‘ইসলাম বিরোধী’ সংবাদ প্রচার নিষিদ্ধ করল তালেবান

তালেবানরা আফগান গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করার জন্য বিভিন্ন ধরণের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আরোপ করায় বিশ্বের বিভিন্ন মানবাধিকার সংঘঠন উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, তালেবানের গঠিত ‘তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়’ তালেবান সম্পর্কে কার্যত কোনো সমালোচনামূলক প্রতিবেদন নিষিদ্ধ করার জন্য একটি বিধি প্রণয়ন করেছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের হাতে আসা এই বিধিমালার একটি অনুলিপিতে দেখা গেছে যে, মিডিয়া গ্রুপগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তারা যেন ‘ইসলামের পরিপন্থী’, ‘জাতীয় ব্যক্তিত্বের অবমাননা’ বা ‘খবরের মূল বিষয়বস্তু বিকৃত করে’ এমন প্রতিবেদন না ছাপায় বা সম্প্রচার না করে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের অ্যাসোসিয়েট এশিয়ার পরিচালক প্যাট্রিসিয়া গসম্যান এই বিধিমালার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘ইসলামী মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল মিডিয়াকে কাজ করতে দিতে তালেবানের প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও, নতুন নিয়মগুলো দেশটির গণমাধ্যমের স্বাধীনতার শ্বাসরোধ করছে’।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, তালেবানের নতুন নিয়ম অনুযায়ী, সাংবাদিকদেরকে ‘নিশ্চিত করতে হবে যে তাদের রিপোর্টিং ভারসাম্যপূর্ণ’ এবং ‘তালেবান সরকারের কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেনি এমন বিষয়’ বা ‘জনসাধারণের মনোভাবের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে’ এমন বিষয়ে রিপোর্ট করার অনুমতি নেই।
গত মাসে ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ জার্নালিস্টস (আইএফজে) আফগানিস্তানে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল এবং দেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা দমন করার জন্য তালেবানদের নিন্দা করেছিল।
তালেবানরা ক্ষমতা দখল করার পর থেকে সাংবাদিকদের প্রতি বাড়তি হুমকির কারণে কমপক্ষে ১৫৩টি মিডিয়া আউটলেট বন্ধ হয়ে গেছে এবং নারী মিডিয়া কর্মীদের কাজ করতে পুরোপুরি বাধা দেওয়া হয়েছে।
উপরন্তু, ৭০০০ এরও বেশি সাংবাদিককে তালেবানরা আটক করেছে। বেশ কয়েকজন আফগান সাংবাদিক দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন অথবা আত্মগোপন করেছেন।
এদিকে, গসম্যান বলেন যে, নতুন নিয়মগুলো থেকেই প্রমাণ হয় যে, তালেবানরা জনসাধারণের কাছে কোনো ধরণের জবাবদিহিতার মুখোমুখি হতে চায় না।
গসম্যান আফগান সাংবাদিকদের অবস্থা রক্ষায় জরুরি পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘বিদেশী সরকারের উচিত এই বার্তা পাঠানো যে, মিডিয়ার সঙ্গে তালেবানদের আচরণ ভবিষ্যতের সম্পর্কের মূল উদ্বেগের বিষয় হয়ে থাকবে’।