‘হেফাজত নিয়ন্ত্রণ করছে উগ্রপন্থিরা’

‘হেফাজত নিয়ন্ত্রণ করছে উগ্রপন্থিরা’

শাহ আহমদ শফীর মৃত্যুর পর ‘আন্তর্জাতিক উগ্রপন্থিদের দেশীয় অনুসারীরা’ হেফাজত ইসলামের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্য জোটের চেয়ারম্যান মো. মিছবাহুর রহমান চৌধুরী। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান আওয়ামী লীগ সমর্থক হিসেবে পরিচিতি ইসলামী দলটির এই নেতা।

মিছবাহুর রহমান বলেন, হেফাজত ইসলামের আমির আহমদ শফীর মৃত্যুর পর সংগঠনটির নেতৃত্ব ‘আন্তর্জাতিক উগ্রপন্থিদের অনুসারী, ক্ষমতালোভী একদল আলেম নামধারী কুচক্রীদের’ হাতে চলে যায়।

তিনি বলেন, সে লোকগুলোর সঙ্গে জামায়াত-শিবির ও তাদের মিত্রদের গোপন শলাপরামর্শের মাধ্যমে কওমি মাদ্রাসাকে কুক্ষিগত করে তাদের সামনে হেফাজতের ব্যানারে জ্বালাও, পোড়াও, লুটপাট, হত্যা, নৈরাজ্য করে দেশের গৃহযুদ্ধ বাঁধিয়ে সরকার পতনের লক্ষ্যে দেশ ও বিদেশি ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতে চাচ্ছিল।

তিনি বলেন, ঘটনাবলী তা-ব থেকে মহাতা-বের দিকে যাওয়ার আগে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে। কিন্তু ষড়যন্ত্র এখনও শেষ হয়নি। ছদ্মবেশীরা আবার রং বদল করে সরকার ও দেশবাসীকে ধোঁকা দেওয়ার নতুন পরিকল্পনা করছে।

ইসলামী ঐক্য জোটের চেয়ারম্যান বলেন, আমরা লক্ষ্য করেছিলাম, আলেম নামধারী জামায়াত ও হেফাজতি একদল লোক হেলিকপ্টার নিয়ে সারা দেশে ওয়াজ ও তাফসির মাহফিলে নামে মিথ্যাচার করেছে। কোরআন শরীফের অপব্যাখ্যা দিয়ে যুব সমাজকে জেহাদের কথা বলে উগ্রতার দিকে ধাবিত করছে।

সংবাদ সম্মেলনে কওমি মাদ্রাসাগুলোকে পূর্বসূরিদের ঐতিহ্য অনুযায়ী পরিচালনার লক্ষ্যে ‘আল-হাইয়াতুল উলাইয়া লিল জামিয়াতিল ক্বাওমিয়্যাহ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ঘোষিত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করার দাবি জানান মিছবাহুর রহমান।

কয়েকটি কওমি মাদ্রাসায় সাম্প্রতিক সময়ে উগ্র সহিংসতা পরিচালনাকারী ছাত্রদের বহিষ্কারের পাশাপাশি সাম্প্রতিক তা-বে নেতৃত্বদানকারী হেফাজতে ইসলামের বিদেশি অর্থ সংগ্রহকারী ও যোগানদাতাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানান তিনি।

কিছু সরলমনা আলেম না বুঝে ষড়যন্ত্রকারীদের ফাঁদে পা দিয়েছিলেন দাবি করে মিছবাহুর বলেন, তারা যাতে হয়রানির শিকার না হয় সেদিকে নজর রাখতে হবে।

তিনি বলেন, আমি নিজের একটি মাহফিলের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে চলে আসার পর আমন্ত্রণ ছাড়া ওই মাহফিলে মামুনুল হক হাজির হয় এবং উগ্রবাদী বক্তব্য দেন। পরে ওই ঘটনায় মামলা হয় এবং আয়োজকও ওই মামলার আসামি হয়। এখানে তো আয়োজকের কোনো দোষ ছিল না। এভাবে আনেকে তাদের ফাঁদে পড়েছেন।

কওমি মাদ্রাসার ঐতিহ্য, শিক্ষা, আমল-আখলাক রক্ষা করে ভাবমূর্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে শায়খুল হাদিস আল্লামা রুহুল আমিন খানকে আহ্বায়ক করে ১১ সদস্যস্যের একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

জুন মাসে ঢাকায় একটি ‘ওলামা-মাশায়েখ মহাসম্মেলন’ করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে বলে তিনি জানান।

বারিধার মাদ্রসার সাবেক অধ্যক্ষ ওয়াহিদুজ্জামান, মুফতি মাওলানা শাব্বির আহমেদ কাসেমীসহ সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ সেখানে ছিলেন।