বাকেরগঞ্জে ৭ স্বর্নের দোকানে দুর্ধর্ষ ডাকাতি, কোটি টাকার মালামাল লুট

বাকেরগঞ্জে ৭ স্বর্নের দোকানে দুর্ধর্ষ ডাকাতি, কোটি টাকার মালামাল লুট

বাকেরগঞ্জের কলসকাঠি বাজারে ৭ টি স্বর্ণের দোকানে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাতরা স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকাসহ কোটি টাকার মালামাল লুটপাট করে নিয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাত একটার দিকে উপজেলার কলসকাঠী বাজারে একদল ডাকাত হানা দেয়। এর আগে তারা ২-৩ টি স্পীডবোটে করে কলসকাঠী বাজারে আসে। বাজারে প্রবেশ করে তারা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর (ডিবি পুলিশ) পরিচয় দিয়ে বাজারের পাহাড়াদার মন্টু ও জনতা ব্যাংকের নাইট গার্ডসহ বাজারে থাকা লোকজনকে ধরে পেছন থেকে হাত বেঁধে সেবা ফার্মেসী নামক একটি ওষুধের দোকানে নিয়ে আটকে রাখে। 

ঘটনার সময় খবর পেয়ে কাছাকাছি থাকা থানা পুলিশের এএসআই জসিম আসে ওই সময় ডাকাতদলের ৪/৫ সদস্যকে দেখে চ্যালেঞ্জ করলে পুলিশের এএসআই জসিম কে পেছন থেকে লোহার রড দিয়ে মাথার ওপর আঘাত করে ডাকাত দলের সদস্যরা। এরপর আহত রক্তাক্ত জসিমের হাতও পেছন থেকে বেঁধে ওই ফার্মেসিতে নিয়ে আটকে রাখে। পরে তাকে তাকে প্রথমে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার এম্বুলেন্সে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।

বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, ডাকাতদলের সদস্যরা বাজারের রাজলক্ষী জুয়েলার্স, কলসকাঠী অলঙ্কার ভবন, দোলা অলংকার ভবন, কানাই কর্মকারের স্বর্নের দোকান, পাল অলঙ্কার ভবন, সোনার গহনা ভবন, মা ছিলা পালিস ঘরসহ ৭ টি স্বর্নের দোকানে লুটপাট চালায়। ব্যবসায়ীদের দাবী এ লুটপাটে তাদের ৭০-৮০ ভরির ওপরে স্বর্ণ, ১ শত ৫০ভরির ওপরে রুপা ও নগদ কয়েকলাখ টাকাসহ কোটি টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্র জানায়, গত এক সপ্তাহ আগে পুলিশ তালিকাভুক্ত দুর্ধর্ষ ডাকাত বাবুল হাওলাদার কে গ্রেফতার করলেও থানার ওসি মোঃ আবুল কালাম দফারফা করে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে তাকে ছেড়ে দেয়। তিনি একইভাবে গত এক মাস আগে সাজাপ্রাপ্ত পুলিশের গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত উপজেলার দুর্ধর্ষ ডাকাত ও গ্যাং লিডার ইব্রাহিমকে রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের পশ্চিম শ্যামপুর গ্রামের তার নিজের বাড়ি থেকে পুলিশ আটক করে দফারফা করে ছেড়ে দেয়। ধারণা করা হচ্ছে দীর্ঘদিন কারাবাস করা ডাকাত বাবুল ও পলাতক ইব্রাহিমদের মত ডাকাতরাই সুসংগঠিত হয়ে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটাতে পারে। 

ব্যবসায়ীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বাকেরগঞ্জ থানা থেকে মাত্র ৩ কিলোমিটার দূরে ডাকাতির ঘটনা সংগঠিত হলেও ঘটনাস্থলে পুলিশের পৌঁছাতে ৪ ঘন্টা সময় লেগে যায়। এ বিষয়ে ওসি আবুল কালাম এর ভূমিকা নিয়েও তাঁরা প্রশ্ন তোলেন। 

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সাঈদ আনোয়ার ভোরের আলোকে জানান, খবর পেয়ে থানা পুলিশের অন্য সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসলেও তার আগে ডাকাত দলের সদস্যরা পালিয়ে যায়। আহত পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করে প্রথমে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে এয়ার এম্বুলেন্সে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। সকাল ১০টায় বরিশাল পুলিশ সুপার মোঃ সাইফুল ইসলাম পিপিএম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
 



আশিক সরদার/বাকেরগঞ্জ/19/09/19