ভান্ডারিয়ায় উৎসব মূখর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

ভান্ডারিয়ায় উৎসব মূখর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

করোনা পরিস্থিতিতে প্রায় ১৮ মাস বন্ধ থাকার পর সচল হয়েছে উপজেলার সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ১৬৪ টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩৮ টি, মাদরাসা ৩৮টি এবং কলেজ রয়েছে ৮ টি। ইউনিফর্ম পড়ে, কাঁদে  বই-খাতার ব্যাগ ঝুলিয়ে দলে দলে শিক্ষার্থীরা ফিরেছে তাদের প্রিয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে আছে ভয়, আশঙ্কা। এর মধ্যেও রবিবার সকালে শিক্ষার্থীদের  উৎসব মূখর পরিবেশে স্ব-স্ব বিদ্যালয় চলছে কুশল বিনিময়। প্রিয় ক্যাম্পাসে ফিরতে পেরে খুশি শিক্ষার্থীরা। প্রিয় শিক্ষক-প্রিয় বন্ধু-সহপাঠীদের পেয়ে কিছুতেই থামছে না আনন্দের উচ্ছ্বাস।

গত দেড় বছরে প্রাথমিকের অনেক হতদরিদ্র শিক্ষার্থী পরিবারের স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনার জন্য বিভিন্ন কাজে যোগ দিয়েছে। তাদের আনেকর আর ফেরা হবেনা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। মাধ্যমিক স্থরের অনেক শিক্ষার্থীর এরই মধ্যে বিয়ে হয়ে গেছে। সংসারের পাশাপাশি তারা আবারও শ্রেণিকক্ষে বসবে এমন ভাবনা নেই অধিকাংশের মধ্যে। ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও হয়তো অনেক শিক্ষার্থীর দেখা মিলবে না শ্রেণিকক্ষে।
উপজেলা স্কাউট সম্পাদক মোঃ শফিকুল ইসলাম আজাদ বলেন অবশ্যই আমাদের সকলের  যথাযথভাবে দায়িত্বশীল  আচরনের মাধ্যমে শোষিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার রোডম্যাপ অনুসরণ করতে হবে।  

উপজেলার পৌরশহরের ভান্ডারিয়া বিহারী লাল মিত্র মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও সরকারি বন্দর বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাস্ক পরে স্কুলে আসতে দেখা যায়। প্রথম দিন সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো উৎসব-আয়োজনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানে বরণ করে শিক্ষার্থীদের। এসময় স্কুলগুলোর ফটকে শিক্ষার্থীদের তাপমাত্রা মেপে প্রবেশ করানো হচ্ছে। তাদেরকে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। ফটকে স্কুলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে শিক্ষকদেরও অবস্থান করতে দেখা গেছে।


ভান্ডারিয়া বিহারী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনির ছাত্র মুনতাসির বীন মামুন জানান, দীর্ঘ সময়ে পর বিদ্যালয়ে এসে ভালো লাগছে। অনেকদিন পর সহপাটিদের এবং শিক্ষকদের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। বাসায় এতদিন আলশ ও এ্যাসাইন্টমেন্ট লিখে জমাদিয়ে পার করতে হয়েছে সময়টা। ঠিকমতো পড়াশোনা হয়নি। এখন পড়াশোনায় ফিরতে পারবো।


ভান্ডারিয়া বিহারী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, আজ আমরা উচ্ছ্বসিত, শিক্ষার্থী ছাড়া আমাদের আমাদের জীবন অর্থহীন। শিক্ষার্থীদের আসায় বিদ্যালয়টি প্রাণচঞ্চল ফিরে পেয়েছে। সরকারে ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমার বিদ্যালয় পরিচালনা করব। 

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম জানান, আমি বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেছি। সবখানেই দেখেছি সরকারি বিধি নিষেধ মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা হচ্ছে। সকল শিক্ষার্থী স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামজিক দুরত্ব বজায় রেখে মুখে মাস্ক পরে শ্রেণিকক্ষে ক্লাশ করছে। 

এদিকে ভান্ডারিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মিরাজুল ইসলামের প্রতিষ্ঠিত সামাজিক সংগঠন মিরাজুল ইসলাম ওয়েল ফেয়ার ফাউন্ডেশনের উদ্দ্যোগে উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফ্রি মাস্ক বিতরণ করে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে করোনা শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ। ভাইরাসের বিস্তার রোধে সে বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। পরে তা দফায় দফায় সময় বেড়ে এ পর্যন্ত এসেছে। এ সময় শ্রেণিকক্ষে পাঠদান বন্ধ থাকলেও অনলাইনে ক্লাস চালু করা হয়েছিল।