লিজ ট্রাস যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী

ঋষি সুনাককে বিপুল ব্যবধানে হারিয়ে যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন লিজ ট্রাস। সোমবার ব্রিটিশ সময় বেলা সাড়ে ১১টায় (বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৫টায়) ঘোষণা করা হয়েছে যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রীর নাম।
সাধারণ ভোটারদের বদলে এবারের নতুন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে বেছে নিয়েছেন ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির ১ লাখ ৬০ হাজার সদস্য। সবশেষ ১১ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর (এডওয়ার্ড হিথের পর থেকে) মধ্যে সাধারণ নির্বাচনে জয়ী না হয়েই ডাউনিং স্ট্রিটে প্রবেশ করা ষষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী হলেন লিজ ট্রাস।
বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সরকারে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন ৪৭ বছর বয়সী লিজ ট্রাস। তার বাবা ছিলেন গণিতের শিক্ষক এবং মা নার্স। ট্রাস অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন, রাজনীতি এবং অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করেছেন।
এদিন ভোটের ফলাফল ঘোষণা করেন কনজারভেটিভ পার্টির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির (১৯২২ কমিটি) চেয়ারম্যান স্যার গ্রাহাম ব্র্যাডলি। তিনি জানান, এবারের নির্বাচনে ভোট পড়েছে প্রায় ৮২ দশমিক ৬ শতাংশ। এতে ৮১ হাজার ৩২৬টি ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন লিজ ট্রাস। আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনাক পেয়েছেন ৬০ হাজার ৩৯৯টি ভোট।
বিবিসি বলছে, আগামীকাল রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের সঙ্গে সাক্ষাতে সরকার গঠনের আমন্ত্রণ পাবেন লিজ ট্রাস। এরপর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন তিনি।
ক্ষমতাসীন দলের নেতা নির্বাচিত হওয়ার পর সম্মেলন কক্ষে উপস্থিত দলীয় নেতাদের অভিনন্দন জানান লিজ ট্রাস। সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে সদ্য বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের প্রশংসা করে তিনি বলেন, জনসন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন, ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন করেছেন, জনগণকে করোনার টিকা দিয়েছেন এবং বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিনকে পর্যদুস্ত করেছেন।
জ্বালানি বিল কয়েক গুণ বেড়ে অর্থনৈতিক সংকটে ধুঁকতে থাকা যুক্তরাজ্যের নাগরিকদের আশ্বাসের বাণী শুনিয়েছেন লিজ ট্রাস। কর কমানোর পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিকে সামনে এগিয়ে নিতে ‘বলিষ্ঠ পরিকল্পনা’ রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনেও আবার লেবার পার্টিকে হারিয়ে দেবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী হতে যাওয়া লিজ ট্রাসকে অভিনন্দন জানিয়েছেন লেবার পার্টির নেতা স্যার কিয়ের স্টারমার। তবে কানজারভেটিভ পার্টির এই এক যুগের শাসনমালে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে জনজীবনে যে সংকট দেখা দিয়েছে তার সমালোচনা করেছেন তিনি। স্যার কিয়ের স্টারমার বলেছেন, এখন দেশের যা প্রয়োজন তা শুধু লেবার পার্টিই দিতে পারে।
আরেক বিরোধী দল লিবারেল ডেমোক্রেট পার্টির নেতা এড ডেভি বলেছেন, বরিস জনসনের আমলে ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে যে ‘সংকট ও গোলমাল’ দেখা গেছে, লিজ ট্রাসের আমলেও তার ধারাবাহিকতা চলবে।