বাস কেড়ে নিল এক দিন বয়সী শিশুটির প্রাণ

আগের দিন হাসপাতালে জন্ম নেয় শিশুটি। পৃথিবীর আলো গায়ে লাগে তার। তবে মাত্র এক দিনের জন্যই। পরদিন মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় সড়কেই শেষ হয়ে যায় শিশুটির জীবন।
তাকে কোলে নিয়ে বাড়ি ফেরা হলো না মা নাছিমারও (২৫)। রবিবার দুপুরে নেত্রকোনা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ময়মনসিংহের গাছতলা নামক স্থানে বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে একই পরিবারের ছয়জনসহ চালক ঘটনাস্থলে নিহত হন।
নিহতরা হলেন, মোছা. নাছিমা (২৫), তার একদিনের বয়সি ছেলে শিশু ও স্বামী মাওলানা মো. ফারুক (৩২), ভাসুর নিজাম উদ্দিন (৩৫) ও আরেক ভাসুর আজিম উদ্দিনের স্ত্রী জোসনা (৪০) এবং ননাস জুলেখা (৩৭)।
তারা নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার আগিয়া ইউনিয়নের হেচুয়ালেঞ্জি গ্রামের বাসিন্দা। প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অটোরিকশা চালকের নাম ও পরিচয় জানা যায়নি।
জানা যায়, নিহত মোছা. নাছিমার স্বামী মাওলানা মো. ফারুক ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় একটি মাদরাসায় শিক্ষকতা করতেন। সেখান থেকে সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার জন্য সম্প্রতি গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলায় হেচুয়ালেঞ্জি গ্রামে আসেন। নাছিমার প্রসব ব্যাথা দেখা দিলে তাকে পরিবারের লোকজন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করান। শনিবার নাছিমা কোল জুড়ে আসে একটি ফুটফুটে ছেলে শিশু। রবিবার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান নাছিমা।
তিনি ও তার একদিনের শিশুকে নিয়ে হাসপাতাল থেকে স্বামী ও পরিবারের সদস্যরা গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। ময়মনসিংহ থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ফেরার পথে নেত্রকোনা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাছতলা নামক স্থানে দ্রুতগতির একটি বাসের সঙ্গে সংঘর্ষে তাদের মৃত্যু হয়। নেত্রকোনা থেকে ঢাকাগামী শাহজাহাল পরিবহনের দ্রুতগতির বাসের ধাক্কায় ঘটনাস্থলে অটোরিকশাটি দুমড়ে-মুচড়ে যায় ও বাসের সামনের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঘটনাস্থলেই সাতজনের মৃত্যু হয়।
নেত্রকোনার শ্যামগঞ্জ হাইওয়ে থানার ওসি নয়ন দাস দেশ রূপান্তরকে বলেন, মৃতদেহগুলোর সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হচ্ছে।