শেরপুরে পাহাড়ে আলোর মিছিল

শেরপুরে পাহাড়ে আলোর মিছিল

শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে বিশ্বশান্তি কামনা করে শেষ হয়েছে খ্রিস্টভক্তদের দুইদিনব্যাপী ফাতেমা রাণীর বার্ষিক ধর্মীয় তীর্থ উৎসব।

শুক্রবার বেলা ১২টায় সমাপনি খ্রিস্টযাগের মাধ্যমে সমাপ্তি ঘোষণা করেন তীর্থ উৎসবের প্রধান বক্তা ঢাকা মহা খ্রিস্টধর্ম প্রদেশর ভিকার জেনারেল ও বনানীর মেজর সেমিনারীর প্রাক্তন রেক্টর গাব্রিয়ল কোরাইয়া।এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে ময়মনসিংহ খ্রিস্টধর্ম প্রদেশের ভিকার জেনারেল রেভারেন্ড ফাদার শিমন হাচ্চা তীর্থ উৎসবের উদ্বোধনী খ্রিস্টযাগ উৎসর্গ করেন। 

উৎসব আয়োজকরা জানান, এখন থেকে ১০৫ বছর আগে ১৯১৭ সালে পর্তুগালের ফাতেমা নগরে মা মারিয়া ৩ জন ছেলে মেয়ের কাছে দেখা দিয়েছিলেন। মা মারিয়ার দেখা পেয়ে তারা বিশ্বাস স্থাপন করেছিল। পরে ওই বিশ্বাসীদের সংখ্যা বেড়ে বিশ্বের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে। সেই বিশ্বাস থেকেই বাংলাদেশেী খ্রিস্টভক্তরা শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী বারমারী সাধু লিও এর খ্রিস্টধর্মপল্লীতে পর্তুগালের ফাতেমা নগরের আদলে ও অনুকরণে ১৯৯৮ সালে ফাতেমা রাণীর তীর্থস্থান স্থাপন করেন। স্থাপনকাল থেকেই ভিন্নভিন্ন মুলসুরে প্রতি বছর বার্ষিক তীর্থ উৎসব পালিত হয়। করোনা ভাইরাসের মহামারীর ধকল কাটিয়ে এ বছর জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালিত হলো তীর্থ উৎসব। এবারে প্রায় ৩০ হাজার খ্রিস্টভক্ত নরনারী এই উৎসবে অংশগ্রহন করে বলে আয়োজকরা জানান। 

বৃহস্পতিবার বিকেলে খ্রিস্টযাগের মাধ্যমে তীর্থ উৎসব শুরু হয়। রাত ৮টায় মোমবাতি জ্বালিয়ে তীর্থযাত্রীরা আলোক শোভাযাত্রায় অংশ গ্রহন করেন। নিজেদের পাপ মোচন করতে মোমবাতি জ্বালিয়ে হাজার হাজার খ্রিস্টভক্তরা প্রায় দুই কিলোমিটার পাহাড়ি ক্রুশের পথ অতিক্রম করে ৪৮ ফুট উচু মা মারিয়ার মুর্তির সামনে বিশাল প্যান্ডেলে সমবেত হয়ে নৃত্যগীত, নিরাময়, গীতিআলেখ্য ও নিশিজাগরণ পালন করেন। রাতে নির্জন পাহাড়ে হাজার হাজার ভক্তের হাতে মোমের আলোর মিছিল পাহাড়ের বিশেষ সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। শুক্রবার সকালে অনুষ্ঠিত হয় জীবন্ত ক্রুশের পথ। 

 

খ্রিস্টভক্তদের তীর্থ উৎসবে এসে শেরপুরের জেলা প্রশাসক সাহেলা আক্তার, পুলিশ সুপার কামরুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফরোজা নাজনীন, নালিতাবাড়ী পৌরসভার মেয়র আবুবকর সিদ্দিক, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদুল হক, সাবেক ট্রাইবাল চেয়ারম্যান মি. লুইস নেংমিনজা  ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা খ্রিস্টভক্তদের সার্বিক খোঁজ খবর নেন।