ধান উৎপাদন বাড়ছে, কিন্তু কৃষক ধানের ন্যায্য দাম পাচ্ছে না। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্র অর্জনের সঙ্গে সঙ্গে কৃষক যাদে ধানের ন্যায্য মূল পায় সেব্যাপারেও উদ্যোগ নিতে হবে। তা না হলে কৃষক ধান চাষ করতে আগ্রহী হবে না।
বরিশালে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় এসব কথা বলেন বিষেশজ্ঞ বক্তারা।
গতকাল শনিবার সকাল ১০টায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয়ে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সঙ্গে ওই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
কৃষি তথ্য সার্ভিস আঞ্চলিক শাখার আয়োজনে প্রশিক্ষণ নকর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বরিশাল কার্যালয়ের উপ পরিচালক আবদুল অদুদ খান।
প্রধান অতিথি ছিলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক মো. সাইনুর আজম খান।
কর্মশালায় বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট বরিশালের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. আলমগীর হোসেন বলেন, এক সময় ছিল ধানই জীবন। এখন বলা হয় সমৃদ্ধির জন্য ধান। বর্তমানে ধানের নানা জান উদ্ভাবন করছে বাংলাদেশ। কিন্তু ধান উৎপাদন করে কৃষক ন্যায্য দাম পাচ্ছে না। কৃষক ন্যায্য দাম না পেলে ধান উৎপাদনের আগ্রহী বনে না।
তিনি বলেন, বর্তমানে অধিক উৎপাদনশীল ধানের জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। একই সঙ্গে জলবায়ুর প্রভাব মোকাবেলায় লবন সহিষ্ণু ধান উদ্ভাবন করেছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট। আগে কেবল আমান আর আউস ধানের ওপর নির্ভর করতে হতো। বর্তমানে বোরো বা বিরি কিংবা উফসী ধান চাষে সমৃদ্ধির পথে হাঁটছে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের অধিক ফলনশীল ধান ভারত, চীনসহ বিভিন্ন দেশে চাষ করা হচ্ছে। আমাদের কৃষষকদের এব্যাপরে সচেতন করা দরকার। আমাদের কৃষক যদি বিরি ধান চাষ করে তাহলে অধিক ফসল উৎপাদন করতে পারে। একই সঙ্গে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ধান চাষ করা দরকার। কোন মাটিতে কোন ধান ভালো হবে সেটাও কৃষকদের জানাতে হবে। আর এই কাজে সহযোগী ভখূমিকা রাখতে পারে গণমাধ্যম। আগামীতে প্রচার পেলে আমাদের কৃষকরা লাভববান হবে। আমাদের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার দ্বিগুন ফসল উৎপাদন করতে সক্ষমম হবো।
প্রধান অতিথি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক মো. সাইনুর আজম খান বলেন, এবারের ফনি আমদের অঞ্চলে কিন্তু আঘাত হনেনি। তারপরও ফনির প্রভাবে ব্রাপক ধানের ক্ষতি হয়ে বলা হচ্ছে বাস্তবেব এটা সঠিক নয়। বরিশাল অঞ্চল তথা বরিশালের ৬ জেলায় ৯ হাজার ৫৩ হেক্টর জমির ফসল আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে ধান, তিল, মুগ, গম, ভুট্টাসহ অন্যান্য রবিশস্য। কিন্তু কোন কোন প্রতিষ্ঠান প্রতিবেদন দিয়েছে ১০ হাজার হেক্টর জমির ধান নষ্ট হয়েছ। বাস্তবে ৬ জেলায় মাত্র ১৩ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। যার মধ্যে বরিশাল জেলায় ক্ষতি হয়েছে ১০ কোটি টাকা। মূলত চেয়ারম্যান মেম্বর ও রাজনৈতিক কারণে অনেক সময় ক্ষতির পরিমাণ বাড়িয়ে দেখানো হয়।
কর্মশালায় ফল চাষের ওপর আলোচনা করেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট বরিশালের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মুহাম্মদ সামসুল আলম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ পরিচালক মো. তৌফিকুল আলম। আরো বক্তব্য রাখেন, আঞ্চলিক কৃষি তথ্য কর্মকর্তা মো. শাহদাত হোসেন, কৃষি তথ্য সার্ভিসের কর্মকর্তা নাহিদ-বিন-রফিক।