ভোট ডাকাতির দায়, গণতন্ত্র হত্যার দায় শেখ হাসিনাকে নিতে হবে

ভোট ডাকাতির দায়, গণতন্ত্র হত্যার দায় শেখ হাসিনাকে নিতে হবে। ভোট চুরি করা শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। ভারতের পৃষ্ঠপোষকতায় ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ সরকার বিচার বিভাগকে প্রভাবিত করে তত্তাবধায়ক সরকার বাতিল করেছে। গণআন্দোণ করে তত্তাবধায়ক সরকার পুনপ্রতিষ্ঠা করতে হবে।
দেশব্যাপী নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে বিগত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি মেয়র প্রার্থীদের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন বক্তারা।
বৃহষ্পতিবার বিকেল ৩টায় বরিশাল জেলা স্কুল মাঠে ওই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ও বরিশাল মহানগর বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেে প্রধান অতিথি ছিলেন, দলের ভাইচ চেয়ারম্যান হাফিজউদ্দিন আহম্মেদ (বীরবিক্রম)।
বিএনপির ভাইচ চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ (বীরবিক্রম) বলেন, ১৯৭১ সালে আমরা কেন যুদ্ধ করেছিলাম? এই ভোট ডাকাতির বাংলাদেশ দেখার জন্য? এই সরকার ধ্বংসের শেষ পর্যায়ে পৌছে গেছে। তাদের আর কিছুই দেওয়ার নাই। শেখ হাসিনার সরকার পৃথিবীতে নিকৃষ্ট সরকার। আজকের যারা বিএনপি থেকে মেয়র প্রার্থী হয়েছিলেন তারা অত্যন্ত জনপ্রিয়। তারা হচ্ছেন জনতার মেয়র। ভোট ডাকাতি করে তাদের হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাই সারা দেশে বিএনপির মেয়র প্রার্থীদের নিয়ে ভোট ডাকাতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলতেই আজকের এই সমাবেশ।
নেতাকর্মীদেগর উদ্দেশ্যে হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, আপনারা নিজেরা নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব করছেন। আমাদের মঞ্চে আগুন জ¦ালানোর দরকার নাই। রাজপথে আন্দোলন গড়ে তুলুন। দলের নেতা-কর্মীরা শহীদ রাস্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শ ধারণ করে কিনা সেটা জিজ্ঞেস করুন। আমরা ভোট ডাকাতির সরকারের পতন দেখতে চাই।
এদিকে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে দলীয় দুই পক্ষের কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি ও হট্টোগোল বাধে। এক পর্যায়ে চেয়ার ছোড়াছুড়ি ও ভাঙচুর করে তারা। এসময় সমাবেশ আসা সাধারণ নেতা-কর্মীরা দৌড়াদৌ শুরু করে দেয়। এঘটনায় সমাবেশের স্বাবিক কার্যক্রম বিঘিœত হয়। পরবর্তী সময় স্থানীয় ও জাতীয় নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
সমাবেশে খুলনার মেয়র প্রার্থী দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা মহানগরের সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, শেখ হাসিনার নির্বাচনী ব্যবস্থা হচ্ছে ভোট ডাকাতির নির্বাচন। শেখ হাসিনা পাল্টালে দেশ পাল্টাবে। শেখ হাসিনার অধীনে বাংলাদেশে কোন সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। শেখ হাসিনার অধীনে বিএনপির আর নির্বাচনে যাওয়ার প্রয়োজন নাই। আমরা শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটিয়ে তত্তাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করবো।
রাজশাহীর মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুবলবুল বলেন, নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করতে এই সমাবেশ। ভোট চুরির বিরুদ্ধে, নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার দাবির এই সমাবেশ। কিন্তু আপনারাই যদি মল্লযুদ্ধ করেন, তাহলে হবে? শ্লোগান দিতে হলে সরকারের বিরুদ্ধে দিন। শেখ হাসিনার গতিতে আগুন জ¦ালান। আমরা মধ্য রাতের ভোট দেখতে চাই না। ভোটের দাবিতে আমাদের নির্বাচন কমিশন অভিমূখে পদযাত্রা করতে হবে।
চট্টগ্রামের মেয়র প্রার্থী ড. শাহদাত হোসেন বলেন, শেখ হাসিনা চোর, ইভিএম মেশিন চোর। এই চোরের অধীন কোন নির্বাচন ষুষ্ঠু হতে পারে না। তাই নির্দলীয় তত্তাবধায়ক সরকারে অধীন নির্বাচন চাই। সেই অধিকার আদায় করেই ছাড়বো।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী তাবিথ আউয়াল বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার প্রশাসনের ওপর নির্ভর হয়ে পড়ছে। এই সরকার কোন নির্বাচন হতে দিচ্ছে না। তারা ভোটারদের ভোট দিতে দিচ্ছে না। হত্যা, ধর্ষণ, দুর্নীতির এবং বুলেটের জবাব ব্যালটে দিতে হবে। সেই জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করতে হবে। ভোট চোর, নারী নির্যাতনকারী ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।
মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জিয়াউদ্দিন সিকদারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত বিভাগীয় সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, দলের চেয়ারম্যানখালেদা জিয়ার উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড বিলকিস জাহান শিরিণ, বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান, সাবেক সাংসদ মেজবাহউদ্দিন ফরহাদ, আবুল হোসেন খান, বরিশাল জেলা দক্ষিণ বিএনপি সভাপতি এবায়দুল হক চাঁনসহ বরিশাল বিভাগর ৬ জেলার নেতারা।