মাঠে যখন মাশরাফি-সাকিবরা লড়াইয়ে নামেন, তখন মাঠে শুধু ১১ জন নয়, বরং পুরো মাঠ তাদের পাশে থাকেন বাংলাদেশের প্রায় ১৬ কোটি মানুষ। ক্রিকেট মাঠে তাদের দৌড়াতে দেখা না গেলেও হৃদয়ের দূরবীনে ধরা পড়ে তাদের জোড়া জোড়া ভালোবাসার দৃষ্টি। আর তাইতো অন্য যেকোনো বারের তুলনায় এবার টাইগারদের ওপর আশা-ভরসা অনেক বেশি দেশের ক্রিকেটভক্তদের।
রোববার (২ জুন) বিকেল সাড়ে ৩টায় ওভালে বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। দিন যতো গড়িয়েছে, আগের সবগুলোর তুলনায় ততোই বাংলাদেশ দলের ওপর বেড়েছে ভরসা। সমর্থকরা ইতিমধ্যে স্বপ্ন দেখছেন টাইগারদের সেমিফাইনাল খেলা নিয়ে। আর সেই মিশন টাইগাররা শুরু করবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে।
চলতি বিশ্বকাপে এরইমধ্যে এক ম্যাচ খেলে ফেলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। স্বাগতিক ইংলিশদের কাছে সেই ম্যাচে পাত্তাই পায়নি আফ্রিকার দলটি। এটা বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক। কারণ, বাংলাদেশ শুরু করবে শুন্য থেকে। আর প্রোটিয়ারা আছে মাইনাসে। তবে মাঠের লড়াইটাই আসল। আগের ম্যাচের ফলাফল দিয়ে কোনো ধারণা করা ঠিক হবে না।
বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি লড়াইয়ে এগিয়ে অবশ্য দক্ষিণ আফ্রিকাই। একুশবারের মুখোমুখি দেখায় বাংলাদেশ জয়ী হয়েছে ৩ বার, ১৭ বার জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকা, একটি ম্যাচ হয়েছে পরিত্যক্ত। বিশ্বকাপে লড়াইয়েও অবশ্য এগিয়ে প্রোটিয়ারা। ৪ বারের দেখায় বাংলাদেশ জিতেছে একবার আর দক্ষিণ আফ্রিকা জিতেছে ৩ বার। শুধু ২০০৭ বিশ্বকাপে ৮৭ রানে জিতেছিল টাইগাররা।
বিশ্বকাপের প্রথম ওভার থেকেই দক্ষিণ আফ্রিকার রয়েছে গৌরবময় ইতিহাস। কৌশলগত পদক্ষেপ আর খেলার দৃঢ়তা তাদের এমনিতেই এগিয়ে রেখেছে অনেকটা। এছাড়া ইনিংসে বোলারদের পরিকল্পনামাফিক প্রয়োগ তো আছেই। তবে ডেল স্টেইনের অনুপস্থিতি একটু হলেও যে ম্যাচে প্রভাব ফেলবে, তা আগেই স্বীকার করেছেন প্রোটিয়া দলপতি ডু-প্লেসিস। তারপরেও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নিজেদের অন্যান্য বোলারদের নিয়েই এগোনোর ইচ্ছে প্রোটিয়াদের।
এছাড়া ভারতের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে বাংলাদেশের ৯৫ রানে হেরে যাওয়াটাও ইতিবাচক দিক হিসেবেই দেখছে প্রোটিয়ারা। তবে ব্যাট হাতে মুশফিকুর রহিমের ফর্ম বাংলাদেশের জন্য খুব ইতিবাচক এবং সাকিব আল হাসান সহ অন্যান্যরা জ্বলে উঠলে বদলেও যেতে পারে ম্যাচের ধরন। আর পুরনো রূপে ফিরলে কাটার মাস্টার মোস্তাফিজ ব্যাটসম্যানদের জন্য অত্যন্ত অস্বস্তিকর হয়ে উঠতে পারেন। তাই মুখোমুখি লড়াইয়ে এবার নিজেদের খানিকটা এগিয়ে নেবার কথা ভাবতেই পারে টাইগাররা।
বাংলাদেশের স্কোয়াড:
মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, লিটন দাস, সৌম্য সরকার, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মোহাম্মদ মিঠুন, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, রুবেল হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান, মেহেদি হাসান মিরাজ, আবু জায়েদ রাহি, সাব্বির রহমান, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।
দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোয়াড:
ফাফ ডু প্লেসিস (অধিনায়ক), কুইন্টন ডি কক, ইমরান তাহির, ডেভিড মিলার, লুঙ্গি এনগিডি, ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস, তাবরেজ শামসি, রাসি ভ্যান ডার ডুসেন, হাশিম আমলা, জেপি ডুমিনি, এইডেন মার্করাম, ক্রিস মরিস, আন্দিলে ফেহলুকাইয়ো, কাগিসো রাবাদা, ডেল স্টেইন।