শীঘ্রই রেল সংযোগের আওতায় আসছে বরিশাল

বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নদী বেষ্টিত বরিশাল বিভাগের জনসাধারণকে রেল সুবিধার আওতায় আনতে একটি প্রকল্পের প্রস্তাব করেছিল রেলপথ মন্ত্রণালয়। ভাঙ্গা-বরিশাল রেলপথটি প্রস্তাবিত পদ্মা রেল লিংক, পাটুরিয়া-ফরিদপুর-ভাঙ্গা রেল লাইন এবং খুলনা-মংলা রেল লাইনের সাথে যুক্ত হবে। ফলে প্রথমবারের মতো বরিশালের সাথে দেশের অন্যান্য স্থানের রেল পথের যোগাযোগ নিশ্চিত হবে।
এজন্য ইতোমধ্যে বরিশাল বিভাগের নতুন রেল লাইনের ম্যাপ চূড়ান্ত করা হয়েছে। সম্প্রতি শুরু হয়েছে রেল লাইনের সার্ভের কাজ। ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে পায়রা বন্দর পর্যন্ত তিনটি বেসরকারী সার্ভে কোম্পানি তাদের জরিপ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। বেসরকারী সংস্থা ডেভেলপমেন্ট এন্ড সেফ গার্ড কনসালটেশন (ডিএসসি) নামের একটি প্রতিষ্ঠানের সুপারভাইজার মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে একটি সার্ভে টিম গত ৩ আগস্ট থেকে বরিশালের দপদপিয়া এলাকার কুমারখালি সুগন্ধা নদীর তীর থেকে সার্ভে কাজ শুরু করেছেন।
এ প্রকল্পের আওতায় ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে বরিশাল পর্যন্ত ব্রডগেজ রেল লাইন নির্মাণ এবং বরিশাল থেকে পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেল লাইনের সম্ভাব্যতা যাচাই চূড়ান্ত করা হয়েছে। প্রস্তাবিত ওই রেলপথে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার ওপর দিয়ে পটুয়াখালীর পায়রা বন্দর যাওয়ার রোড ম্যাপ চূড়ান্ত করেছে। দপদপিয়ার ভরতকাঠি এলাকায় বরিশালের আঞ্চলিক রেলওয়ে স্টেশন নির্মাণ করার লক্ষ্যে কাজ শুরু হচ্ছে। প্রাথমিক সার্ভে অনুযায়ী মাটি পরীক্ষার কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। পরবর্তীতে ম্যাপ অনুযায়ী জমি, ঘর-বাড়ি, স্থাপনা ও গাছপালার জরিপ কাজ শুরু করা হবে।
স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে সড়ক পথে ঢাকা থেকে বরিশালের দূরত্ব প্রায় আড়াইশ’ কিলোমিটার। প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে অধিকাংশ মানুষ ঢাকায় এসে তাদের প্রতিদিনের কাজকর্ম শেষে বাড়ি ফিরে যেতে পারবেন। নতুন রেল লাইন নির্মাণ করা হলে পদ্মা সেতুর মাধ্যমে ঢাকা থেকে বরিশালের দূরত্ব কমে ১৮৫ কিলোমিটারে নেমে আসবে। একইসাথে ভ্রমণে সময় কমবে তিন ঘন্টা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পটির মোট ব্যয় ধরা হয়েছে নয় হাজার ৯৯০ কোটি টাকা। যারমধ্যে সাত হাজার ৯৯২ কোটি টাকা বিদেশ থেকে ঋণ নেওয়া হবে। আর সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে আসবে এক হাজার ৯৯৮ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে প্রথমবারের মতো বৃহত্তর বরিশালের সাথে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের রেল যোগাযোগ তৈরি হবে। ২০২১ সালের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্য নিয়ে আগামী বছরের জুলাই মাসে এ প্রকল্পের কাজ শুরু করতে চায় রেল মন্ত্রণালয়।