলে এ প্রতিবেদককে ঘটানাটি এড়িয়ে গিয়ে সামান্য ব্যথা পেয়েছে ঠিক হয়ে গেছে  বলে জানান।

শিক্ষার্থী নির্যাতন দূরের কথা, তাদের ধমক দেয়ার নিয়ম নেই বলে জানিয়েছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহন লাল দাস। এ ঘটনা তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন তিনি।

ওই স্কুলে প্রাক প্রাথমিক থেকে ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত ৪২৩ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। ১৪টি পদের বিপরীতে শিক্ষক রয়েছে ১৩ জন।