নাব্যতা সংকটে নৌযান চলাচল ব্যহত, স্থায়ী সমাধানে উদ্যোগ নিন

নাব্যতা সংকটে নৌযান চলাচল ব্যহত, স্থায়ী সমাধানে উদ্যোগ নিন

নদী হচ্ছে দেশের প্রাণ। নদী সারাদেশকে জালের মতো আকড়ে ধরে আছে। এই নদী আমাদের কম খরচে পরিবহন ও যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম। দখল, দুষণ আর সঠিকভাবে খনন কাজ না হওয়ায় সেই নদী আজ মরতে বসেছে। বর্ষা-শীত সব মৌসুমে নদীগুলোতে নাব্যতা সংকট তীব্র আকার ধারণ করছে। নদীগুলোর নাব্যতা ফেরাতে না পারলে সারা দেশের সঙ্গে রাজধানী ঢাকা এবং বন্দর নগর চট্টগ্রামের সঙ্গে নৌযোগাযোগ হুমকীর মুখে পড়বে। এখনই নাব্যতা সংকট দূর করতে উদ্যোগ নিন। নাব্যতা সংকট সমাধানে টেকসই খনন কাজ করতে হবে। নিতে হেব স্থায়ী সমাধানে উদ্যোগ।

নাব্যতা সংকট বাংলাদেশের একটা বড় সমস্যা। প্রতি বছর বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে এই সমস্যা তীব্র আকার ধারণ করে। রাজধানী ঢাকার সঙ্গে নদীপথের যোগাযোগ অনেক সময় ব্যহত হয়ে পড়ে। শীত আসার অনেক আগ থেকেই নদীগুলোতে নাব্যতা সংকট তীব্র আকারে দেখা দিয়েছে।

খননের নামে নদীর পলি নদীতে ফেলা, যথাযথভাবে খনন না করা, জোয়ারের সময় খনন কাজ চালানো এমন অনেক অভিযোগ আছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) ড্রেজিং বিভাগের বিরুদ্ধে। আমরা চাই প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ হলেও বছর ঘুরতেই কেন নাব্যতা সংকট তীব্র হবে? তাহলে নাব্যতা ফেরাতে যে অর্থ ব্যয় হচ্ছে সেটা কোথায় যাচ্ছে? খনন নিয়ে মানুষের মনে যে প্রশ্ন উঠছে সেই প্রশ্নের উত্তর তো দিতেই হবে। নদীর নাব্যতা ফেরাতে স্থায়ী সমাধান চায় দেশের মানুষ। কারো দোষ নয়, কার্যকর উদ্যোগ নিয়ে নদীর নাব্যতা ফেরাতেই হবে।

বরিশাল অঞ্চলে ২০-৩০টি পয়েন্টে নদীতে নাব্যতা সংকট রয়েছে। এমন বাস্তবতায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) ড্রেজিং বিভাগ বরিশাল অঞ্চলের নৌপথ সচল রাখতে প্রতি বছরই খনন কাজ করে। কিন্তু সঠিকভাবে খনন না হওয়ায় স্থায়ী সমাধান হচ্ছে না।সারা দেশের খনন কাজে হাজার হাজার কোটি টাকা খরচও হয় ও হবে। খননের নামে কেবল অর্থ খরচই যেন না হয়।

প্রতি বছর নদীর নাব্যতা ফেরাতে হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ হয় খননে। তারপরও নদীর নাব্যতা ঠিক রাখা যাচ্ছে না। নৌযান মালিক এবং চালকদের অভিযোগ সঠিকভাবে খনন হয় না বলেই নৌপথে নাব্যতা সংকট কমছে না। আর বিআইডব্লিউটিএ-এর খনন বিভাগের দাবি প্রতি বছর পাহাড়ি ঢল এবং বন্যার পানির ঢলে প্রচুর পলি থাকে। সেই পলি আমাদের নদীগুলোতে জমে নাব্যতা সংকট সৃষ্টি করে। স্থায়ীভাবে নদীর নাব্যতা ফেরাতে ব্যর্থ হলে আমাদের মংলা এবং সম্ভাবনাময় পায়রা সমুদ্রবন্দর হুমকীর মুখে পড়বে। এই ব্যর্থতার কথা আর আমরা শুনতে চাই না।

আমরা চাই, নদী খননের নামে যেসব অভিযোগ আছে সেই অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা হোক। একই সঙ্গে নদীপথ সচল রাখতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হোক। খনন নিয়ে কোন দুর্নীতি হয়ে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। যে কোন কিছুর মূল্যে আমাদের নদী সম্পদ রক্ষায় স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।