ভারতে বাংলাদেশিকে পিটিয়ে হত্যা

ভারতে বাংলাদেশিকে পিটিয়ে হত্যা

ভারতের ত্রিপুরায় বাংলাদেশি এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার দুই দিন পর ডালিম মিয়া (৩০) নামে ওই বাংলাদেশি যুবকের লাশ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে ভারতীয় পুলিশ। নিহত বাংলাদেশি যুবক কসবা উপজেলার মাদলা গ্রামের মোহন মিয়ার ছেলে।

সোমবার রাত ১১টার দিকে আখাউড়া চেকপোস্ট দিয়ে ত্রিপুরা রাজ্যের সিপাহিজলা জেলার টাকারজলা থানার ওসি দেবানন্দ রিয়াং আখাউড়া থানার ওসি মিজানুর রহমানের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করেছেন। এসময় দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি-বিএসএফের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে একই গ্রামের জহিরুল ইসলাম নামে এক যুবক গুরুতর আহত অবস্থায় আগরতলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

জানা গেছে, কসবা উপজেলার মাদলা গ্রামের মোহন মিয়ার ছেলে ডালিম মিয়া, হানিফ মিয়ার ছেলে জহিরুল (৩০), সেলিম মিয়ার ছেলে সাইফুল ইসলাম (৩০) ও কসবার কোল্লাপাথর গ্রামের শাহ আলমের ছেলে হৃদয় মিয়াসহ (২৬) কয়েকজন বাংলাদেশি শুক্রবার রাতে কসবা সীমান্তপথে অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করে।

 

আখাউড়া সীমান্তের শূন্য রেখায় ত্রিপুরার টাকারজলা থানার ওসি দেবানন্দ রিয়াং সাংবাদিকদের বলেন, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সিপাহিজলা জেলার টাকারজলা থানাধীন গোলাঘাটি গ্রামের একটি বিদ্যালয় থেকে শনিবার সকালে এক শিক্ষকের মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছিলেন কয়েকজন যুবক। এসময় সেখানকার সাধারণ নাগরিকরা তাদের চোর সন্দেহ করে ধাওয়া করে ডালিমকে ধরে ফেলে। পরে ঘটনাস্থলে পিটিয়ে তাকে হত্যা করে। এ ঘটনায় জহিরুল ইসলাম নামে অপর এক বাংলাদেশি যুবক গণপিটুনিতে গুরুতর আহত হয়। অন্যরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। পরে জহিরুলকে ভারতীয় নাগরিকদের কাছ থেকে টাকারজলা থানা পুলিশ উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।

তবে নিহত ডালিমের বাবা মোহন মিয়া জানান, মাদলা গ্রামের হানিফ মিয়ার ছেলে হাবিবুর রহমান শিমুল (৩৫) কয়েকদিন পূর্ব থেকেই ভারতে অবস্থান করছিলেন। শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে শিমুলের ভাই জহিরুলসহ অন্যরা ডালিমকে ভারতে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে।

মোহন মিয়া আরও জানান, শিমুলের স্ত্রীর সঙ্গে ডালিমের পরকীয়া চলছিল। পারিবারিকভাবে বিষয়টি সম্প্রতি মীমাংসা হলেও পরকীয়ার জের ধরেই শিমুল ও তার লোকজন ডালিমকে হত্যা করে।

আখাউড়া স্থলবন্দর চেকপোস্ট বিজিবি ক্যাম্প ইনচার্জ মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ডালিমকে কেন এবং কে বা কারা পিটিয়ে হত্যা করেছে, তা জানাতে পারেনি বিএসএফ। ত্রিপুরার পুলিশের কাছ থেকে আখাউড়া থানা পুলিশ সোমবার রাত ১১টায় ওই লাশ গ্রহণ করেন।

আখাউড়া থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, যেহেতু হত্যাকাণ্ড ভারতে ঘটেছে। সুতরাং ভুক্তভোগী পরিবার এ বিষয়ে বিচার চাইলে ভারতের আদালতে আইনি লড়াই চালিয়ে যেতে পারেন। এ ঘটনায় ত্রিপুরার স্থানীয় থানায় একটি মামলা করা হয়েছে।