মিয়ানমারের দুঃখ প্রকাশ

মিয়ানমারের দুঃখ প্রকাশ

গত দু মাস ধরে মিয়ানমারের রাখাইনে চলমান সহিংস ঘটনায় বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও মিয়ানমার বর্ডার গার্ড (বিজিপি) প্রথমবারের পতাকা বৈঠক শেষ হয়েছে।

পতাকা বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রেস ব্রিফিংয়ে টেকনাফ ২ নম্বর বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার বলেন, ‘পতাকা বৈঠকে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায় উদ্ভূত পরিস্থিতি ছাড়া অবৈধভাবে মিয়ানমার নাগরিকদের অনুপ্রবেশ ও মাদক পাচার রোধ সম্পর্কে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। দুটি বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রের সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগে আস্থা এবং নির্ভরতার পরিবেশ তৈরির জন্য ভবিষ্যতে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে’।

শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার আরও বলেন, গত দু মাস ধরে মিয়ানমারে অভ্যন্তরে চলমান ঘটনায় সীমান্ত এলাকা দিয়ে মিয়ানমার নিরাপত্তা বাহিনীর হেলিকপ্টার উড্ডয়ন, সীমান্ত এলাকায় ক্ষুদ্রাস্ত্র এবং ভারী অস্ত্রের ফায়ারিং, জানমালের ক্ষয়ক্ষতি বিষয়ে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের প্রধান তীব্র প্রতিবাদ জানান। সীমান্তে শান্তিপূর্ণ অবস্থান বজায় রাখা, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের ফলে চলমান সংঘাতের জের ধরে যাতে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কোনো গোলা পতিত না হয় সে ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখার বিষয়ে বিজিপিকে আহ্বান জানানো হয়। এ ছাড়া প্রতিবেশী সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে বিজিবি আশা করে যে মিয়ানমারের চলমান অভ্যন্তরীণ সংকট শিগগিরই সমাধান হবে এবং সীমান্তে চলমান বর্তমান উদ্ভূত পরিস্থিতি দ্রুত নিরসন হবে। বিজিবি, বিজিপির নিকট সব সময় সীমান্ত ব্যবস্থাপনা এবং সীমান্তে স্থিতিশীলতা রাখার জন্য দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের প্রত্যাশা করে। বিজিপি ব্যাটালিয়ন কমান্ডার সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, উক্ত পতাকা বৈঠকে সীমান্তবর্তী জনসাধারণের নিরাপত্তা এবং সীমান্তে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রেখে উভয় দেশের অধিনায়ক এক সঙ্গে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। পরিশেষে পারস্পরিক বিদায়ী শুভেচ্ছা জ্ঞাপনের মাধ্যমে অত্যন্ত শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে পতাকা বৈঠক শেষ হয়।

রোববার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বিজিবি-বিজিপি পতাকা বৈঠক শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব বলেন টেকনাফ ২ নম্বর বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার।

প্রেস ব্রিফিংয়ে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, রামু সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মোহাম্মদ আজিজুর রউফ, কক্সবাজারের গ্রুপ কমান্ডার লে. কর্নেল আহমদ তারিক কবির, অপস অফিসার মেজর মুতাসিম শাকিল বিল্লাহ।

এর আগে সকাল সাড়ে ৯টায় নাফ নদ সংলগ্ন সীমান্তে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপে বিজিবির নির্মিত সাউদার্ন পয়েন্ট রিসোর্টের সম্মেলন কক্ষে দু’দেশের প্রতিনিধি দলের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

মিয়ানমার থেকে দুটি স্পিডবোটে করে মিয়ানমারের প্রতিনিধি দল টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ জেটি ঘাটে পৌঁছান। সকাল ১০টায় শুরু হওয়া পতাকা বৈঠকে টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়কের নেতৃত্বে নয় সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল এবং মিয়ানমার মংডুর ১ নম্বর বর্ডার গার্ড পুলিশ ব্রাঞ্চের কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল কাও না ইয়ান শোর নেতৃত্বে সাত সদস্যের প্রতিনিধি দল পতাকা বৈঠকে অংশ নেয়।