বরিশালের মানুষ গুজবে কান দেয় না। ছেলে ধরা কিংবা কল্লাকাটা এগুলো স্রেফ গুজব। আর এই গুজবে কান দিয়ে গণপিটুনী দেওয়া ফৌজদারী অপরাধ। আইন কারো হাতে তুলে নেওয়া যাবে না। সন্দেহজনক কিছু দেখলে তাৎক্ষনিক পুলিশকে অবহিত করুন। যারা ছেলেধরা, কল্লাকাটা এসব গুজব ছড়াবে অথবা যারা উস্কানি দেবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বুধবার পৃথক পৃথক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমশিনার মো. শাহাবুদ্দিন খান এবং পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম।
বুধবার সন্ধ্যায় মহানগর পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে মো. শাহাবুদ্দিন খান বলেন, চলমান গুজব নিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গণপিটুনির ঘটনা ঘটছে, যা আইন অনুযায়ী অপরাধ। আমাদের অঞ্চল অনেকটাই শান্তিপূর্ণ। বরিশালবাসী গুজবে কান না দেওয়ায় তেমন কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। গুজব নিয়ে এখানে যে কয়টা ঘটনা ঘটেছে, তার বেশিরভাগ সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়েছে। এ নিয়ে বরিশালবাসী বাহবা পাওয়ার যোগ্য। অন্য অঞ্চলের থেকে আমাদের এখানে গুজবের বিষয়টা আগে ছড়ালেও, কেউ তা আমলে নেয়নি বলে গণপিটুনি কিংবা হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
বিএমপি কমিশনার বলেন, নগরে গুজব নিয়ে বিভ্রান্তি না হওয়ার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে, লিফলেট বিতরণ হচ্ছে। পাশাপাশি, আগামী জুমার খুতবায় এ নিয়ে ইমাম সাহেবরা বয়ান দেবেন।
এর আগে বুধবার বেলা ১১ টায় বরিশালে পুলিশ লাইন্সের ইন সার্ভিস সেন্টারে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সস্মেলনে পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম বলেছেন, গুজব ও গণপিটুনি রোধে গণমাধ্যম ও জনগণের সহযোগিতা দরকার। দেশের বিভিন্নস্থানে ছেলেধরা অভিযোগে গণপিটুনি দিয়ে মানুষ মারা হচ্ছে। যা কোনভাবে কাম্য নয়। ছেলেধরা গুজব এবং গণপিটুনী রোধে পুলিশের প্রতি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যেকোন মূল্যে এই উসকানি বন্ধ করতে হবে।
মেট্রোপলিটন পুলিশ কমশিনার মো. শাহাবুদ্দিন খান এবং পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম বলেছেন, আমরা এ নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে বরিশালের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে খুব দ্রুত ক্রাশ প্রোগ্রাম করতে যাচ্ছি। সেখানে অভিভাবক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা থাকবে। যদিও, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আমাদের সচেতনতামূলক প্রচারণা কর্মসূচি আগে থেকেই চলছে। মানুষের কল্যাণে ব্রিজ করতে মানুষের ক্ষতি করতে হবে, এটা কেন বিশ্বাস করতে হবে? বরিশালের মানুষ গুজবে কান দেয় না। তারা শান্তির পক্ষে, বিভ্রান্তির বিপক্ষে থাকবে, এটাই কামনা করি। এই গুজবের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাতে বিভিন্নস্থানে পুলিশ মাইকিং করছে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নিয়ে সচেতনতামূলক সভা করা হচ্ছে। এছাড়া শুক্রবার মসজিদে মসজিদে মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে ইমামরা বয়ান দেবেন। যারা এসব গুজব ছড়াবে, বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও যারা উসকানি দেবে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।