যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত-মার্কিন নাগরিক গ্রেফতার

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত-মার্কিন নাগরিক গ্রেফতার
যুক্তরাষ্ট্রের জন.এফ ক্যানেডি বিমানবন্দর হতে থাইল্যান্ডগামী এক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিককে গ্রেফতার করেছে দেশটির বিশেষ তদন্তকারী সংস্থা এফবিআই (ফেডারেল ব্যুর অব ইনভেস্টিগেশন)। শনিবার (২৭ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বার্তা সংস্থা সিবিএস নিউজ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের তথ্য মতে জানা যায়, শুক্রবার (২৬ জুলাই) আফগানিস্তানের সশস্ত্র জঙ্গি সংগঠন তালেবানে যোগদানের লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করছিলো দেলোয়ার মোহাম্মদ হোসাইন নামে ৩৩ বছর বয়সী ওই বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক। তার পরিকল্পনার ব্যাপারে সংস্থাটি জানায়, হোসাইন প্রথমে যুক্তরাষ্ট্র থেকে থাইল্যান্ড ও পরে সেখান থেকে সরাসরি আফগানিস্তানে প্রবেশের পরিকল্পনা নিয়েছিলো। শুক্রবার (২৬ জুলাই) স্থানীয় সময় সকালে নিউ ইয়র্কের কেনেডি বিমানবন্দর এলাকা থেকে কে গ্রেফতার করা হয়। এর একদিন পর (শনিবার, ২৭ জুলাই) স্থানীয় সময় বিকেলে তাকে ম্যানহাটনের একটি ফেডারেল আদালতে তোলা হয়। এ সময় তাকে জামিন না দিয়ে আটক রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। পরে দেলোয়ারের বিচার কার্যক্রম পরিচালনায় নিযুক্ত মার্কিন অ্যাটর্নি ফর দ্য সাউদারন ডিসট্রিক্ট অব নিউ ইয়র্ক, জিওফ্রে এস বারম্যান বলেন, 'এফবিআই এবং এনওয়াইপিডি দুর্দান্ত কাজ করেছে। বেশ অনেক দিন ধরেই তারা দেলোয়ারের সন্দেহজনক গতিবিধির প্রতি নজর রেখে আসছিলো কিন্তু তাকে হাতেনাতে ধরার মত অবস্থা সৃষতি না হওয়ায় সেটা করা যায়নি। তবে শেষ মুহূর্তে ঠিক দেশত্যাগের আগেই তাকে আটক করা গেছে।' ক্স দেলোয়ার হোসাইন যুক্তরাষ্ট্র থেকে থাইল্যান্ড ও সেখান থেকে সরাসরি পাকিস্তানে যাওয়ার জন্য এফবিআইয়ের একটি গোপনীয় উৎসে যোগাযোগ করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী তিনি পাকিস্তান থেকে সীমান্ত অতিক্রম করে প্রতিবেশী আফগানিস্তানে প্রবেশ করতে চেয়েছিলেন ক্স এদিকে আদালতে এফবিআই-এর উত্থাপিত নথি অনুযায়ী প্রকাশিত সংবাদে বলা, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকেই তালেবানে যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা করে আসছিলো বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এ মার্কিন নাগরিক। যে কারণে এফবিআই তাকে নিয়মিত নজরদারির মধ্যে রেখেছিলো। পরে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগটি প্রমাণের জন্য এফবিআই-এর এক এজেন্টকে তালেবানে যোগদানের ক্ষেত্রে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে উপস্থাপন করলে, সংস্থাটির পাতা এই ফাঁদে পা বাড়ান দেলোয়ার। অবশেষে উপযুক্ত তথ্য প্রমাণের সাপেক্ষেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এমনটাই দাবি মার্কিন এই তদন্তকারী সংস্থাটির। জানা যায়, তার বিরুদ্ধে আনা এই অভিযোগ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ ১৫ বছরের কারাদ- হতে পারে তার। এফবিআই কর্মকর্তাদের দাবি, দেলোয়ার হোসাইন যুক্তরাষ্ট্র থেকে থাইল্যান্ড ও সেখান থেকে সরাসরি পাকিস্তানে যাওয়ার জন্য এফবিআইয়ের একটি গোপনীয় উৎসে যোগাযোগ করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী তিনি পাকিস্তান থেকে সীমান্ত অতিক্রম করে প্রতিবেশী আফগানিস্তানে প্রবেশ করতে চেয়েছিলেন। এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তিনি এফবিআইয়ের ঐ ছদ্মবেশী এজেন্টের সঙ্গে দেখাও করেন; সেখানে দেলোয়ার নিজের ইচ্ছার কথা প্রকাশ করেন। ছদ্মবেশী এজেন্টকে তিনি বলেছিলেন, 'মৃত্যুর আগে আমি কিছু কাফেরকে হত্যা করতে চাই।' বিশ্লেষকদের মতে, উগ্রপন্থী জঙ্গি তৎপরতায় অংশগ্রহণের একাধিক ঘটনায় সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে দেলোয়ারের বিরুদ্ধে। এর আগে ২০১১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৮০ জনের মতো মার্কিন নাগরিক জিহাদি সংগঠনগুলোর হয়ে লড়াই করতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সফর করেছেন। যাদের মধ্যে বেশিরভাগই ইরাক-সিরিয়াভিত্তিক সশস্ত্র জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট 'আইএস' কিংবা 'আল-কায়েদা'র হয়ে যুদ্ধ করতে মধ্যপ্রাচ্যে সফর করেন। মার্কিন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থাটি জানায়, আটককৃত ব্যক্তিটির বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি অভিযোগ রয়েছে। যার মধ্যে তিনি জঙ্গি সংগঠন তালিবানের হয়ে মার্কিন বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য বিদেশ ভ্রমণে চেষ্টা করছিলেন বলে জানা যায়। জঙ্গি সম্পৃক্ততায় অভিযুক্ত দেলোয়ার, নিউ ইয়র্কের ব্রোনকস এলাকার বাসিন্দা। মার্কিন নাগরিক হলেও তিনি মূলত একজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত। তার বিরুদ্ধে এরই মধ্যে সন্ত্রাসবাদে বস্তুগত সহায়তা প্রদানের প্রচেষ্টাসহ নানা অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রশাসনের দাবি, গত শুক্রবার থাইল্যান্ডগামী একটি ফ্লাইটের মাধ্যমে প্রথমে থাইল্যান্ড ওপরে সেখান থেকে পাকিস্তান হয়ে নিজের চূড়ান্ত গন্তব্য আফগানিস্তানে পৌঁছানোর লক্ষ্য ছিল তার। সেখানে তিনি তালিবানের হয়ে মার্কিন সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র লড়াইয়ে অংশ নিতে চেয়েছিলেন। সিবিএস নিউজ এসকে