গাছ লাগাতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে

গাছ লাগাতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে
গাছ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। অক্সিজেন সরবরাহ করে গাছ আমাদের বন্ধু হয়ে পাশে থাকে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা করে গাছ। গাছ বুক পেতে সব যন্ত্রণা সহ্য করে। গেল সিডরের সময় সুন্দরবনের গাছ আমাদের ব্যাপক ক্ষতি থেকে সুরক্ষা করেছে। গাছ আমাদের সবুজের হাতছানি। জলবায়ুর প্রভাব মোকাবেলায়ও প্রথম সারিতে আছে গাছ। আমাদের নিত্য অসুস্থ্য হওয়া এবং রোগ-শোক থেকে মুক্তি দিতে গাছের জুড়ি নাই। ফলদ এবং ওষধি গাছ আমাদের জীবন রক্ষায় মুক্তি দূত হয়ে কাজ করে। এক কথায় গাছের গুণাগুণ বর্ণনা করা কঠিন। যে গাছ আমাদের এতো উপকার করছে, আমরা সেই গাছের মর্যাদা রক্ষা করতে পারছি না। নির্বিচারে গাছ কাটা আমদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। গাছ কাটতে আমরা যতো উৎসাহী, গাছ রোপনে ততটাই নিরুৎসাহী। বন উজার করা, কাঠ পাচার করাসহ নেতিবাচক কাজের সঙ্গেই বেশি জড়িত আমরা। এই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তাই পরিবেশ এবং প্রকৃতি রক্ষায় বেশি বেশি গাছ লাগাতে হবে। একটি গাছ কাটার আগে একশো গাছ কিভাবে রোপন করা যায় সেই চিন্তা করতে হবে। স্কুল, কলেজ বিশ^বিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের গাছ লাগাতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের বনজ সম্পদ রক্ষায় বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন। আমাদের পরিবেশ রক্ষায় বেশি বেশি গাছ লাগানোর নির্দেশ দিয়েছেন। ওই নির্দেশনার অংশ হিসেবে এখন সারা দেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে পক্ষকালব্যাপী বৃক্ষ মেলা। বিভিন্ন এলকায় বৃক্ষরোপন অভিযানও চলছে। প্রতি বছর গাছ লাগানোও হচ্ছে। বৃক্ষ রোপন করেই অনেকে দায়িত্ব শেষ করেন। কিন্তু বৃক্ষ রক্ষায় উদ্যোগ নেই। কেবল গাছ লাগালেই হবে না। গাছ রক্ষায়ও উদ্যোগ নিতে হবে। তা না হলে সবুজ প্রকৃতি রক্ষা করা সম্ভব হবে না। আমরা চাই, সবুজ বৃক্ষ দিয়ে যেন বাংলাদেশের চারদিক ঘিরে ফেলা যায়। কাঠ সংহই যেন একমাত্র লক্ষ্য না হয়। একটি ফলদ এবং একটি ওষধি গাছ লাগাতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। জনবসতিপূর্ণ নগরগুলোতে গাছ লাগানোর জায়গা কমে যাচ্ছে। তাই আধুনিক শহরগুলোতে থাকা সরকারি জায়গা যাতে দখল হয়ে না যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। ওইসব জায়গায় গাছ লাগানোর উদ্যোগ নিতে হবে। দালানে ঢাকা নগরগুযলোর প্রতিটি বাড়ির ছাদে গাছ লাগালেও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা পেতে পারে। এজন্য ছাদ বাগান করতে উদ্যোগ নিতে হবে। এই উদ্যোগে স্বেচ্ছায় সরকারি কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শক নিয়োগ দিতে হবে। তাহলে বহুতল বভনও সবুজে ঢেকে দেওয়া সম্ভব হবে। আসুন, আমরা একটি করে ফলদ ও ওষধি গাছ লাগাই, পরিবেশ বাঁচাই। বাড়ির আঙিনা কিংবা বাড়ি ছাদ যেখানেই হোক ফুল, ফলের গাছ রোপন করি। প্রতিযোগিতায় পুরষ্কার হিসেবে বইয়ের পাশাপাশি গাছের চারা দেওয়ার প্রচলন করতে হবে। এই কাজে কেবল প্রধানমন্ত্রী কিংবা বনবিভাগ নয়, সব নাগরিককে সামানভাবে দায়িত্ব নিতে হবে। গাছ কাটার আগে গাছ রোপনের কথা মাথায় রাখতে হবে। তাহলে জলবায়ু প্রভাব মোকাবেলায় আমরা একধাপ এগিয়ে থাকবো। সোনার বাংলা সবুজে ঘেরা বাংলা রূপ নেবে।