বিপিএলে ‘এমইই প্রটোকল’

টোকিও অলিম্পিকে ম্যানেজড ইভেন্ট এনভায়রনমেন্ট (এমইই) প্রটোকল তৈরি করে সফল হয়েছিল আয়োজকরা। এরপর থেকে এই পদ্ধতিতে টুর্নামেন্ট কিংবা ম্যাচ আয়োজন করছে সংশ্লিষ্ট বোর্ড, আইসিসি কিংবা ক্রীড়া ফেডারেশন। জৈব সুরক্ষা বলয়ে থাকতে থাকতে মানসিকভাবে কিছুটা অস্বস্তি তৈরি হচ্ছে খেলোয়াড়দের। সেখান থেকে মুক্তি দিতেই মূলত এমইই প্রটোকলের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার চিন্তা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। গত পাকিস্তান সিরিজ এই পদ্ধতিতে আয়োজন করেছিল বিসিবি। আগামী শুক্রবার থেকে শুরু হতে যাওয়া বঙ্গবন্ধু বিপিএলও একই পদ্ধতিতে আয়োজন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশের ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
২০২০ সালের মার্চ থেকে ক্রিকেটার, কোচিং ও সাপোর্টিং স্টাফদের জীবন জৈব সুরক্ষা বলয়ে আটকে আছে। এমইই প্রটোকলের মাধ্যমে ক্রিকেটাররা আগের থেকে একটু স্বস্তি পাবেন। কোভিড নেগেটিভ হলে তাদের চলাফেরার পরিধি বাড়বে।
নতুন এই পদ্ধতি নিয়ে বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘করোনার যে গাইডলাইন আমরা এই বিপিএলে প্রয়োগ করতে যাচ্ছি, এটা টোকিও অলিম্পিকের আলোকে চেষ্টা করা হয়েছে। এখানকার বিদ্যমান বাস্তবতার সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চেষ্টা করছি সেটাকে প্রয়োগ করতে। আমরা এর আগে বিসিএলসহ অনান্য দ্বিপাক্ষিক যে সিরিজগুলো আয়োজন করেছি, মোটামুটি চেষ্টা করেছি স্বাস্থ্য সুরক্ষা যতটুকু সম্ভব নিশ্চিত করার জন্য। আমরা মোটামুটি বড় কোনও সমস্যা ছাড়াই টুর্নামেন্টগুলো শেষ করতে পেরেছি। এখন সেই অভিজ্ঞতার আলোকে আশা করছি এই বিপিএলটা একইভাবে পরিচালনা করবো।’
ম্যানেজড ইভেন্ট এনভায়রনমেন্ট (এমইই) পদ্ধতি সম্পর্কে তিনি বলেছেন, ‘এবার ঠিক কঠোর হবে না। আগে যে জৈব সুরক্ষা বলয় আমরা বলতাম, এখন আগের সেই কনসেপ্ট থেকে পুরো স্পোর্টস সরে আসছে। এখন জৈব সুরক্ষা বলয় উল্লেখ করা হচ্ছে না। এখন ম্যানেজড ইভেন্ট এনভায়রনমেন্ট (এমইই) বলা হচ্ছে। জিনিসটা বিদ্যমান বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে কিছুটা শিথিলতা আনার জন্য করা হচ্ছে। এই কনসেপ্ট টোকিও অলিম্পিকে ব্যবহার করা হয়েছে। এর ফলে ক্রিকেটার ও কোচিং স্টাফদের আগের মতো বিধিনিষেধে থাকতে হবে না। তারা ফ্রি হয়ে ঘোরাফেরা করতে পারবে। টিম হোটেল, সুইমিং পুল, জিমনেশিয়াম, ইনডোর, বিসিবি একাডেমি ও মাঠে নিজেদের মতো করে চলাফেরা করতে পারবে।’
গত দুই দিন ধরে ক্রিকেটারদের করোনা টেস্ট করানো হচ্ছে। দুই দিনে সৌম্য সরকারসহ বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সব মিলিয়ে ঠিক কতজন আক্রান্ত হয়েছেন, সে ব্যাপারে অবশ্য মুখে কুলুপ এটে রেখেছে বিসিবি।
পুরো প্রক্রিয়া নিয়ে বিসিবির প্রধান চিকিৎসক বলেছেন, ‘আমাদের গাইড লাইন অনুসারে আমাদের কোভিড সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালিত হবে। সেই ধারাবাহিকতায় আমরা প্রতিটি অংশগ্রহণকারীকে টেস্ট করছি, যারা নেগেটিভ হবেন তারা এবং যাদের ডাবল ভ্যাক্সিনেশন আছে, তারা বাবলে প্রবেশ করবেন। তো আমরা গতকাল (মঙ্গলবার), (বুধবার) এবং আজ (বৃহস্পতিবার) তিন দিন টেস্ট কার্যক্রম চালাচ্ছি। এর মধ্যে যে রেজাল্টগুলো আসছে, সেগুলো ফ্র্যাঞ্চাইজি দলের সঙ্গে শেয়ার করছি। যেহেতু এগুলো মেডিক্যাল ক্লাসিফায়েড ব্যাপার, সেহেতু জিনিসগুলো প্রকাশ্যে বলতে পারছি না।’
গত দুই দিনের করোনা টেস্টের রিপোর্ট অনুযায়ী এখন পর্যন্ত বিপিএল নিয়ে কোনও শঙ্কা দেখছেন না দেবাশীষ, ‘আরেকটা দিনের টেস্ট বাকি আছে। আমরা আজকের দিনের টেস্ট করতে পারলে টোটাল কোম্পাইলগুলো জানতে পারবো কতজন আক্রান্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্ট না হওয়ার কোনও ঝুঁকি দেখছি না।’