রাষ্ট্র তথা জনগণের সম্পদ সঠিকভাবে ব্যবহার করা প্রয়োজন -আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

রাষ্ট্র তথা জনগণের সম্পদ সঠিকভাবে ব্যবহার করা প্রয়োজন -আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

জাতীয় পার্টি-জেপি'র চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এমপি বলেছেন, উন্নয়ন কাজে যে সম্পদ ব্যবহৃত হয় তা সরকার, রাষ্ট্র তথা জনগণের সম্পদ। এই সম্পদের সদ্ব্যবহার তথা অপচায় রোধ করতে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সব ধরণের দুর্নীতি, অপচয়, আত্মসাতের বিরম্নদ্ধে জনগণের মধ্যে প্রতিরোধ গড়ার মানসিকতা সৃষ্টি করতে হবে। কাজ সঠিকভাবে করতে ঈমান মজবুত করা প্রয়োজন। 

তিনি গতকাল বুধবার রাতে পিরোজপুরের ভা-ারিয়া উপজেলার গৌরীপুর ইউনিয়নের মালিয়ার হাটে স্থানীয় জনসাধারণের সাথে এক মতবিনিময় সভায় আরও বলেন, আমাদের রাজনীতি খুবই সহজ। আমাদের উপর আলস্নাহর রহমত আছে বলে বিগত ৩৭ বছর ধরে আমরা লাগাতারভাবে ভা-ারিয়াসহ এ এলাকার সাধারণ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের প্রচেষ্টায় ব্যাপৃত রয়েছি। এর মধ্যে ১৮ বছরই বিভিন্ন সরকারের মন্ত্রী সভায় দায়িত্ব পালনে সÿম হয়েছি। এ সময় কালে আমরা এলাকায় বিভাজনের রাজনীতি করিনি। উপমহাদেশের যে সাম্প্রদায়িক বিভাজনের রাজনীতি জিন্নাহ সাহেব শুরম্ন করেছিলেন তা থেকে আমরা এ অঞ্চলের মানুষ মুক্ত থাকতে সক্ষম হয়েছি। জিন্নাহ সাহেব যখন ভারত বিভাজনের কথা বলেছেন, তখন বলতেন হিন্দু-মুসলমানের জন্য পৃথক রাজনীতি, পৃথক দেশ। পাকিস্ত্মান সৃষ্টি পর তিনি আবার বললেন, আমরা হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান আলাদা নই, আমরা সবাই পাকিস্ত্মানী। তার এই বক্তব্য এক কথায় স্ববিরোধী বা মোনাফিকি। 

আনোয়ার হোসেন মঞ্জু আরও বলেন, আমরা কিভাবে এলাকায় কাজ করার চেষ্টা করেছি তা আপনারা মূল্যায়ন করবেন। আমাদের এক থাকতে হবে। শোষণ-বঞ্চনা থেকে মানুষকে রক্ষা করতে হবে, তাদের মুক্ত করতে হবে। আমি যখন প্রথম এ অঞ্চলে আসি তখন ঢাকায় বসে সচিবরা বলতেন আপনাদের জন্য আলস্নাহ নৌকায় চড়ার ব্যবস্থা রেখেছেন। রাস্ত্মা-ঘাট, পুল-কালভার্ট করার সুযোগ আপনাদের অঞ্চলে নাই। এই দীর্ঘ তিন যুগে আমরা এটা প্রমাণ করেছি এ অঞ্চলের রাস্ত্মা-ঘাট হয়, বড়-বড় সেতু করা যায়, গাড়ী চড়ে উপজেলা থেকে জেলায়, জেলা থেকে বিভাগে, রাজধানীতে দ্রম্নততম সময় যাওয়া-আসা করা যায়। 

তিনি আরও বলেন, আমরা দুই ধরণের সরকারের সাথে কাজ করেছি। এক ধরণের সরকার স্বৈরাচারী, আরেক ধরণের সরকার গণতান্ত্রিক। এ দুই ধরণের সরকারের সুকৌশল গুলো কাজে লাগিয়ে মানুষের কল্যাণ করার লক্ষ পূরণ করতে সক্ষম হয়েছি। উন্নয়নশীল দেশ ও উন্নত দেশের মধ্যে যে পার্থক্য তা আমাদের উপলব্ধি করতে হবে। উন্নয়নশীল দেশে জনগণকে দায়িত্ব নিতে হয়। এ দেশকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে হলে জনগণকে সচেতন থাকতে হবে, ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। স্থানীয় পর্যায়ে চেয়ারম্যান ও মেম্বরদের দায়িত্ব রয়েছে। এ দেশ যদি কোরআন ও সুন্নাহ মাফিক চলতো, তাহলে অনেক ত্রম্নটি ঠিক হয়ে যেত। শরিয়াতি আইনে যে হাত-পা কাটার বিধান রয়েছে তা বলবৎ হলে দুর্নীতিবাজরা অন্যায় করতে সাহস পেত না। আমরা যে স্বাধীনতা অর্জন করেছি এটা একটি সুযোগ। এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে হবে। মানুষকে শোষন-বঞ্চনা থেকে মুক্ত করতে হলে তাদের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটাতে হবে। এই জন্য দ্বন্দ্ব-সংঘাত, কাইজ্যা, বিভাজনের রাজনীতি পরিহার করা প্রয়োজন। আমাদের ভালভাবে বাচঁতে হলে ঐক্যবদ্ধভাবে বসবাস করা বাঞ্চনীয়। 

গৌরীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা জাতীয় পার্টি-জেপি'র সহ সভাপতি মো. মুজিবুর রহমান চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ মতবিনিময় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, ভা-ারিয়া উপজেলা জেপি'র সিনিয়র সহ সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মাহিবুল হোসেন মাহিম, উপজেলা জেপি'র সিনিয়র সহ সভাপতি ও পৌর কাউন্সিলর গোলাম সরওয়ার জোমাদ্দার, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আতিকুল ইসলাম তালুকদার উজ্জল, যুব সংহতির উপজেলা সদস্য সচিব মামুনুর রশীদ সরদার, অধ্যÿ মো. কামরম্নজ্জামান, মাস্টার আবু বকর সিদ্দিক প্রমুখ। 

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেপি'র উপজেলা সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম খোকন সিকদার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার হোসেন দুলাল মলিস্নক, দপ্তর সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন বাবুল, সদস্য রেজা আহমেদ দুলাল, জেপি নেতা আহসানুল কিবরিয়া ফরিদ মলিস্নক, যুব সংহতির উপজেলা আহ্বায়ক রেজাউল হক রেজভি জোমাদ্দার, স্বেচ্ছাসেবক পার্টির উপজেলা সভাপতি মুনির সরদার, ছাত্র সমাজের নেতা মেহেদী হাসান রাজু, মাহবুব শরীফ শুভ প্রমুখ।