সাবেক ফুটবলার মুক্তিযোদ্ধা টুলটুল আর নেই

স্বাধীনতা পরবর্তী ঢাকা ফুটবলের অন্যতম তারকা খেলোয়াড় বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত আলী টুলটুল আর নেই। মঙ্গলবার মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর।
হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর ৫টার দিকে ইন্তেকাল করেন টুলটুল (ইন্না লিল্লাহি--------রাজিউন)। মৃত্যুকালে স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে যান তিনি।
হাসপাতাল থেকে সকাল ৮টার দিকে তার মৃতদেহ নীলফামারী জেলা শহরের জুম্মাপাড়ার নিজ বাড়িতে আনা হয়। এসময় শোকের ছায়া নামে গোটা শহরসহ জেলার ক্রীড়াঅঙ্গনে।
এই বীর মুক্তিযোদ্ধা ১৯৭১ সালে দেশের বিভিন্ন স্থানে যুদ্ধের পর সবশেষ নীলফামারী সদর উপজেলাকে হানাদার মুক্ত করার ক্ষেত্রে অবদান রাখেন। স্বাধীনতা পরবর্তী তিনি একজন সফল ফুটবল খেলোয়াড় ছিলেন।
টুলটুল জাতীয় যুব ফুটবল দলের অপরিহার্য খেলোয়াড় ছিলেন ১৯৭২-৭৪ পর্যন্ত। এ ছাড়া পেশাদার খেলোয়াড়ি জীবনে ১৯৭৪ থেকে ১৯৭৬ পর্যন্ত খেলেন রহমতগঞ্জ, বিআরটিসি ক্লাবের হয়ে। এ সময় জাতীয় ফুটবল লীগে দ্রুততম সময়ে একমাত্র হ্যাটট্রিককারী তিনি, তার সেই কীর্তি আজও ভাঙতে পারেননি কেউ।
নীলফামারী জেলার ফুটবল জগতেও তার অবদান অপরিসীম। খেলেছেন জেলা দলের হয়ে। খেলোয়াড়ি জীবনের ইতি টেনে জেলা দলের কোচ দায়িত্ব পালন করেন দীর্ঘ বছর। তার হাত ধরে উঠে আসে অনেক প্রতিভাবান ফুটবলার। যারা দেশের জাতীয় ফুটবলের বয়সভিত্তিক বিভিন্ন দলে খেলছেন। কোচিং এর পাশাপাশি ছিলেন একজন সফল রেফারি। সবশেষ তিনি জেলা ক্রীড়া সংস্থার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও রেফারি অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
টুলটুলের একমাত্র ছেলে নাঈম শাহারিয়ার পিউ জানান, ডায়াবেটিক রোগে আক্রান্ত ছিলেন তার বাবা। গত রবিবার দুপুরে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হলে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার ভোর ৪ টা ৪৫ মিনিটের দিকে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
এদিনই বাদ আছর (মঙ্গলবার) নীলফামারী সরকারি কলেজ মাঠে তার নামাজে জানাজা ও রাষ্ট্রীয় মর্যাদা শেষে কেন্দ্রীয় কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হবে।
টুলটুলের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দেওয়ান কামাল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক মমতাজুল হক, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ফজলুল হক, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি জেলা প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আরিফ হোসেন মুন, নীলসাগর গ্রুপের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আহসান হাবিব লেলিন প্রমুখ।