আদালতে আত্মসমর্পণের পর জামিন পেলেন গোলাম মাওলা রনি

আদালতে আত্মসমর্পণের পর জামিন পেলেন গোলাম মাওলা রনি

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের এক মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন একাদশ সংসদ নির্বাচনে পটুয়াখালী-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী গোলাম মাওলা রনি।


সোমবার ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আস শামস জগলুল হোসেন শুনানি শেষে রনির জামিন মঞ্জুর করেন। সাবেক সাংসদ রনির পক্ষে এদিন শুনানি করেন তার আইনজীবী মো. সাইফুল মালেক চৌধুরী।

সংশ্লিষ্ট আদালতের প্রসিকিউটর নজরুল ইসলাম শামীম শুনানিতে রনির জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক ৫ হাজার টাকা মুচলেকায় গোলাম মাওলা রনিকে মামলার পরবর্তী তারিখ পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেন। এ মামলার পরবর্তী ধার্য তারিখ ২৯ অগাস্ট।

আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপিতে নাম লেখানো সাবেক সাংসদ রনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পটুয়াখালীর গলাচিপা-দশমিনা আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে পরাজিত হন। ভোটের প্রচারের সময় গত ১৫ ডিসেম্বর গলাচিপা সদরে তার স্ত্রী কামরুন্নাহার রুনুর গাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

ওই হামলার জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করে রনি সেদিন সাংবাদিকদের বলেন, হামলাকারীরা তার স্ত্রী ও বোনের গয়নাও লুট করেছে।

তার দুদিন পর ইউটিউব ও ফেইসবুকে একটি অডিও টেপ ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়, ওই টেলি কথোপকথন গলাচিপা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. শাহজাহান খানের সঙ্গে বিএনপির প্রার্থী গোলাম মাওলা রনির। 

সেখানে একজনকে বলতে শোনা যায়, “গাড়িটা আগে থানায় নাও। থানায় নিয়া এই সুযোগে প্রার্থীসহ সবাইরে মামলায় দিয়ে দাও। আমি ওপরে প্রেসার ক্রিয়েট করতেছি। তোমরা সমস্ত নেতারা থানা ঘেরাও করো, সবাই, এভরিবডি, সমস্ত নেতাকর্মী।

“ওখানে বসে তোমার ভাবিকে বাদী কর। তার ওপর হামলা হয়েছে, তার গাড়ির ওপর হামলা হয়েছে বলে সবাইরে মামলা কর…. । মামলা না নেওয়া পর্যন্ত তোমরা থানা থেকে নামবা না সবাই। এটা কিন্তু আমাদের সুযোগ এবং সব জায়গায় টেলিফোন দিয়ে হাজার হাজার লোক থানা ঘেরাও কর।…. এটা আমাদের একটা সুযোগ আসছে, ঠিক আছে?”

ওই অডিও টেপের ভিত্তিতে ওই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এস এম শাহাজাদা সাজুর নির্বাচনী পরিচালনা কমিটির যুগ্ম-আহবায়ক গলাচিপা মহিলা কলেজের সহযোগী আধ্যাপক মেহেদী মাসুদ ২০ ডিসেম্বর গলাচিপা থানায় এ মামলা দায়ের করেন।

রনি ছাড়াও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি শাহজাহান খান, রনির ভাই সরোয়ার হোসেন, শ্যালক মকবুল হোসেন, চিকনিকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শিপলু খান ও শাহ আলম সানুকে সেখানে আসামি করা হয়।

মামলার এজাহারে বলা হয়, “গত ১৫ ডিসেম্বর দুপুরে গলাচিপা টিঅ্যান্ডটি সড়কে গোলাম মাওলা রনির স্ত্রীসহ তার পরিবারের সদস্যরা আত্মঘাতী ঘটনা ঘটিয়ে আইনশৃঙ্খলার অবনতি করে নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে। মোবাইলে তার কথোপকথন ফেইসবুকে ভাইরাল হলে জনমনে ভীতির সৃষ্টি হয়।”

পুলিশ ওই মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করার পর রনি সোমবার সাইবার ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন এবং জামিন পান।