রেলের ১০ ইঞ্জিন কেনায় দুর্নীতির সত্যতা পেয়েছে

বাংলাদেশ রেলওয়ের বহরে যুক্ত হওয়া ১০টি মিটারগেজ লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) কেনায় দুর্নীতি ও অনিয়ম সংক্রান্ত অভিযোগ যাচাইয়ে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার রেল ভবনে দুদকের সহকারী পরিচালক জেসমিন আক্তার ও উপ-সহকারী পরিচালক মো. কামিয়াব আফতাহি-উন-নবীর সমন্বয়ে গঠিত এনফোর্সমেন্ট টিম এ অভিযান চালায়। অভিযানে ইঞ্জিন কেনায় অনিয়মের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, রেলওয়েকে ইঞ্জিনগুলো সরবরাহ করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার হুন্দাই রোটেম কোম্পানি। দাম ছিল ৩২২ কোটি ৬৮ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। এরইমধ্যে ৯০ শতাংশ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। চুক্তিতে তিন হাজার হর্সপাওয়ারের ইঞ্জিন দেওয়ার কথা থাকলেও দুই হাজার হর্সপাওয়ারের ইঞ্জিন দেওয়া হয়েছে এমন অভিযোগেরও সত্যতা পেয়েছে দুদক।
এ ছাড়া আরও কিছু অনিয়মের সত্যতা খুঁজে পেয়েছে টিম। অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা (উপপরিচালক) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক।
দুদক সূত্র জানা যায়, বাংলাদেশ রেলওয়ের বহরে যুক্ত হওয়া ১০টি মিটার গেজ লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) কেনায় দুর্নীতি ও অনিয়ম সংক্রান্ত অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযানকালে টিম সচিব ও মহাপরিচালকসহ প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে। রেলের ইঞ্জিন কেনার জন্য ২০১৫ সালে ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য লোকোমোটিভ রিলিফ ক্রেন ও লোকোমোটিভ সিমুলেটর সংগ্রহ’ শীর্ষক একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়।
প্রকল্পের মেয়াদ দুই দফায় বাড়িয়ে জুন, ২০২২ পর্যন্ত করা হয়।
রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে দুদক কর্মকর্তারা জানতে পারেন, ইঞ্জিনগুলোতে তিনটি ক্যাপিটাল কম্পোনেন্টের ভিন্নতা আছে, যা চুক্তি বহির্ভূত। চুক্তিতে তিন হাজার হর্স পাওয়ারের ইঞ্জিন দেওয়ার কথা থাকলেও দুই হাজার হর্স পাওয়ার ইঞ্জিন দেওয়া হয়েছে। টিএ-১২ মডেলের অল্টারনেটরের পরিবর্তে টিএ-৯ মডেল যুক্ত করা হয়েছে। তা ছাড়া ২৯০৯-৯ মডেলের পরিবর্তে ২৯০৯ মডেল দেওয়া হয়েছে।
দুদকের এক কর্মকর্তা বলেন, রেলওয়েকে ইঞ্জিনগুলো সরবরাহ করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার হুন্দাই রোটেম কোম্পানি। দাম ছিল ৩২২ কোটি ৬৮ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। এরইমধ্যে ৯০ শতাংশ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। সরকারের একটি সংস্থার প্রতিবেদন সূত্রে ওই অনিয়মের বিষয়টি সামনে আসে। অভিযোগের তীর রেলওয়ের তখনকার মহাপরিচালক মো. শামছুজ্জামান, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (আরএস) মো. মঞ্জুর-উল-আলম চৌধুরী এবং ঠিকাদার আফসার বিশ্বাসের দিকে। অভিযোগহগুলো আরো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।