বেপরোয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও জনপ্রতিনিধিরা,ভাড়াটেদের হামলার শিকার গণমাধ্যমকর্মীরা

বেপরোয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও জনপ্রতিনিধিরা,ভাড়াটেদের হামলার শিকার গণমাধ্যমকর্মীরা

দেশে বিভিন্ন এলাকায় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর, উপজেলা চেয়ারম্যানসহ জনপ্রতিনিধিরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। নিজেদের অপকর্ম আড়াল করতে গিয়ে তারা চরাও হচ্ছেন গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর। গণমাধ্যমকর্মীরা জনপ্রতিনিধিদের অপকর্মের চিত্র ধারণ করতে গিয়ে কখনো প্রতিবেদন তৈরি করতে গিয়ে নানাভাবে তাদের রোশানলে পড়ছে। পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হামলা ও মামলার শিকার হচ্ছেন গণমাধ্যমকর্মীরা। অধিকাংশ ক্ষেত্রে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সামনে হামলা করা হয় গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর। ভেঙে ফেলা হয় ক্যামেরা। রাজনীতি ও প্রশাসনের নীরবতায় এরা দাবড়ে বেড়াচ্ছেন। গণমাধ্যমকর্মীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী।

কিছুদিন আগে বরিশাল সিটি করপোরেশনের এক কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে এক নারী মামলা দায়ের করলে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত ওই কাউন্সিলরের ছবি তুযলতে গিয়ে হুমকীর শিকার হন গণমাধ্যমকর্মীরা। বরিশাল নদী বন্দরে যাত্রীদের মারধরের চিত্র ধারণ করতে গিয়ে হামলার শিকার হন দুই গণমাধ্যমকর্মী। হামলায় ক্যামেরা ভেঙে ফেলাও হয়। হামলাকারীর বিরুদ্ধে মামলা করলেও পুলিশের নীরবতায় আইনী সহযোগিতা পাননি গণমাধ্যমকর্মীরা। এর রেশ যেতে না যেতে দিনাজপুরে এক ইউপি নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের প্রতিবেদন করতে গিয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থীর সন্ত্রাসী বাহিনীর হাতে লাঞ্ছিত হন গণমাধ্যমকর্মীরা। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যদের অনেকটা নির্বিকার থাকতে দেখা গেছে।

গতকাল বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালত চত্ব¡রে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আইনজীবী সহকারী ও এক ইউপি চেয়ারম্যানের ভাড়াটে বাহিনীর হাতে বেশ কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী হামলার শিকার হয়েছেন। কোন এক মামলায় বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার দাড়িয়াল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলামসহ ৫ জনকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন আদালত। সেই চিত্র ধারণ ও তথ্য সংগ্রহে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে আইনজীবী সহকারী ও চেয়ারম্যানের ভাড়াটে লোকজন হামলা চালায় গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর। 

সারা দেশে সংঘটিত ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, কোথাও একটি ঘটনাও এমন নয় যে চেয়ারম্যান, কাউন্সিলর কিংবা জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কোন ব্যক্তিগত শত্রুতা ছিল না। গণমাধ্যমকর্মীরা কেবল তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন। যেখানেই হামলার শিকার হয়েছেন গণমাধ্যম কর্মীরা সেখানেই পুলিশকে নির্বিকার ভূমিকায় দেখা গেছে। এমনভাবে চলতে থাকলে ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। দেশের যেসব এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকা-ের সঙ্গে চেয়ারম্যান ও জনপ্রতিনিধিরা যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে আইনের আশ্রয় নিতে গিয়েও হয়রানীর শিকার হচ্ছেন গণমাধ্যমকর্মীরা।  সময় থাকতে চিহ্নিত ইউপি চেয়ারম্যান, কাউন্সিলর, উপজেলা চেয়ারম্যানসহ জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। তা না হলে এর দায় সরকারের ওপরই বর্তাবে।