সত্য কথা সহজভাবে বলার জন্য ধন্যবাদ মেয়র

সত্য কথা সহজভাবে বলার জন্য ধন্যবাদ মেয়র
বরিশাল সিটি করপোরেশনের ইতিহাসে প্রথম নাগরিকদের সামনে বাজেট ঘোষণা করেছেন মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে নগরবাসীর মুখোমুখি হয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। বাজেট ঘোষণা শেষে মাননীয় মেয়র খোলামেলা অনেক কথা বলেছেন। আগের পরিষদের নেওয়া বিভিন্ন প্রকল্পে অনিয়মের চিত্র তুলে ধরেছেন। একই সঙ্গে নগর ভবনকে একটি স্বচ্ছ প্রতিষ্ঠানে রূপ দেওয়ার স্বপ্নের কথা বলেছেন। কেমন করে তাঁর স্বপ্নের বাস্তবায়ন হবে তার একটি প্রামান্যচিত্রও তুলে ধরেছেন। মেয়র সেরনিয়াবত সাদিক আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘আমার সম্পর্কে, আমার পরিবার সম্পর্কে নানা নেতিবাচক কথা শুনেছি। প্রতিনিয়ত শুনে যাচ্ছি। আমি ওইসব কথায় কান দেই না। অনেকেই মনে করেছেন আমি কাজ না করে সব লুটপাট করে নেবো। আমার পরিবারের একটা ঐতিহ্য রয়েছে। আমাদের চাওয়া-পাওয়ার তেমন কিছু নেই। আমি কমিশন খাই না এবং খাবো না। এখন প্রমাণ দেওয়ার সময়। গত এক বছরে আমি প্রমাণ দিয়েছি, আমি কেবল নগরের উন্নয়নের জন্যই কাজ করছি। আমি প্রতিজ্ঞা করছি, আগামীতে আমি নাগরিকদের কাছে ভোট চাইবো না। তারা যদি মনে করে আমি নগরের উন্নয়নে কাজ করতে পেরেছি, তাহলে নাগরিকরাই আমাকে ভোট দেবে।’ তিনি আরো বলেছেন, ‘নগর ভবনের কাজে স্বচ্ছতা ফেরাতে কর্মকর্তা কর্মচারীদের ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। অনিয়ম-দুর্নীতি আগের যে কোন সময়ের চেয়ে কমেছে। নগর ভবনের স্থায়ী কর্মকর্তারা সব মেয়রদের আমলে বহাল তবিয়তে থেকে অনিয়ম দুর্নীতি করে গেছে। আর সেই দায় চাপানো হয় মেয়রদের ওপর। আমি ওই ধারা বন্ধ করতে উদ্যোগ নিয়েছি। বেশ কিছু কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সেজন্যও আমার বিরুদ্ধে নানা রকম প্রপাকা-া ছড়ানো হয়েছে। আপনারা বিশ^াস করুন, আমি কেবল আপনাদের জন্য কাজ করছি। নগরের হো-িং ট্যাক্স নিয়ে যে প্রপাকা-া ছড়ানো হচ্ছে সেটা সঠিক নয়। আমি হো-িং ট্যাক্স বাড়াইনি। ওই ট্যাক্স ধার্য করেছে আগের মেয়রের পরিষদ। এখনো ট্যাক্স ধার্য হয়নি। নাগরিকদের অসুবিধা হয় এমন কাজ আমি করবো না।’ আমরা জানি, সত্য কথা বলার সাহস থাকতে হয়। এরকম সত্য কথা বলার দৃঢ়তা দেখাতে ক’জন পারে। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ক্ষেত্রে পরিচ্ছন্ন হলেই কেবল এরকম কথা জনসম্মুখে বলা সম্ভব। আমাদের মেয়র সেই দৃঢ়তা দেখিয়েছেন। নগরবাসী তার বক্তব্যে আস্বস্ত হয়েছে। তিনি তার প্রতি বিরুপ ধারণা দূর করার জন্য নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। আমরা বিশ^াস করি, কাজের মাধ্যমে মাননীয় মেয়র সেই প্রমাণ দিতে শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে নগরের বর্জ্রব্যবস্থাপনায় আমূল পরিবর্তন এনেছেন। নগরের সব নালা পরিচ্ছন্ন হওয়ায় এখন পর্যন্ত জলাবদ্ধতার কবলে পরতে হয়নি। কাজের ধারা অব্যহত থাকলে আগামীতে বরিশালে জলাবদ্ধতা নামের ভুত আমদের তাড়িয়ে বেড়াবে না। তিনি আগে নগর ভবনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেন। শুররুতে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছেন। টেকসই উন্নয়ন করার লক্ষ্যে মহাসড়কের আদলে নগরের রাস্তার কাজ শুরু করেছেন। যা নগরবাসীর মধ্যে আস্থা সৃষ্টি করেছে। ব্যবস্থা নিতে সুারিশ করেছেন আগের নেওয়া প্রকল্পগুলোর দুর্নীতির বিরুদ্ধে। প্রকল্প যথাযথভাবে না হওয়া এবং দুর্নীতি হওয়ার অভিযোগে দুটি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট বুঝে নেওয়া হয়নি। বঙ্গবন্ধু অডিটোরিময়াম এবং সেবক কলোনীর দুর্নীতির বিষয় মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন। এই কাজগুলো নিঃসন্দেহে আমাদের আগামীর সুন্দর বরিশাল বিনির্মাণে সহযোগী হবে। মাননীয় মেয়র, আপনি নগরের অভিভাবক। নগরের বিভিন্ন প্রান্তে নানা রকম মন্তব্য হবে। ওইসব মন্তব্য আমলে নেওয়া জরুরী নয়। আপনি যেহেতু প্রমাণ দিতে শুরু করেছেন। সেই ধারা অব্যাহত থাকলে নগরবাসীর নেতিবাচক মন্তব্য ইতিবাচক হয়ে সামনে আসবে। আপনি যেমন নগরবাসীর জন্য আছেন এবং থাকবেন বলেছেন, তেমনি নগবাসীও আপনার সঙ্গে আছে এবং থাকবে এটা আামাদের বিশ^াস। আপনি ধাপে ধাপে সেই প্রমাণ রেখে যান।