‘বিশ্ব ব্যাংক ড. ইউনূসের কারণে পদ্মা সেতুর টাকা বন্ধ করে’

পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধ এবং বিশ্ব ব্যাংকের ভুয়া দুর্নীতির অভিযোগের পেছনে নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূসের যোগসাজশের অভিযোগ পুনরায় উত্থাপন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে, সবচেয়ে বেশি সুযোগ সুবিধা আমিই তাকে দিয়েছি। যেমন গ্রামীণ ফোন, এই ব্যবসাটা আমার আমলে আমি তাকে দিয়েছিলাম। তাকে অনেক সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়েছিল। তারই বেইমানির কারণে এই পদ্মা সেতুর টাকা বিশ্ব ব্যাংক বন্ধ করে দেয়।
প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) সকালে পল্লী জনপদ, রংপুর এবং বঙ্গবন্ধু দারিদ্র বিমোচন ও পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বাপার্ড), কোটালিপাড়া গোপালগঞ্জের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি’র ভাষণে এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে এ ওই অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
শেখ হাসিনা বলেন, গ্রামীণ ব্যাংক যখন একেবারে দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছিল তখন সেই গ্রামীণ ব্যাংক চালু রাখার জন্য ৯৮ সালে তার সরকার ৩ ধাপে ৪শ কোটি টাকা দিয়ে ব্যাংকটা চালু রাখার সুযোগ করে দেই। অথচ, সে সময় দেশে ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল এবং রিজার্ভের অবস্থাও ভাল ছিল না। গ্রামীণ ফোনের ব্যবসা দেই এ কারণে যে, এর লভ্যাংশ গ্রামীণ ব্যাংকে যাবে। যা কখনও হয়নি।
তিনি বলেন, ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের ওই এমডির পদটা ছাড়বেন না। যদিও আইনে আছে ৬০ বছর। তার তখন ৭০ বছর পার হয়ে যায়। ১০ বছর তিনি বেআইনিভাবে থেকেছেন। এরপরও তিনি এ পদে আরও থাকতে চেয়েছেন। তাকে আমাদের তরফ থেকে বলা হয়েছিল যে আপনি উপদেষ্টা থাকেন, আপনাকে সেই সম্মান দিয়ে রাখা হবে। সেটাও তিনি মানেন নাই। সরকারের বিরুদ্ধে মামলাও করেছিলেন। আর মামলায় হেরেও গিয়েছিলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, হিলারি ক্লিনটন (তখনকার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী) তার বন্ধু ছিল বলে তাকে দিয়ে আমেরিকান সরকারকে ধরে ওয়ার্ল্ড ব্যাংককে দিয়ে এই পদ্মার সেতুর টাকা বন্ধ করে দেয়। আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয় কানাডা কোর্টে।
ক্লিনটন ফাউন্ডেশনে লাখ লাখ ডলার ডোনেশন প্রদান করে তাদের তুষ্ট করার প্রসঙ্গ টেনে সরকারপ্রধান বলেন, দেশে ৫২-৫৩টি ব্যাংক। সবগুলো ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রয়েছেন। কজন এমডি লাখ লাখ ডলার অনুদান দিয়েছেন। ইউনূসের মতো ঘন ঘন বিদেশ সফর করেছেন।
সেই সময় ওয়ার্ল্ড ব্যাংককে দুর্নীতির প্রমাণ দিতে হবে বলে চ্যালেঞ্জ দেওয়ার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি এমনিতে মেনে নেব না। প্রমাণ দিতে হবে। প্রমাণ দিতে পারে নাই। তখন আমি বলেছিলাম টাকা লাগবে না। আমরা নিজের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণ করবো । প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার যখন পদ্মা সেতু নিজস্ব অর্থায়নে করার ঘোষণা দেয় তখন দেশবাসী সে সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়ে এগিয়ে এসেছিল। তিনি অনুষ্ঠানে দেশবাসীর প্রতি ও কৃতজ্ঞতা জানান।