সঙ্গী হোক ভেষজ পানীয়

মহামারির লাগামটা দিন দিন চলে যাচ্ছে নাগালের বাইরে। তবে এ সময় যারা মনের জোর ঠিক রেখে স্বাস্থ্যকর জীবন ধরে রেখেছেন, তারাই বড় যোদ্ধা। তাদের জন্য হাতিয়ার হিসেবে আছে গুণে ভরা কয়েকটি ভেষজ। যার সঙ্গে পছন্দের কিছু উপকরণ মিশিয়ে বানিয়ে ফেলতে পারেন পানীয়।
অশ্বগন্ধা: অশ্বগন্ধার গুণ এখন আর কেবল কবিরাজি নথিতে আটকে নেই। বড় বড় গবেষণা প্রতিষ্ঠান এখন অশ্বগন্ধা নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে। যুগ যুগ ধরে বিভিন্ন চিকিৎসাপদ্ধতিতে কাজে লাগছে এ গাছের মূল ও পাতা। গবেষণায় দেখা গেছে অশ্বগন্ধায় আছে অ্যামাইনো অ্যাসিড, পেপটাইডস, লিপিডস ও রোগ-প্রতিরোধ ব্যবস্থার জন্য গুরুত্বপূর্ণ নিউক্লিক অ্যাসিডের কিছু বেইজ। এ ছাড়া মানসিক চাপ কমিয়ে ঘুমের উপকারেও অশ্বগন্ধার ব্যবহার অনেক দিনের। সাধারণত এক কাপ দুধের সঙ্গে এক চা চামচ করে অশ্বগন্ধা গুঁড়ো খাওয়ার প্রচলনটাই বেশি। এ ছাড়া পানিতে মধু ও এ গুঁড়ো মিশিয়ে বানিয়ে ফেলতে পারেন একটা স্বাস্থ্যকর পানীয়। প্রতি ১৫ দিন পর পর তিন-চার মাসের বিরতি নিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় এ ভেষজের ক্ষেত্রে।
ব্রাহ্মী শাক: অশ্বগন্ধার মতো ব্রাহ্মীও মনকে রাখে প্রফুল্ল। এ ছাড়া শরীরের প্লাজমা কোষের মাধ্যমে ইমিউনোগ্লোবুলিন নামের যে অ্যান্টিবডিগুলো তৈরি হয়, সেটার উৎপাদনেও ভূমিকা রাখে ব্রাহ্মীর রস। এতে আছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। ক্যান্সার রোধ করার পাশাপাশি এটি আবার ডায়াবেটিসের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কমাতেও ভূমিকা রাখে। এ শাকের রসটাই মূলত উপকারগুলো করে। তাই এক মুঠো ব্রাহ্মীর রসের সঙ্গে পুদিনা কিংবা লেবু যোগ করে তৈরি করতে পারেন মজার পানীয়।
তোকমা দানার শরবত: ছোট ছোট কালো রঙের বীজটি কিন্তু পানীয় হিসেবে চমৎকার। বাজার থেকে মাত্রাতিরিক্ত চিনিযুক্ত বোতলজাত পানীয় না কিনে কিনতে পারেন তোকমা দানা। কারণ এতে একইসঙ্গে পাবেন ওমেগা-৩, ভিটামিন এ, বি, ই ও কে, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম ও আয়রন। এত এত ভিটামিন ও খনিজে ভরপুর দানাটি তো রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করবেই। সেই সঙ্গে এটি পান করতেও কিন্তু দারুণ।
মৌরি বীজ: মৌরি বীজে আছে ট্রান্স-অ্যানিথল। যা অনেক ধরনের ভাইরাসকে অকার্যকর করে দিতে পারে। তাই এ সময় নিয়ম করে পান করতে পারেন মৌরি বীজ ভিজিয়ে রাখা পানি। শরীরের ব্যথা কমাতেও ভূমিকা রাখে এটি। আবার সংক্রমণও দূর করে শ্বাসনালী পরিষ্কার রাখতেও এর কার্যকারিতা দেখা গেছে। ভিটামিন এ, সি ও বিটা ক্যারোটিনও আছে এতে।